মহড়া: রায়চকে সেনা কপ্টার। শুক্রবার। নিজস্ব চিত্র
কলকাতা থেকে ৭০ কিলোমিটার দূরে একটি বিমান ভেঙে পড়েছে রায়চকে। ধরে গিয়েছে আগুন।
আগুনের মতোই ছড়িয়ে পড়ল খবর। শুক্রবার সকালে বেঙ্গালুরু থেকে কলকাতায় আসার পথে মাঝ-আকাশে উপগ্রহ মারফত সেই বার্তা পেলেন ইন্ডিগোর একটি বিমানের পাইলটও। তিনি তা জানান কলকাতা বিমানবন্দরের এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল বা এটিসি-কে। তড়িঘড়ি অকুস্থলে পৌঁছে গেল রাজ্য পুলিশ, সেনাবাহিনী ও উপকূলরক্ষী বাহিনী।
কত তাড়াতাড়ি পৌঁছল তারা?
কলকাতা বিমানবন্দরের এয়ার ট্রাফিক ম্যানেজমেন্টের জেনারেল ম্যানেজার বরুণকুমার সরকার জানান, দুর্ঘটনার খবর পাওয়ার ১৭ মিনিটের মধ্যে কলকাতা বিমানবন্দর থেকে ঘটনাস্থলের দিকে উড়ে যায় উপকূলরক্ষী বাহিনীর বিমান। ব্যারাকপুর থেকে ফৌজি হেলিকপ্টার রওনা হয় ৩০ মিনিটের মধ্যে এবং ১৫ মিনিটের মধ্যে দমকল নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায় রাজ্য পুলিশ।
এই তৎপরতা প্রশংসনীয় বলে মনে করছেন বরুণবাবুর মতো কর্তারা। রাজ্য পুলিশ, সেনা ও উপকূলরক্ষী বাহিনী যে-ক্ষিপ্রতায় ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে, তাতে সন্তুষ্ট বিমানবন্দর-কর্তৃপক্ষ। বরুণবাবু জানান, সত্যি সত্যিই তো এ দিন ওখানে কোনও বিমান ভেঙে পড়েনি। সবই সাজানো। তৎপরতা পরীক্ষার মহড়া মাত্র।
আট বছর পরে বিমান পরিবহণ মন্ত্রক এ রাজ্যে বিমান-দুর্ঘটনার এমন মহড়ার আয়োজন করল। এ দিন যে মহড়া হবে, সেটা জানতেন শুধু উচ্চ পর্যায়ের কয়েক জন অফিসার। বরুণবাবু তাঁদেরই এক জন। তিনি বলেন, ‘‘রায়চকের একটি খালি জমিকে দুর্ঘটনাস্থল বানানোর জন্য সেখানে ভেঙে পড়া বিশাল একটি বিমানের ফ্লেক্স রাখা হয়েছিল। আগুন দিয়ে তৈরি করা হয়েছিল ধোঁয়া।’’
পরিকল্পনা অনুযায়ী এ দিন সকালেই ভুবনেশ্বর বিমানবন্দরের এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল (এটিসি) থেকে খবর ছড়িয়ে দেওয়া হয়, একটি বিমানকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তার কিছু পরে রায়চকের ওই মাঠ থেকে ইমার্জেন্সি লোকেশন ট্রান্সমিটার (ইএলটি) নামে একটি যন্ত্র বিপদ-সঙ্কেত পাঠাতে শুরু করে। এই যন্ত্র বিমানেই থাকে। বিমান ভেঙে পড়লে তা থেকে বার্তা পাঠানো শুরু হয়ে যায়। বেঙ্গালুরু থেকে আসা ইন্ডিগোর পাইলট এ দিন সেই বার্তা পেয়েই কলকাতার এটিসি-কে জানান।
বিমানবন্দরের খবর, কারা কত তাড়াতাড়ি দুর্ঘটনাস্থল চিহ্নিত করে উদ্ধারকাজে নামতে পারে, সেটা দেখার জন্যই এই খবরটি জরুরি ভিত্তিতে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। বরুণবাবু জানান, কলকাতা থেকে উড়ে উপকূলরক্ষী বাহিনীর বিমান ২০ মিনিটের মধ্যে এবং ব্যারাকপুর থেকে উড়ে সেনাবাহিনীর কপ্টার ২৫ মিনিটের মধ্যে অকুস্থল চিহ্নিত করে ফেলে। রাজ্য পুলিশও খুব তাড়াতাড়ি ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। তবে রাজ্য পুলিশের সঙ্গে কোনও অ্যাম্বুল্যান্স ছিল না। কেন ছিল না, সন্তুষ্টির মধ্যেও সেটা ভাবাচ্ছে কর্তাদের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy