পুরনো নোট বাতিলের জেরে সারা দেশেই দুর্দশার অন্ত নেই আমজনতার। সহায় হিসেবে কাউকে না-পেয়ে মানুষ দিশাহারা। এই অবস্থায় এ রাজ্যে অন্তত ব্যাঙ্কের গ্রাহকদের হয়রানি ঘোচাতে এগিয়ে এল ক্রেতা সুরক্ষা দফতর। পরিষেবা দিতে না-পারার কোনও অভিযোগ দফতরে জমা পড়লে প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্কের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে বলেও হুমকি দিয়েছেন ক্রেতা সুরক্ষা মন্ত্রী সাধন পাণ্ডে।
বৃহস্পতিবার রিজার্ভ ব্যাঙ্ক এবং শহরের অন্যান্য সরকারি ও বেসরকারি ব্যাঙ্কের প্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠক করেন মন্ত্রী। সেখানে তিনি ওই প্রতিনিধিদের জানিয়ে দেন, পরিষেবার খামতি নিয়ে গ্রাহকের কোনও অভিযোগ জমা পড়লে ছেড়ে দেওয়া হবে না। সরাসরি ক্রেতা সুরক্ষা দফতরে মামলা করা হবে।
ক্রেতা সুরক্ষা দফতর সূত্রের খবর, ৮ নভেম্বর ৫০০ এবং ১০০০ টাকার পুরনো নোট বাতিল ঘোষণার পর থেকে রাজ্যের বিভিন্ন ব্যাঙ্কে শুধুই হয়রানি আর দুর্ভোগের চিত্র। মৌখিক ভাবে হয়রানির বহু অভিযোগ তাঁদের কানে এসেছে। কেন্দ্রীয় সরকার এবং রিজার্ভ ব্যাঙ্ক বিভিন্ন সময়ে যতই আশ্বাস দিক, ব্যাঙ্ক থেকে নিজের টাকা তোলার সমস্যা এখনও মেটেনি বলে জানান সাধনবাবু। রাজ্যের ক্ষমতাসীন দল হিসেবে তৃণমূল এই নিয়ে দেশ জুড়ে আন্দোলন করছে। ন্যায্য পরিষেবা পাওয়ার ক্ষেত্রে মানুষের অধিকার লঙ্ঘিত হলে ক্রেতা সুরক্ষা দফতরও যে চুপ করে বসে থাকবে না, তা জানিয়ে দেন তিনি।
এত দিন এ কথা বলেননি কেন?
ক্রেতা সুরক্ষা মন্ত্রীর জবাব, প্রথম দিকে অসুবিধা হলেও মানুষ এটা মেনে নিচ্ছিলেন। কিন্তু টাকা তোলা নিয়ে ক্রমশ পরিস্থিতি আরও ঘোরালো হয়ে ওঠায় অভিযোগও বাড়তে থাকে। প্রধানমন্ত্রী ৫০ দিন সময় চেয়েছিলেন। তা প্রায় শেষের দিকে। এখনও নিজের টাকা তুলতে পারছেন না গ্রাহকেরা। কেন পরিষেবা মিলবে না, তা জানতে চান তাঁরা। সাধনবাবুর দাবি, সারা দেশে টাকা তুলতে গিয়ে যাঁরা মারা গিয়েছেন, তাঁদের প্রত্যেকের পরিবারের হাতে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে কেন্দ্রকে। এ ব্যাপারে বৈঠকে রিজার্ভ ব্যাঙ্ককে উদ্যোগী হতে হবে। তিনি বলেন, ‘‘এ বিষয়ে আবেদন জানিয়ে একটি চিঠি রিজার্ভ ব্যাঙ্কে পাঠাতে বলা হয়েছে। আমরা খুব শীঘ্রই সেটা পাঠাচ্ছি।’’
সাধনবাবুর দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, মন্ত্রী এ দিনের বৈঠকে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের প্রতিনিধির কাছে জানতে চান, নোট-নাকচের এত দিন পরেও এই হয়রানি কেন? জবাবে মন্ত্রীকে জানানো হয়, যে-পরিমাণ নোট জমা পড়েছে, নতুন নোট পাওয়া গিয়েছে তার মাত্র ৪০ শতাংশ। ৬০ শতাংশ এখনও ছাপানোই হয়নি। অর্থাৎ সমস্যা যে আরও কিছু দিন চলবে, রিজার্ভ ব্যাঙ্কের কর্তাদের কথাতেই তা পরিষ্কার বলে জানান মন্ত্রী। বৈঠকে স্টেট ব্যাঙ্ক, ইউবিআই, ইউকো, পঞ্জাব ন্যাশানাল, ইলাহাবাদ সেন্টাল ব্যাঙ্ক, ব্যাঙ্ক অব বরোদা-সহ ১৪টি সরকারি–বেসরকারি ব্যাঙ্কের প্রতিনিধিরা হাজির ছিলেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy