Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

প্রধান শিক্ষক নিয়োগে স্থগিত কাউন্সেলিং

বিচারপতি শেখর ববি শরাফ মঙ্গলবার প্রধান শিক্ষক নিয়োগের কাউন্সেলিংয়ের উপরে এক মাসের অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ জারি করেছেন।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ জানুয়ারি ২০১৯ ০৪:২১
Share: Save:

মেধা-তালিকা ও র‌্যাঙ্ক-বিভ্রাট নিয়ে অনেক টানাপড়েনের পরে কাউন্সেলিং শুরু হতে যাচ্ছিল। কিন্তু প্রথম দফায় স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি)-এর সিদ্ধান্তে এবং শেষ পর্যন্ত কলকাতা হাইকোর্টের স্থগিতাদেশে সরকারি ও সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলগুলিতে প্রধান শিক্ষক ও প্রধান শিক্ষিকা নিয়োগের কাউন্সেলিং পিছিয়ে গেল। বিচারপতি শেখর ববি শরাফ মঙ্গলবার প্রধান শিক্ষক নিয়োগের কাউন্সেলিংয়ের উপরে এক মাসের অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ জারি করেছেন।

এসএসসি ২০১৭ সালে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানায়, প্রধান শিক্ষক ও প্রধান শিক্ষিকার পদে নিয়োগের পরীক্ষায় বসার জন্য স্নাতকোত্তর স্তরে (এমএ, এমএসসি, এমকম) কমপক্ষে ৫০ শতাংশ নম্বর থাকতে হবে। সেই বিজ্ঞপ্তিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে হাইকোর্টে মামলা করেন প্রণতি আগুয়ান-সহ জনা দশেক প্রার্থী। তাঁদের আইনজীবী এক্রামুল বারি জানান, তাঁর মক্কেলদের ৫০ শতাংশ নম্বর ছিল না। মামলার আবেদনে বলা হয়, ২০১৫ সাল পর্যন্ত স্নাতকোত্তর স্তরে কমপক্ষে ৪০ শতাংশ নম্বর থাকলেই ওই নিয়োগ পরীক্ষায বসা যেত। পরের বছর তা বাড়িয়ে ৪৫ শতাংশ করা হয়। ২০১৭ সালে করা হয় ৫০ শতাংশ। নতুন বিজ্ঞপ্তির বৈধতা নিয়েই প্রশ্ন তোলা হয়েছে মামলার আবেদনে। সেই মামলায় বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী দু’বছর আগেই এসএসসি-কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছিলেন, মামলাকারীদের পরীক্ষায় বসতে দিতে হবে। তাঁরা লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে ডাকতে হবে ইন্টারভিউয়ে। সাক্ষাৎকারে সফল হলে ফল প্রকাশ করে তাঁদের নাম তুলতে হবে তালিকায়। এসএসসি ওই প্রার্থীদের পরীক্ষা এবং ইন্টারভিউ নিলেও ফল প্রকাশ করেনি।

বারি জানান, ইতিমধ্যে মামলাটি স্থানান্তরিত হয় বিচারপতি শরাফের আদালতে। তাঁর আদালতে নতুন করে একটি আবেদন জানান প্রার্থীরা। তাঁরা বলেন, আদালত নির্দেশ দেওয়া সত্ত্বেও তাঁরা কৃতকার্য হলেন কি না, তা জানার সুযোগ পেলেন না। কেননা তাঁদের পরীক্ষার ফল প্রকাশই করা হয়নি। উল্টে কাউন্সেলিং শুরু হতে চলেছে। এ দিন সেই মামলার শুনানিতে এসএসসি-র আইনজীবী সুতনু পাত্র জানান, কাউন্সেলিং বন্ধ রাখা সম্ভব নয়। মামলাকারীদের জন্য কিছু পদ ফাঁকা রাখা যেতে পারে।

বিচারপতি দু’পক্ষের বক্তব্য শুনে কাউন্সেলিংয়ের উপরে অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ জারি করে জানান, মূল মামলার শুনানি হবে ২৮ জানুয়ারি। এসএসসি-র চেয়ারম্যান সৌমিত্র সরকার বলেন, ‘‘কাউন্সেলিংয়ের জন্য আমরা তৈরি ছিলাম। কিন্তু আদালতের নির্দেশ মানতেই হবে।’’

উচ্চ আদালতের এ দিনের স্থগিতাদেশের আগে এসএসসি এক বার কাউন্সেলিং পিছিয়ে দেওয়ায় প্রার্থীদের ভোগান্তি বাড়ে। প্রধান শিক্ষক ও প্রধান শিক্ষিকা নিয়োগের প্রথম দফার কাউন্সেলিং এ দিনই শুরু হবে ভেবে বিভিন্ন জেলা থেকে বেশ কিছু প্রার্থী সল্টলেকে এসএসসি-র দফতরে হাজির হন। কিন্তু তাঁরা দেখেন, অফিসের গেটে টাঙানো একটি বিজ্ঞপ্তিতে লেখা আছে, কাউন্সেলিং শুরু হবে ২৪ জানুয়ারি। যদিও কমিশন প্রথমে ঘোষণা করেছিল, কাউন্সেলিং শুরু হবে ২২ জানুয়ারি, মঙ্গলবার। সোমবার রাতে কমিশন জানায়, কাউন্সেলিং দু’দিন পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। আরও পরে প্রার্থীরা জানতে পারেন, কমিশনের সিদ্ধান্তে দু’দিন পিছোনোর পরে এ দিন হাইকোর্টের নির্দেশে কাউন্সেলিং এক মাস স্থগিত হয়ে গিয়েছে। এসএসসি-র দফতরের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন মালদহের দুই শিক্ষক। তাঁদের এ দিন কাউন্সেলিং ছিল। তাঁরা জানান, কাউন্সেলিংয়ে ডাক পেয়ে সোমবার রাতে তাঁরা কলকাতায় পৌঁছে যান। এসে জানতে পারেন, দু’দফায় পিছিয়ে গিয়েছে কাউন্সেলিং!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

SSC Headmaster recruitment
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE