শ্রমিকের মৃত্যুর জেরে শুক্রবারও রঘুনাথপুরে ডিভিসি-র বিদ্যুৎকেন্দ্রের গেট আটকে বিক্ষোভ চলল। এর জেরে প্রকল্প এলাকায় ঢুকতে পারল না শ্রমিকরা। জমিহারাদের একটি সংগঠনের এই আন্দোলনে দিনভর নির্মাণ কাজ বন্ধ থাকল। দুপুরে মৃত শ্রমিকের পরিবার, জমিহারা কমিটির প্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠকে বসে পুলিশ ও ডিভিসি-র মানব সম্পদ বিভাগের আধিকারিকরা। বৈঠকে মৃত শ্রমিকের পরিবারকে আর্থিক ক্ষতিপূরণ-সহ পরিবারের একজনকে ঠিকা শ্রমিকের কাজ দেওয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বুধবার রঘুনাথপুর থানার পাবড়া গ্রামে প্রকল্পের ছাইপুকুর (অ্যাশপন্ড) নির্মাণের সময় অসুস্থ হয়ে পড়েন স্থানীয় বড়গড়িয়া গ্রামের শ্রমিক শঙ্কর বাউরি। সেই রাতে বাঁকুড়ার একটি নার্সিংহোমে তাঁর মৃত্যু হয়। পরের দিন ক্ষতিপূরণের দাবিতে প্রকল্পের মূল ফটক আটকে বিক্ষোভ দেখায় রঘুনাথপুর ২ ব্লক তৃণমূলের একাংশ এবং স্থানীয় আরটিপিএস ল্যান্ড লুজার্স অ্যাসোসিয়েশন। বৃহস্পতিবার রাতে পুলিশের হস্তক্ষেপে বিক্ষোভ ওঠে।
শুক্রবার ফের সকাল থেকেই বিক্ষোভ শুরু হয় প্রকল্পের মূল গেট আটকে। নেতৃত্বে ছিল ওই জমিহারা কমিটির সদস্যেরা। নির্মাণ কাজের শ্রমিকরা ঢুকতে পারেননি। তবে জমিহারা কমিটির নেতা চিন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, “এ দিন শ্রমিকরা নিজেরাই কাজে আসেননি। আমরা প্রকল্প এলাকায় কাউকেই ঢুকতে বাধা দিইনি।”
কমিটির নেতা দেবজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিযোগ, “ডিভিসি কর্তৃপক্ষ শঙ্করবাবুর মৃত্যুর কারণ হিসাবে কর্মরত অবস্থায় অসুস্থ হয়ে মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করে ক্ষতিপূরণ দিতে অস্বীকার করছে। কিন্তু ছাইপুকুরে কাজ করার সময়ে উপর থেকে পড়ে চোট পেয়েই জখম হয়ে তিনি মারা যান। সেই কারণেই তাঁর পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবি তোলা হয়েছে।” ডিভিসি-র এই প্রকল্পের মুখ্য বাস্তুকার হিরন্ময় চট্টোপাধ্যায় বলেন, “বিক্ষোভের জেরে কাজ ব্যাহত হওয়ায় পুলিশ-প্রশাসনকে জানানো হয়েছিল। পরে পুলিশের উপস্থিতিতে আমাদের মানব সম্পদ দফতরের আধিকারিকরা আলোচনায় বসেন।” পুলিশ ও ডিভিসি সূত্রে খবর, বৈঠকে মৃতের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ ও ইচ্ছুক থাকলে পরিবারের একজনকে ঠিকা সংস্থায় কাজ দেওয়ার সিদ্ধান্ত জানানো হয়েছে।