Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
ইংরেজবাজার

কৃষ্ণেন্দুকে রুখতে সক্রিয় দলের বিক্ষুব্ধরা

ইংরেজবাজারের পুরপ্রধানের পদে ফের কৃষ্ণেন্দু চৌধুরীকে দেখতে নারাজ তৃণমূলেরই একাধিক কাউন্সিলর। এ জন্য প্রয়োজনে তাঁরা বিজেপির সঙ্গে হাত মেলাতেও রাজি বলে তৃণমূলেরই একটি সূত্রের দাবি। বস্তুত এ দিনই মালদহের সার্কিট হাউসে বিজেপির রাজ্য সাধারণ সম্পাদক তথা বিধায়ক শমীক ভট্টাচার্যের সঙ্গে দেখা করেন ইংরেজবাজার পুরসভায় তৃণমূলের এক কাউন্সিলর। সূত্রের খবর, জেলা রাজনীতিতে ওই কাউন্সিলর কৃষ্ণেন্দু-বিরোধী বলে পরিচিত মন্ত্রী সাবিত্রী মিত্রের ঘনিষ্ঠ। সাবিত্রীদেবীর সঙ্গেও শমীকবাবুর এ দিন দেখা হয়েছে। যদিও সাবিত্রীদেবীর দাবি, এটা নেহাৎই সৌজন্য সাক্ষাৎ।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০৫ মে ২০১৫ ০৩:৪৯
Share: Save:

ইংরেজবাজারের পুরপ্রধানের পদে ফের কৃষ্ণেন্দু চৌধুরীকে দেখতে নারাজ তৃণমূলেরই একাধিক কাউন্সিলর। এ জন্য প্রয়োজনে তাঁরা বিজেপির সঙ্গে হাত মেলাতেও রাজি বলে তৃণমূলেরই একটি সূত্রের দাবি। বস্তুত এ দিনই মালদহের সার্কিট হাউসে বিজেপির রাজ্য সাধারণ সম্পাদক তথা বিধায়ক শমীক ভট্টাচার্যের সঙ্গে দেখা করেন ইংরেজবাজার পুরসভায় তৃণমূলের এক কাউন্সিলর। সূত্রের খবর, জেলা রাজনীতিতে ওই কাউন্সিলর কৃষ্ণেন্দু-বিরোধী বলে পরিচিত মন্ত্রী সাবিত্রী মিত্রের ঘনিষ্ঠ। সাবিত্রীদেবীর সঙ্গেও শমীকবাবুর এ দিন দেখা হয়েছে। যদিও সাবিত্রীদেবীর দাবি, এটা নেহাৎই সৌজন্য সাক্ষাৎ।

সদ্যসমাপ্ত পুর নির্বাচনে ইংরেজবাজার পুরসভায় তৃণমূল পেয়েছে ১৫টি আসন। কংগ্রেস, সিপিএম, বিজেপি ও নির্দল মিলিয়ে পেয়েছে ১৪টা। এই অবস্থায় তৃণমূলেরই একটা অংশ চায় না কৃষ্ণেন্দু ফের চেয়ারম্যান পদে বসুন। তৃণমূলের অন্দরের খবর, দলের জয়ী কাউন্সিলরদের মধ্যে ৯ জন কৃষ্ণেন্দু-ঘনিষ্ঠ। বাকি ৬ জন কৃষ্ণেন্দু-বিরোধী। সূত্রের খবর, কৃষ্ণেন্দু-বিরোধীদের মধ্যে রয়েছেন বিদায়ী ভাইস চেয়ারম্যান দুলাল সরকার ওরফে বাবলাও। তাঁদের অভিযোগ, একাধারে মন্ত্রী এবং পুরসভার চেয়ারম্যান হয়ে দলে কৃষ্ণেন্দুবাবুর আধিপত্য ক্রমশ বেড়েছে। সেই সঙ্গে বেড়েছে তাঁর ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ। কৃষ্ণেন্দুকে ‘শিক্ষা’ দিতে প্রয়োজনে ভোটাভুটিতে তাঁকে হারানোর কথাও ভেবেছেন বিক্ষুব্ধরা। তার মধ্যেই শমীকবাবুর সঙ্গে কৃষ্ণেন্দু-বিরোধী এক কাউন্সিলর ও মন্ত্রী সাবিত্রীদেবীর সাক্ষাৎ এই জল্পনা উস্কে দিয়েছে যে, বিজেপির সাহায্য নিয়ে কৃষ্ণেন্দু-বিরোধীরা বোর্ড গঠনের চেষ্টা করবেন।

তবে কেউই এই বিষয়ে সরাসরি মুখ খুলতে নারাজ। সাবিত্রীদেবী বলেন, ‘‘আমি এলাকায় বাড়ির সামনে দাঁড়িয়েছিলাম। সে সময় শমীকবাবু সেখান দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন। তাঁর সঙ্গে বিধানসভায় আগে থেকেই পরিচয় রয়েছে। তাই তিনি আমাকে দেখে দাঁড়ান। সৌজন্যবশত সে সময় তাঁর সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। এর মধ্যে অন্য কোনও ব্যাপার নেই।’’ মন্ত্রীর কথায়, ‘‘পুরবোর্ড গঠনের ব্যাপারে আমার কোনও ভূমিকা নেই। দলনেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রীর কথাই চূড়ান্ত।’’

তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে শমীকবাবু বলেন, ‘‘বহু দিনের একনায়কতন্ত্র থেকে ইংরেজবাজারকে বাঁচাতে শহরে সুস্থ সামাজিক পরিবেশ ফেরাতে এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করতে সব রাজনৈতিক দলের উচিত কিছু ক্ষণের জন্য দলীয় পতাকার ঊর্ধ্বে উঠে গণপ্রতিরোধ গড়ে তোলা। আমি আশা করি এই ডাকে সকলেই সাড়া দেবেন। শহর বাঁচলে তবেই রাজনীতি বাঁচবে।’’

তবে যাঁর বিরুদ্ধে এত আয়োজন, সেই কৃষ্ণেন্দু কিন্তু বসে নেই। দলেরই একাংশের ক্ষোভের আঁচ পেয়েছেন তিনিও। তৃণমূল সূত্রের খবর, বিক্ষুব্ধ-কাঁটা সরাতে কৃষ্ণেন্দু ইতিমধ্যেই কংগ্রেসের এক কাউন্সিলরের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। বিজেপির কাউন্সিলরদের সঙ্গেও যোগাযোগ করেছেন তিনি। এ বারের ভোটে কৃষ্ণেন্দু-ঘনিষ্ঠ কয়েক জন হেরে গিয়েছেন। কৃষ্ণেন্দু ও তাঁর স্ত্রী কাকলি অল্প ব্যবধানে জিতেছেন। ফলে দলে তাঁর কর্তৃত্ব খানিকটা খর্ব হয়েছে। আর তাতেই সাবিত্রীর সঙ্গে তাঁর পুরনো বিরোধ ফের মাথা চাড়া দিয়েছে। তৃণমূলের একটি সূত্রের দাবি, পুরবোর্ড দখলে রাখতে দল যদি অন্য কাউকে চেয়ারম্যান করে, সে ক্ষেত্রে কৃষ্ণেন্দু-পন্থীরা বসে যেতে পারেন। ওই সূত্রটির দাবি, তেমনটা হলে বিজেপির তিন কাউন্সিলর তৃণমূলকে সমর্থন করবে বলে আশ্বাস পেয়েছেন কৃষ্ণেন্দু-বিরোধীরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE