আসল-নকল: ডাক্তারি পরীক্ষা চলছে সোনারপুর থেকে ধৃত ভুয়ো চিকিৎসক মহম্মদ জাফরের। —নিজস্ব চিত্র।
রাজ্য জুড়ে ভুয়ো চিকিৎসক নিয়ে হইচইয়ের মধ্যে ফের তিন জনের ডাক্তারি ডিগ্রি নিয়ে প্রশ্ন উঠল তিন জেলায়।
ভুয়ো রেজিস্ট্রেশন নম্বর ব্যবহার করে ডাক্তার পরিচয় দিয়ে রোগীদের সঙ্গে প্রতারণার অভিযোগে দু’জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। শনিবার রাতে দক্ষিণ ২৪ পরগনার সোনারপুর থেকে ধরা হয় মহম্মদ জাফরকে। শুক্রবার রাতে উত্তর ২৪ পরগনার গোবরডাঙা থেকে গ্রেফতার করা সৌমেন দেবনাথ নামের আরও এক জনকে।
এ দিকে, পুরুলিয়ার ঝালদায় এক ‘চিকিৎসক’ চেম্বার বন্ধ করে দিয়ে দেওয়ালে তাঁর এমবিবিএস ডিগ্রি লেখা বিজ্ঞাপন মুছে দেওয়ায় সন্দেহ দানা বেঁধেছে। ওই ব্যক্তির ডিগ্রির সত্যতা প্রমাণের আর্জি জানিয়ে বাসিন্দারা জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের দ্বারস্থ হয়েছেন।
গোবরডাঙা এলাকার একমাত্র হাসপাতালটি দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ। তাই বছরখানেক আগে সৌমেনবাবু সেখানে নিজেকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক জানিয়ে চেম্বার খুলে বসায় বাসিন্দারা স্বস্তি পেয়েছিলেন। তাঁর লেটারহেডে উল্লেখ থাকত— তিনি ‘এমবিবিএস, এমডি, এফআরএসএইচ, এমআরএসএইচ’। তিনি কোন কোন বিষয়ে বিশেষজ্ঞ, থাকত তারও উল্লেখ— ‘কার্ডিওলজি, মেডিসিন, ডায়াবেটিস, ব্রেন স্ট্রোক, ক্রিটিক্যাল কেয়ার’। পুলিশের দাবি, জেরায় ধৃত কবুল করেছেন, তিনি উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন। শনিবার তাঁকে বারাসত আদালতে হাজির করানো হলে বিচারক তাঁকে ছ’দিন পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন।
পুলিশের দাবি, মহম্মদ জাফর মাধ্যমিক পর্যন্ত পড়াশোনা করলেও তিনি প্যাডে এমবিবিএস ডিগ্রির উল্লেখ করতেন। বৈধ রেজিস্ট্রেশন নম্বর ছাড়াই সোনারপুরের রাধানগরে একটি নার্সিংহোমে বছর চারেক ধরে তিনি রোগী দেখছিলেন। কলকাতার কয়েকটি জায়গাতেও তাঁর চেম্বার ছিল বলে পুলিশ জানতে পেরেছে।
ঝালদায় বেশ কয়েক বছর ধরে চিকিৎসা করে আসা বিমল কুইরির প্রেসক্রিপশনের প্যাডেও ‘এমবিবিএস’ এবং ‘জেনারেল ফিজিশিয়ান ও শিশুরোগ অভিজ্ঞ’ বলে উল্লেখ রয়েছে। তাঁর দাবি, ‘‘আমি অল্টারনেটিভ মেডিসিন নিয়ে পড়াশোনা করেছি। আমাদের পাঠক্রম অনুযায়ী ‘এমবিবিএস’ লেখা ভুল নয়। তবু চারপাশে যা চলছে, তাতে আগাম সতর্কতা হিসেবে চেম্বার বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’’
পুরুলিয়ার জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অনিল দত্ত বলেন, ‘কে কোথায় বোর্ডে কী লিখে রোগী দেখছেন, তা জানা সম্ভব নয়। অভিযোগ এলে ওই ব্যক্তিকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করে ব্যবস্থা নেব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy