Advertisement
E-Paper

হাল ফেরাতে ১১ রাস্তা অধিগ্রহণ পূর্ত দফতরের

জেলা পরিষদ ও পুরসভা দখলে রেখেও কয়েকটি রাস্তা সংস্কার করতে পারছিল না। এ বার পুরুলিয়া জেলার সেই ১১টি রাস্তা অধিগ্রহণ করল পূর্ত দফতর। রাস্তাগুলি হল পুরুলিয়া শহরের পাঁচটি এবং জেলার বিভিন্ন প্রান্তের ছ’টি। বুধবার পুরুলিয়ায় দফতরের কাজকর্ম সংক্রান্ত একটি বৈঠকে এসে এ কথা জানান রাজ্যের পূর্ত মন্ত্রী শঙ্কর চক্রবর্তী।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৯ ডিসেম্বর ২০১৪ ০০:৪৮
কাশীপুর-ঘাটরাঙামাটির রাস্তার হাল। এমনই আরও কয়েকটি রাস্তা অধিগ্রহণের নতুন প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে পূর্ত দফতরকে।—নিজস্ব চিত্র।

কাশীপুর-ঘাটরাঙামাটির রাস্তার হাল। এমনই আরও কয়েকটি রাস্তা অধিগ্রহণের নতুন প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে পূর্ত দফতরকে।—নিজস্ব চিত্র।

জেলা পরিষদ ও পুরসভা দখলে রেখেও কয়েকটি রাস্তা সংস্কার করতে পারছিল না। এ বার পুরুলিয়া জেলার সেই ১১টি রাস্তা অধিগ্রহণ করল পূর্ত দফতর। রাস্তাগুলি হল পুরুলিয়া শহরের পাঁচটি এবং জেলার বিভিন্ন প্রান্তের ছ’টি। বুধবার পুরুলিয়ায় দফতরের কাজকর্ম সংক্রান্ত একটি বৈঠকে এসে এ কথা জানান রাজ্যের পূর্ত মন্ত্রী শঙ্কর চক্রবর্তী। তাঁর আশ্বাস, “অধিগ্রহণ সম্প্রতি হয়েছে। রাস্তাগুলি সংস্কারের কাজও ধাপে ধাপে শুরু হবে।”

জেলা পরিষদ সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলা পরিষদের হাতে থাকা ঝালদা-গোলা রোড, রঘুনাথপুর-চেলিয়ামা রাস্তা, লধুড়কা-গামারকুড়ি রাস্তা, মানবাজার-ইন্দকুড়ি রাস্তা, জয়পুর-কড়কড়া রাস্তা ও ছড়রা-ভাঙড়া রাস্তা। এই ছয়টি রাস্তা দীর্ঘদিন ধরেই বেহাল। বারবার এই রাস্তাগুলি সংস্কারের দাবি তুলেছেন এলাকার মানুষজন। সংস্কারের দাবিতে অবরোধও হয়েছে। বিভিন্ন ব্লক সদর ও গ্রাম ছুঁয়ে থাকা এই রাস্তাগুলিতে যান চলাচল আগের থেকে ঢের বেড়েছে। চাপ বাড়ায় রাস্তাও বেশিদিন ঠিক থাকছে না।

ওই রাস্তাগুলির সঙ্গে অধিগ্রহণ করা হয়েছে পুরুলিয়া শহরের কয়েকটি রাস্তা: মেন রোড, হাটের মোড় থেকে রেলস্টেশন, বিটি সরকার রোড, কেতিকা-দুলমি রোড ও ভিক্টোরিয়া স্কুল মোড় থেকে ভাটবাঁধ যাওয়ার রাস্তা। এই পাঁচটি রাস্তাই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শহরবাসীর অভিজ্ঞতা, মেন রোড ও বিটি সরকার রোড ছাড়া অন্য রাস্তাগুলির হাল খারাপ। এই রাস্তাগুলি সংস্কারের দাবিতে বিভিন্ন সময়ে পুরসভায় স্মারকলিপি দেওয়া থেকে অবস্থান এমনকী পথ অবরোধ কর্মসূচি পর্যন্ত সংগঠিত করেছে বিরোধী দলগুলি। পুরুলিয়ার পুরপ্রধান তারকেশ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “শহর বাড়ছে। ফলে আমাদেরও কাজের পরিধি বাড়ছে। তাই যে রাস্তাগুলির উপরে চাপ অত্যন্ত বেশি, সেই রাস্তাগুলি পূর্ত দফতরকে অধিগ্রহণ করতে অনুরোধ করেছিলাম। এ বার যাতে দফতর দ্রুত কাজ শুরু করে, সে জন্য আমরা পূর্ত দফতরকে অনুরোধ করব।”

অন্য দিকে, জেলার আরও গুরুত্বপূর্ণ আটটি রাস্তা পূর্ত দফতরকে অধিগ্রহণ করার জন্য এই বৈঠকেই মন্ত্রীর কাছে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। ওই রাস্তাগুলি হল: অযোধ্যা পাহাড় হয়ে শিরকাবাদ-অযোধ্যা-বাঘমুণ্ডি, কাশীপুর-ঘাটরাঙামাটি, রঘুনাথপুর-গৌরাঙডি, বালরামপুর-বেড়াদা-বরাবাজার, পুঞ্চা-কেন্দা, হুড়ার বড়গ্রাম-লহরিয়া, বান্দোয়ানের পাটকিটা-ধাদকা-কাঁটাগোড়া ও সাঁতুড়ির হাঁসডিমা-পোড়াডি। পর্যটকদের কাছে অযোধ্যা পাহাড়ের রাস্তাটির গুরুত্ব অনেক বেশি। এই রাস্তাটি দীর্ঘদিন বেহাল থাকার পরে অবশেষে কয়েক মাস আগে সংস্কারে হাত দিয়েছে পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদ। তা ছাড়া শিল্পাঞ্চল হিসেবে রঘুনাথপুরের গুরুত্ব বাড়ায় পাশের জেলা শহর বাঁকুড়ার সঙ্গে যোগাযোগের জন্য রঘুনাথপুর-গৌরাঙডি এবং কাশীপুর-ঘাটরাঙামাটি এই দু’টি রাস্তারও গুরুত্ব বেড়েছে।

অন্য দিকে, বান্দোয়ানের কাঁটাগোড়া জঙ্গলে ২০০৩ সালের অক্টোবর মাসে মাওবাদীরা ল্যান্ডমাইন বিস্ফোরণে হত্যা করেছিল বান্দোয়ান থানার ওসি নীলমাধব দাসকে। সেই রাস্তা-সহ আরও কয়েকটি রাস্তার গুরুত্ব ইদানীং বেড়েছে বলে মনে করেন জেলা পরিষদের সভাধিপতি সৃষ্টিধর মাহাতো। তাই ওই রাস্তাগুলি অধিগ্রহণের জন্য পূর্ত দফতরকে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে বলে তিনি জানান। তিনি বলেন, “জেলা পরিষদের রাস্তা দিন দিন বাড়ছে। আবার আমাদের ক্ষমতা সীমিত। পূর্ত দফতর কয়েকটি রাস্তা অধিগ্রহণ করলে বাকিগুলির উপর আমরা নজর দিতে পারব।”

বৈঠকে উপস্থিত রাজ্যের স্বনির্ভর মন্ত্রী শান্তিরাম মাহাতো বলেন, “পূর্ত দফতর ১১টি রাস্তা অধিগ্রহণ করায় আশা করব এ বার রাস্তা আরও ভালো হবে।” তিনি জানান, পুরুলিয়া-বাঁকুড়া (৬০ এ) জাতীয় সড়ক চওড়া করার জন্য জমি অধিগ্রহণ করার বিষয়েও আলোচনা হয়েছে।

pwd department road renovation purulia
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy