Advertisement
১১ মে ২০২৪

হস্টেল ফি বৃদ্ধির প্রতিবাদে পথে আবাসিক ছাত্রছাত্রীরা

হস্টেলের ফি বৃদ্ধির প্রতিবাদে পথে নামলেন বিশ্বভারতীর আবাসিক ছাত্রছাত্রীরা। বৃহস্পতিবার শান্তিনিকেতেনের উপাসনা মন্দির থেকে কেন্দ্রীয় কার্যালয় পর্যন্ত একটি মিছিল করে, তাঁরা ফি বৃদ্ধির প্রতিবাদ জানান।

বিশ্বভারতীর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আবাসিকদের জমায়েত।—নিজস্ব চিত্র।

বিশ্বভারতীর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আবাসিকদের জমায়েত।—নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শান্তিনিকেতন শেষ আপডেট: ২৫ জুলাই ২০১৪ ০০:৪৩
Share: Save:

হস্টেলের ফি বৃদ্ধির প্রতিবাদে পথে নামলেন বিশ্বভারতীর আবাসিক ছাত্রছাত্রীরা। বৃহস্পতিবার শান্তিনিকেতেনের উপাসনা মন্দির থেকে কেন্দ্রীয় কার্যালয় পর্যন্ত একটি মিছিল করে, তাঁরা ফি বৃদ্ধির প্রতিবাদ জানান। পরে পাঁচ দফা দাবি জানিয়ে তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুশান্ত দত্তগুপ্তকে একটি স্মারকলিপি দেন।

এ দিন, বেলা বারোটা নাগাদ বিশ্বভারতীর কয়েকশো আবাসিক ছাত্রছাত্রী উপাসনা মন্দিরের সামনে জমায়েত হন। তাঁদের অভিযোগ, চলতি মাসের ১১ তারিখ বিশ্বভারতীর ছাত্র কল্যাণ আধিকারিক (ডিন)-এর দফতর থেকে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছে।

ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, হস্টেল নেওয়ার সময়ে, খাওয়া খরচ বাবদ মাসিক ২১০০ টাকা হিসেবে পাঁচ মাসের জন্য সাড়ে ১০ হাজার টাকা দিতে হবে। এ ছাড়া আনন্দ সদন, প্রতিমা, শ্রী সদন, বিড়লা, গোয়েঙ্কা, মৃণালিনী ছাত্রী নিবাস এবং কলা ভবন ছাত্রাবাসে থাকা আবাসিক ও আবাসিকাদের ‘কশান মানি’ বাবদ পাঁচ হাজার টাকা জমা দিতে হবে। সঙ্গে ছ’ মাসের ভাড়া ৬০০ টাকাও জমা দিতে বলা হয়েছে ওই বিজ্ঞপ্তিতে। কার্যত, বিজ্ঞপ্তি দেখার পরই বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রছাত্রী মহলে ক্ষোভ বাড়তে শুরু করে। আবাসিক ছাত্রছাত্রীরা বুধবার বিকেলে একটি বৈঠকও করেন। সেখানেই তাঁরা সিদ্ধান্ত নেন, অবিলম্বে ওই বিজ্ঞপ্তি প্রত্যাহারের দাবিতে স্মারকলিপি দেওয়া হবে কর্তৃপক্ষকে।

আবাসিক ছাত্রছাত্রীদের দাবি, এর আগে হস্টেল থাকার জন্য বছরে ১২০০ টাকা দিতে হত। সে টাকা দিতে তাঁদের এখনও কোনও আপত্তি নেই। প্রসঙ্গত, ২০১০ সালে কর্তৃপক্ষ হস্টেলের ফি ২০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ২৪০ টাকা করে। কিন্তু ছাত্র আন্দোলনের জেরে বিশ্ববিদ্যালয় তা কমিয়ে ১০০ টাকা করতে বাধ্য হয়। তখন অবশ্য হস্টেলের ক্যান্টিনে খাওয়ার বিষয়টি ঐচ্ছিক থাকায় খাওয়া বাবদ কোনও টাকা বা, ‘কশান মানি’ বাবদও কোনও টাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে ব্যধ্যতামূলক দিতে হত না।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শিক্ষক শিক্ষিকা এবং কর্মীদের একাংশেরও দাবি, সাধারণ ও ওবিসি ছাত্রছাত্রীদের জন্য ১৬ হাজার ১০০ টাকা এবং তফসিলি জাতি ও উপজাতি, প্রতিবন্ধীদের জন্য সাড়ে ১৫ হাজার টাকা দিতে হবে জেনে মেধাবী অথচ দুস্থ ছাত্রছাত্রীদের কপালে ভাঁজ পড়েছে। ছাত্রছাত্রীদের ক্ষোভ মূলত, ব্যধ্যতামূলক খাওয়া বাবদ ও ‘কশান মানি’-র বিজ্ঞপ্তি দেখেই। এ দিন বিশ্বভারতীর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে একটি বৈঠক চলাকালীন আবাসিক ছাত্রছাত্রীদের পাঁচ প্রতিনিধি গিয়ে উপাচার্যকে তার প্রতিবাদ জানিয়েই স্মারকলিপি দেন। স্মারকলিপিতে ৫ হাজার টাকার ‘কশান মানি’ প্রত্যাহার, ছাত্রছাত্রীদের মেসে থাকার বিষয়টি ঐচ্ছিক রাখা, ছাত্রছাত্রীদের মত নিয়ে তাঁদের হস্টেল পরিবর্তন করা, প্রতি মাসে ৩০ ইউনিটের মধ্যে বিদ্যুত্‌ ব্যাবহারের নির্দেশ প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।

বিশ্বভারতীর মিড়িয়া ইন্টারফেস কমিটির চেয়ারপার্সন অধ্যাপিকা সবুজকলি সেন বলেন, “উপাচার্যের নির্দেশে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। আবাসিক ছাত্রছাত্রীদের আর্জি নিয়ে তাঁরা খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থার সুপারিশের জন্য রিপোর্ট জমা দেবেন।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE