Advertisement
E-Paper

সেতুতে ধস, বিপাকে ৩৫ গ্রাম

যোগাযোগের একমাত্র উপায় যে রাস্তা, সেটি দীর্ঘ কয়েক বছর ধরেই বেহাল। এ বার সেই রাস্তার উপরে থাকা একটি সেতুর একাংশ ভেঙে পড়ায় বেকায়দায় পড়েছেন এলাকার কয়েক হাজার মানুষ। সম্প্রতি মুরারই থানার কোড়াপাড়ার কাছে কাঁদরের উপরে থাকা ওই সেতু ভেঙে পড়ায় এলাকার ৩৫টি গ্রামের মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থা দুর্বল হয়ে পড়েছে।

নিজস্ব সংবাদাতা

শেষ আপডেট: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০০:৩১

যোগাযোগের একমাত্র উপায় যে রাস্তা, সেটি দীর্ঘ কয়েক বছর ধরেই বেহাল। এ বার সেই রাস্তার উপরে থাকা একটি সেতুর একাংশ ভেঙে পড়ায় বেকায়দায় পড়েছেন এলাকার কয়েক হাজার মানুষ। সম্প্রতি মুরারই থানার কোড়াপাড়ার কাছে কাঁদরের উপরে থাকা ওই সেতু ভেঙে পড়ায় এলাকার ৩৫টি গ্রামের মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থা দুর্বল হয়ে পড়েছে। এই অবস্থায় অনেকে প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে ওই ভাঙা সেতুর উপর দিয়েই যাতায়াত করছেন। অনেকে আবার বাধ্য হচ্ছেন ঘুরপথ নিতে। প্রশাসন অবশ্য এখনও কোনও আশার আলো দেখাতে পারেনি। কর্তারা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, কাঁদরের জল না নামলে সংস্কারের কাজ শুরু করা যাবে না।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শ্রীপুর থেকে কুশমোড় যাওয়ার ওই রাস্তা দীর্ঘ পাঁচ বছর ধরে ঠিক ভাবে সংস্কার হয়নি। রাস্তার পিচ-পাথর উঠে গিয়ে মাটি বেরিয়ে পড়েছে। এমন বেহাল রাস্তা দিয়েই কোনও রকমে প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে বিভিন্ন রুটের ছ’টি বাস যাতায়াত করে। দিন পাঁচেক আগে প্রবন বৃষ্টিতে ৩৬ ফুট দীর্ঘ ও ৯ ফুট চওড়া ওই সেতুর দুই দিক ভেঙে পড়ার জন্য সমস্ত রুটের বাসই এখন বন্ধ। ভারী যানবাহন চলাচলেও নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে।কুশমোড়গামী যাবতীয় বাস কেবল কোগ্রাম পর্যন্ত যাচ্ছে। দুর্ভোগে পড়েছেন এলাকার ছ’টি পঞ্চায়েতের কম করে ৩৫টি গ্রামের বাসিন্দা। এ দিন এলাকায় গিয়ে দেখা গেল এলাকার মানুষ ওই বেহাল রাস্তায় এখনও ঝুঁকি নিয়ে ছোট গাড়িতে যাতায়াত করছেন। বাধ্য হয়ে বিপজ্জনক অবস্থায় দাঁড়িয়ে থাকা সেতু দিয়েই এলাকার কুড়িটির বেশি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চারটি হাইস্কুলের শিক্ষক, দু’টি পঞ্চায়েত অফিসের কর্মীদের যাতায়াত করতে হচ্ছে। একই ভাবে ভাঙা সেতু দিয়েই এলাকার স্কুল ও কলেজ পড়ুয়া, নিত্যযাত্রীদের নলহাটি, রামপুরহাটে যাতায়াত করতে হচ্ছে। রেশন ডিলারদের পণ্য ঘুরপথে নলহাটি থেকে চাতরা হয়ে কুশমোড়ে নিয়ে আসতে হচ্ছে।

স্থানীয় করমজি গ্রামের সামসুদ্দিন শেখ, ধানগড়া গ্রামের আবদুল মান্নান, কোড়াপাড়া গ্রামের বুধু কোড়া, কুশমোড় গ্রামের কৃত্তিবাস মণ্ডল, কাজী সিকান্দারদের অভিযোগ, শ্রীপুর থেকে কুশমোড় পর্যন্ত ৮ কিলোমিটার রাস্তার মধ্যে কোগ্রাম থেকে কুশমোড় ৫ কিলোমিটার রাস্তা গত পাঁচ বছর ধরে খারাপ হয়ে পড়ে রয়েছে। রাস্তার বেহাল দশায় বাস চলাচল মাঝেমধ্যেই বাসমালিকেরা বন্ধ রাখতে বাধ্য হন। অথচ এলাকার এটিই একমাত্র রাস্তা। কিন্তু দীর্ঘ দিন ধরে এই রাস্তা সংস্কার করা হয়নি।” ওই রাস্তার উপরই চৈতি ভাদিষ্টা হাইস্কুল, রামপুরহাট হাইস্কুল, কোগ্রাম হাইস্কুল, বিশোর সদাশিবপুর হাইস্কুল, ধানগড়া করমজি সিনিয়র মাদ্রাসা স্কুল আছে। একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক, কম করে ২০টির বেশি প্রাথমিক স্কুল আছে। কুশমোড় ২ পঞ্চায়েতের কংগ্রেস প্রধান ওসমান গণি বলেন, “রাস্তা সংস্কারের দাবি দীর্ঘ দিনের। সেতুটি সংস্কারের ব্যাপারেও বহুবার জানানো হয়েছে। কিন্তু তা হয়নি। জীর্ণ ওই সেতু যে কোনও দিন সম্পূর্ণ ভেঙে পড়তে পারে।”

এ দিকে, পূর্ত দফতর সূত্রের খবর, শ্রীপুর-কুশমোড় রাস্তা সংস্কারের জন্য ২ কোটি ৯৪ লক্ষ টাকার কাজের একটি প্রস্তাব দীর্ঘদিন আগে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো আছে। কিন্তু তার অনুমোদন মিলছে না। রামপুরহাট মহকুমা বাস্তুকার সুজয় রায় প্রতিহার বলেন, “রাস্তাটি আগেও সংস্কার করা হয়েছে। নতুন করে সংস্কারের জন্য কিছু দিনের মধ্যেই ৩৫ লক্ষ টাকার কাজ শুরু হবে।” সুজয়বাবু বলেন, “সেতু সংস্কারের কাজ বন্ধ হওয়ার পরে সেতুটির আরও কিছু অংশ ভেঙে পড়েছে। সেতু ঠিক করতে গেলে কাঁদরের উপর হিউম পাইপ দিয়ে বিকল্প রাস্তা তৈরি করতে হবে। তার জন্য ৬ লক্ষ টাকা কাজের ওয়ার্ক অর্ডারও করা হয়েছে।” তিনি আরও বলেন, “৬৬ লক্ষ টাকার প্রকল্প তৈরি করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন মিললেই কাজ শুরু হবে।”

murarai bridge collapse communication weakened
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy