Advertisement
১০ মে ২০২৪
বিক্ষোভ, আটকে মন্ত্রী

প্রশ্নপত্র বিভ্রাটে পরীক্ষা বাতিল

পরীক্ষা বাতিলের পরেই সেন্ট পলস, মণীন্দ্রচন্দ্র, বিদ্যাসাগর, বঙ্গবাসী-সহ গোটা পাঁচেক কলেজের বেশ কিছু ছাত্রছাত্রী হাজির হন কলেজ স্ট্রিট ক্যাম্পাসে। বাস উদ্বোধনের জন্য সেখানে গিয়েছিলেন শিক্ষামন্ত্রী। শতবার্ষিকী প্রেক্ষাগৃহে বক্তৃতা শেষ করে বাস উদ্বোধন করার জন্য সবে মাত্র নীচে নামছিলেন তিনি। তখনই বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটক দিয়ে কয়েকশো পরীক্ষার্থী ঢুকে পড়েন ক্যাম্পাসে। বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন তাঁরা। বেগতিক বুঝে পুলিশ নীচে নামতে দেয়নি শিক্ষামন্ত্রীকে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ জুন ২০১৭ ০৩:৪৭
Share: Save:

একই সপ্তাহে দু’-দু’বার প্রশ্ন-বিভ্রাট কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে! এবং পরীক্ষা বাতিল হয়ে গেল দু’দিনই।

সোমবার প্রশ্ন-বিভ্রাটের জেরে বাংলা অনার্স (পার্ট টু) চতুর্থ পত্রের পরীক্ষা বাতিল হয়ে গিয়েছিল। বৃহস্পতিবার বাতিল করা হয়েছে রাষ্ট্রবিজ্ঞান (পাশ)-এর একটি অর্ধের পরীক্ষা। তার জেরে এ দিন প্রবল বিক্ষোভের মুখে পড়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে দীর্ঘ ক্ষণ কার্যত আটকে থাকতে হয় শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে। সন্ধ্যায় পরীক্ষা নিয়ামকের ঘরের বাইরে পুলিশের সঙ্গে এক প্রস্ত ধস্তাধস্তি হয় কিছু বিক্ষোভকারীর। রাতে জোড়াসাঁকো থানায় লিখিত অভিযোগ করেন কিছু পড়ুয়া।

এ দিন ছিল রাষ্ট্রবিজ্ঞান পাশের পরীক্ষা। প্রথমার্ধে পরীক্ষা ছিল পাশ কোর্সের পড়ুয়াদের। অনার্সের যে-সব পড়ুয়া পাশ-বিষয় হিসেবে রাষ্ট্রবিজ্ঞান নিয়েছেন, তাঁদের পরীক্ষা দেওয়ার কথা ছিল দ্বিতীয়ার্ধে। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, বাঘা যতীনের সম্মিলনী মহাবিদ্যালয়ে প্রথমার্ধের পরীক্ষায় দ্বিতীয়ার্ধের প্রশ্নপত্রের সিল খুলে ফেলা হয়। ওই প্রশ্নেই প্রথমার্ধে সেখানে পরীক্ষা দেন ভাঙড় এবং অন্য একটি কলেজের পরীক্ষার্থীরা। কলেজ-কর্তৃপক্ষ বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়কে জানান। তার পরেই দ্বিতীয়ার্ধের পরীক্ষা বাতিল করা হয়। ২টো থেকে দ্বিতীয়ার্ধের পরীক্ষা ছিল। অনেক কলেজে পরীক্ষা শুরু হয়ে যাওয়ার পরে তা বাতিলের খবর পৌঁছয়।

পরীক্ষা বাতিলের পরেই সেন্ট পলস, মণীন্দ্রচন্দ্র, বিদ্যাসাগর, বঙ্গবাসী-সহ গোটা পাঁচেক কলেজের বেশ কিছু ছাত্রছাত্রী হাজির হন কলেজ স্ট্রিট ক্যাম্পাসে। বাস উদ্বোধনের জন্য সেখানে গিয়েছিলেন শিক্ষামন্ত্রী। শতবার্ষিকী প্রেক্ষাগৃহে বক্তৃতা শেষ করে বাস উদ্বোধন করার জন্য সবে মাত্র নীচে নামছিলেন তিনি। তখনই বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটক দিয়ে কয়েকশো পরীক্ষার্থী ঢুকে পড়েন ক্যাম্পাসে। বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন তাঁরা। বেগতিক বুঝে পুলিশ নীচে নামতে দেয়নি শিক্ষামন্ত্রীকে।

উপাচার্য আশুতোষ ঘোষ এবং সহ-উপাচার্য (শিক্ষা) স্বাগত সেন ঘটনাস্থলে গেলে তাঁদের ঘিরে ধরে শুরু হয় প্রবল বিক্ষোভ। তাঁরা ফিরে যান। বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া এবং বিক্ষোভকারীদের মধ্যে শুরু হয়ে যায় ধাক্কাধাক্কি। পরে বিক্ষোভকারীদের বার করে দেয় পুলিশ।

মানবশৃঙ্খল গড়ে শিক্ষামন্ত্রীকে শতবার্ষিকী প্রেক্ষাগৃহের লিফটের বদলে সিঁড়ি দিয়ে নামানো হয়। বাস উদ্বোধন, বৃক্ষ রোপণের পরে মন্ত্রী বলেন, ‘‘আমরা সব কিছু স্বচ্ছতার সঙ্গে করতে চাইছি। সেই সময়ে এমন ঘটনা মেনে নেওয়া যায় না। আমার সামনে বিক্ষোভ দেখিয়ে লাভ নেই। যে-কলেজে এই ঘটনা ঘটেছে, সেখানকার অধ্যক্ষকে সাসপেন্ড করা হবে।’’ নিয়ম অনুসারে অবশ্য অধ্যক্ষকে সাসপেন্ড করতে পারে পরিচালন সমিতি। সম্মিলনী কলেজের অধ্যক্ষ শান্তিরঞ্জন পালচৌধুরী বলেন, ‘‘গন্ডগোল হয়েছিল। বিশ্ববিদ্যালয়কে জানিয়েছি। ওঁরা যা করার করছেন।’’ সহ-উপাচার্য (শিক্ষা) জানান, তদন্ত কমিটি গড়া হয়েছে। অধ্যক্ষকে শো-কজ করা হতে পারে।

পরীক্ষা নিয়ামক সুজিত বড়ুয়া পরে জানান, সম্মিলনী কলেজে যে-সব ছাত্রছাত্রী দ্বিতীয় দফার প্রশ্নেই প্রথম দফার পরীক্ষা দিয়েছেন, তাঁদের ওই পরীক্ষা বাতিল করা হচ্ছে না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE