বৈঠকে শশী পাঁজা। ছবি: মন্ত্রকের সৌজন্যে
সংঘাত নয় সহযোগিতা। জাতীয় রাজনীতির রঙ্গমঞ্চে কেন্দ্রের সঙ্গে হাত মিলিয়ে চলার এই বার্তা নিয়ে দিল্লিতে এলেন সমাজকল্যাণ, মহিলা ও শিশু দফতরের মন্ত্রী শশী পাঁজা।
প্রতিবন্ধীদের উন্নয়নের প্রশ্নে রাজ্যগুলি কী ভাবে কাজ করছে তার সমীক্ষা করতেই আজ দিল্লিতে একটি বৈঠক ডাকে কেন্দ্রীয় সামাজিক ন্যায় মন্ত্রক। মূলত গোটা দেশের প্রতিবন্ধীদের জন্য অভিন্ন পরিচয়পত্র তৈরির কাজ কত দূর এগিয়েছে তা ঠিক করতেই ওই বৈঠক ডাকা হয়। প্রতিবন্ধীরা যাতে সহজেই সরকারি ঋণ ও অন্য আর্থিক সুবিধে পান সে জন্যই এই অভিন্ন কার্ড চালু করার পরিকল্পনা নিয়েছে কেন্দ্র। পশ্চিমবঙ্গে এই কাজ শুরু হওয়ার কথা ২০১৮ সাল থেকে। কিন্তু আজ বৈঠকে শশী পাঁজা জানান, ইতিমধ্যেই ওই কাজের জন্য প্রয়োজনীয় পরিসংখ্যান ও তথ্য সংগ্রহ করে ফেলেছে রাজ্য। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ওই ইতিবাচক মনোভাবের প্রশংসা করেন মন্ত্রক কর্তারা।
কেন্দ্রের সঙ্গে সংঘাতের বার্তা দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে প্রথম ইনিংস শুরু করেছিলেন মমতা। তখন কেন্দ্রের ডাকা একের পর সরকারি বৈঠক এড়িয়ে গিয়েছেন রাজ্যের মন্ত্রীরা। পরিবর্তে কখনও এসেছেন বিভাগীয় আমলারা। আবার কখনও কেউই আসেননি। এমনকী মুখ্যমন্ত্রীদের বৈঠকে একাধিক বার অনুপস্থিত থেকেছেন মমতা। সংঘাতের এই রাজনীতি ক্রমশ দূরত্ব বাড়িয়ে তুলেছিল কেন্দ্র ও রাজ্যের। রাজনীতিকদের মতে, আপাতত সে পথে হাঁটতে রাজি নন মমতা। এ দিনের বৈঠকে তারই ইঙ্গিত মিলেছে।
আজ বৈঠকে কেন্দ্রের পক্ষ থেকে রাজ্যের প্রতিনিধিদের বলা হয়, পশ্চিমবঙ্গের সমস্ত প্রতিবন্ধী জনসংখ্যার মাত্র ৫৩ শতাংশ মানুষকে নথিভুক্ত করতে পেরেছে সরকার। অবিলম্বে বাকিদের নথিভুক্ত করা উচিত। শশী পাঁজা বলেন, ‘‘সে কথা শুনে আমরা পরিসংখ্যান দিয়ে জানাই, রাজ্যের প্রতিবন্ধী জনসংখ্যার প্রায় ৭৩ শতাংশ মানুষকে নথিভুক্ত করে ফেলা সম্ভব হয়েছে।’’ যা মেনে নেয় কেন্দ্র। বৈঠকে উপস্থিত পশ্চিমবঙ্গ সরকারের এক আমলার কথায়, ‘‘কেন্দ্র এ ভাবে এক বাক্যে রাজ্যের যুক্তি মেনে নিচ্ছে, এটা ভাবাই যায় না।’’ একই সঙ্গে নিজের বক্তব্যে শশী পাঁজা রাজ্য প্রতিবন্ধী মানুষের জন্য রোজগার মেলা, বিশেষ ওয়েবসাইট-সহ কী ধরনের সরকারি সুযোগ-সুবিধে দিচ্ছে তা বিস্তারিত ভাবে তুলে ধরেন। মহিলাদের উপরে অত্যাচার রুখে তাঁদের আত্মনির্ভর করে তোলা ও বাল্যবিবাহ আটকানোর ক্ষেত্রে কন্যাশ্রী প্রকল্পের সাফল্যের কথাও জানান তিনি। শশী পাঁজার কথায়, ‘‘আমাদের প্রধান দায়িত্ব হল সামাজিক নীতি ও কল্যাণের যে যজ্ঞ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার শুরু করেছে তা সকলকে জানানো। রাজ্যের সেই সাফল্যকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী, আমলা ও অন্য রাজ্যের মন্ত্রীদের সামনে তুলে ধরেছি।’’ কেন্দ্রের পক্ষ থেকে এ দিন পশ্চিমবঙ্গকে সমাজকল্যাণ খাতে সব ধরনের সাহায্য দেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়। কেন্দ্রের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন রাজ্য সরকারের প্রতিনিধিরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy