Advertisement
১১ মে ২০২৪

১২ ঘণ্টা পথ অবরোধ, ভোগান্তি দুই জেলায়

সরকার তাদের দাবি মেনে ভাষাকে স্বীকৃতি দিয়েছে এবং স্কুলে পঠন-পাঠন চালু করেছে। অথচ স্থায়ী শিক্ষক নিয়োগ করেনি। আবার অস্থায়ী শিক্ষক হিসেবে যাঁরা পড়াচ্ছেন তাঁদের সান্মানিকও দেওয়া হয় না। তাই সাঁওতালি ভাষার স্কুলগুলির পরিকাঠামো গড়া-সহ বেশ কিছু দাবিতে বুধবার বাঁকুড়া ও পুরুলিয়ার বিভিন্ন জায়গায় পথ অবরোধে নামল ভারত জাকাত মাঝি পারগানা মহল-সহ বিভিন্ন আদিবাসী সংগঠন।

সারেঙ্গার পিড়রগাড়ি মোড়

সারেঙ্গার পিড়রগাড়ি মোড়

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০০:৪২
Share: Save:

সরকার তাদের দাবি মেনে ভাষাকে স্বীকৃতি দিয়েছে এবং স্কুলে পঠন-পাঠন চালু করেছে। অথচ স্থায়ী শিক্ষক নিয়োগ করেনি। আবার অস্থায়ী শিক্ষক হিসেবে যাঁরা পড়াচ্ছেন তাঁদের সান্মানিকও দেওয়া হয় না। তাই সাঁওতালি ভাষার স্কুলগুলির পরিকাঠামো গড়া-সহ বেশ কিছু দাবিতে বুধবার বাঁকুড়া ও পুরুলিয়ার বিভিন্ন জায়গায় পথ অবরোধে নামল ভারত জাকাত মাঝি পারগানা মহল-সহ বিভিন্ন আদিবাসী সংগঠন। দুই জেলায় প্রায় ১২ ঘণ্টা অবরোধের জেরে নাকাল হল নিত্যযাত্রী থেকে সাধারণ মানুষ সকলকেই।

বাঁকুড়ায় সকাল ৬টা এবং পুরুলিয়ায় সকাল সাড়ে ৬টায় অবরোধ শুরু হয়। প্রশাসনের আশ্বাসে বাঁকুড়ায় প্রায় রাত ৮টা ও পুরুলিয়ায় সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ অবরোধ ওঠে। দীর্ঘক্ষণ এই অবরোধের জেরে দিনভর কার্যত অচল হয়ে রইল দুই জেলার পরিবহণ ব্যবস্থা। বাড়ি থেকে বেরিয়ে নাকাল হন সাধারণ মানুষ। রোগীর গাড়ি ছাড়া অন্য কোনও গাড়িকে যেতে দেওয়া হয়নি। এমনকী বহু জায়গায় মোটরবাইক আরোহীদেরও আটকে রাখা হয় বলে অভিযোগ। শর্ত সাপেক্ষে বাইক ঠেলে নিয়ে পার হতে হয়েছে তাঁদের।

সারেঙ্গার পিড়রগাড়ি মোড় ও নীচে হুড়ায় তোলা নিজস্ব চিত্র।

এ দিন বাঁকুড়া সদর থানার ধলড্যাংমোড়ে শতাধিক আদিবাসী মানুষজন পথ অবরোধে নামেন। যার জেরে জেলা শহরের সঙ্গে দিনভর যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ থাকে বিষ্ণুপুর মহকুমার। একই ভাবে ছাতনার বারবাকড়া মোড়েও পথ অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। ফলে শালতোড়া, ছাতনা ব্লকের সঙ্গে জেলা সদরের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। অন্য দিকে, দক্ষিণ বাঁকুড়া কার্যত বন্‌ধের চেহারা নেয়। বাসমালিক সমিতির কাছে পথ অবরোধ সংক্রান্ত আগাম খবর থাকায় এ দিন সে ভাবে বাসই রাস্তায় নামেনি। বাঁকুড়া-ঝাড়গ্রাম সড়কের রাইপুর থানা এলাকার চামট্যাবাঁধমোড়, বক্সি, জামডাঙা মোড়েও পথ অবরোধ করা হয়। তবে বিষ্ণুপুর-সোনামুখী, বিষ্ণুপুর-আরামবাগ রাস্তায় বাস চলেছে। একই চিত্র পুরুলিয়া জেলায়ও। মানবাজার থানার বীরসিংবীর গ্রামের মোড়ে পথ অবরোধ করে আদিবাসীরা। ফলে মানবাজার-পুঞ্চা ও মানবাজার-পুরুলিয়া রাস্তা অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। পুরুলিয়া-বরাকর রাজ্য সড়কের নিতুড়িয়া থানার হিরিডিমোড়, সাঁতুড়িয়া থানার মধুকুণ্ডা-সহ একাধিক জায়গায় দিনভর পথ অবরোধ করে রাখা হয়। পুরুলিয়া-বরাকর রাজ্য সড়কে অবরোধের জের পড়েছে শিল্পাঞ্চলগুলিতে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে অবরুদ্ধ এলাকায় পুলিশ মোতায়েন থাকলেও মানুষের হয়রানি এড়ানো যায়নি।

পশ্চিমবঙ্গ সাঁওতালি শিক্ষার অধিকার রক্ষা মঞ্চের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক অরুণ সরেন বলেন, “শুধু স্কুল গড়ে দিয়েই দায় এড়িয়েছে সরকার। আমাদের আন্দোলনের চাপে জেলা প্রশাসন একাধিকবার এই সব সমস্যা মিটিয়ে ফেলার আশ্বাস দিয়েছে। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। তাই মাতৃভাষায় শিক্ষার অধিকার রক্ষার্থে আন্দোলনে নেমেছি আমরা।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

12 hours strike purulia and bankura
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE