Advertisement
E-Paper

স্কুল পালিয়ে গল্প ফাঁদল খুদে

অপহরণকারীদের হাত ফস্কে পালিয়ে এসেছে সে। সাত বছরের এক খুদে ছেলের মুখে এ কথা শুনে ঘাবড়ে গিয়েছিলেন মিষ্টি ব্যবসায়ী। বলে কি ছেলেটা! তিনি ফোন করেন ছেলেকে। সেই ছেলে মাসখানেক আগে ভিলেজ পুলিশের কাজ পেয়েছে। আসেন কয়েকজন পুলিশ কর্মীও।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৯ মার্চ ২০১৪ ০১:৫১

অপহরণকারীদের হাত ফস্কে পালিয়ে এসেছে সে। সাত বছরের এক খুদে ছেলের মুখে এ কথা শুনে ঘাবড়ে গিয়েছিলেন মিষ্টি ব্যবসায়ী। বলে কি ছেলেটা!

তিনি ফোন করেন ছেলেকে। সেই ছেলে মাসখানেক আগে ভিলেজ পুলিশের কাজ পেয়েছে। আসেন কয়েকজন পুলিশ কর্মীও। কিন্তু পুলিশের প্রশ্নে খসে পড়ে শিশুর বানানো মিথ্যা অপহরণের গল্পের খোলস। জানা যায়, বাড়ির জন্য মন খারাপ করায় কেন্দা থানা এলাকার একটি আবাসিক স্কুলের ওই ছাত্র সবার নজর এড়িয়ে পালিয়ে এসেছিল। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সেই ছেলেকে পুরুলিয়ার বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার সময় তার বাবা বলেন, “ভাগ্যিস কোনও দুষ্টু লোকের হাতে ছেলে পড়েনি। তা হলে যে কী হত!”

ওই শিশুর বাড়ি পুরুলিয়া শহরে। জানুয়ারি মাসে তাকে ওই আবাসিক স্কুলে প্রথম শ্রেণিতে ভর্তি করে দিয়ে যান বাড়ির লোকজন। স্কুলের কর্মী অর্ঘ্যকমল মাহাতো বলেন, “বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১০টা নাগাদ অন্য দিনের মতোই সে স্কুল লাগোয়া পুকুরে স্নান করতে গিয়েছিল। তার সঙ্গে আরও অনেক ছাত্র ছিল। বাকিরা ফিরে এলেও ওই ছাত্র ফিরে না আসায় আমরা খোঁজ শুরু করি।” পুলিশ জানিয়েছে, শিশুটি তাদের জানিয়েছে, স্কুল থেকে বেরিয়ে সে পুরুলিয়া শহরের দিকে হাঁটা লাগায়।

কিছুটা হাঁটার পরে সে পানিপাথর গ্রামে মানবাজার-পুরুলিয়া রাস্তার পাশে একটি মিষ্টির দোকানে জিরোনোর জন্য ঢোকে। তাকে একা দেখে সন্দেহ হয় দোকানির। তাঁর কাছেই ওই শিশু অপহরণের গল্প শোনায়। ওই দোকানির ছেলে গণেশ মাহাতো এলাকার ভিলেজ পুলিশ। তাঁর কথায়, “আমি থানায় ছিলাম। বাবার ফোন পেয়ে দোকানে আসি। শিশুটি আমাকে জানায়, পুরুলিয়া শহরে ওর বাড়ি। পাড়ায় সে স্নান করতে বেরিয়েছিল। দু’টো লোক ওকে জোর করে একটি গাড়িতে তুলে পালাচ্ছিল। পানিপাথর গ্রামের কাছে ওদের গাড়ি খারাপ হয়। তখন সে ওদের নজর এড়িয়ে ওই গাড়ি থেকে পালিয়ে আসে।”

কেন্দা থানার ওসি সৌরাংশু রায় বলেন, “ছেলেটির কথা শুনে আমাদের খটকা লাগে। একটু চেপে ধরতে ও সত্যিটা আর চেপে রাখতে পারেনি। স্কুল আর হস্টেলে মন না টেকায় সে বাড়ি যাওয়ার জন্য সেখান থেকে পালিয়ে এসেছিল। ওর স্কুল ও বাড়িতে খবর পাঠানো হয়।” তাঁর অনুমান, টিভিতে দেখা সিনেমার অনুকরণ করতে গিয়েছিল সে। সন্ধ্যায় বাড়িল লোকেরা থানায় গিয়ে ছেলেকে বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে যান।

যাওয়ার আগে ছেলের মাথায় হাত বোলাতে বোলাতে বাবা বলেন, “ভালভাবে পড়াশোনা করানোর জন্য ওকে আবাসিক স্কুলে ভর্তি করেছিলাম। প্রতি রবিবার ছেলেকে দেখে যেতাম। কিন্তু বাড়ি যাওয়ার জন্য ও এ রকম গল্প ফাঁদবে ভাবতে পারিনি। ভাগ্যিস সে বদলোকের খপ্পরে পড়েনি!” স্কুলের প্রধানশিক্ষক ঘনশ্যাম মাহাতো বলেন, “কিছু কিছু ছেলে প্রথম প্রথম বাড়ির টান ভুলতে পারে না। তা বলে এমন কাণ্ড করে গল্প ফাঁদবে ভাবিনি।”

kenda truant
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy