Advertisement
E-Paper

গুরুঙ্গদের সিকিমের মদত, নালিশের পথে নবান্ন

চলতি দফায় গোর্খাল্যান্ড আন্দোলন শুরুর পরে প্রতিবেশী দুই রাজ্যের মধ্যে টানাপড়েন চলছিলই। দার্জিলিঙে অশান্তির জেরে সিকিমের আর্থিক ক্ষতি পশ্চিমবঙ্গকে পূরণ করতে হবে, এই দাবি জানিয়ে আদালতে গিয়েছে পবন চামলিঙের সরকার। পাশাপাশি, গুরুঙ্গের প্রতি সমর্থনের কথাও বলেছে তাঁর দল।

কিশোর সাহা

শেষ আপডেট: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৩:১৯
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

ইউএপিএ-তে অভিযুক্ত বিমল গুরুঙ্গ ও তাঁর সঙ্গীদের সিকিম মদত দিচ্ছে বলে অভিযোগ পশ্চিমবঙ্গ সরকারের। এ নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছে অভিযোগও জানাতে চলেছে ‘উদ্বিগ্ন’ নবান্ন।

চলতি দফায় গোর্খাল্যান্ড আন্দোলন শুরুর পরে প্রতিবেশী দুই রাজ্যের মধ্যে টানাপড়েন চলছিলই। দার্জিলিঙে অশান্তির জেরে সিকিমের আর্থিক ক্ষতি পশ্চিমবঙ্গকে পূরণ করতে হবে, এই দাবি জানিয়ে আদালতে গিয়েছে পবন চামলিঙের সরকার। পাশাপাশি, গুরুঙ্গের প্রতি সমর্থনের কথাও বলেছে তাঁর দল।

এই অবস্থায়, শুক্রবার নামচিতে মোর্চার কেন্দ্রীয় কমিটির গোপন বৈঠক ঘিরে যা ঘটেছে, তাতে দুই রাজ্যের সম্পর্ক আরও খানিকটা তিক্ত হয়েছে। সিকিমের ভূমিকা নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের আপত্তির কথা রাজ্য পুলিশের ডিজি সুরজিৎ কর পুরকায়স্থ ইতিমধ্যেই সে রাজ্যের পুলিশ কর্তাদের জানিয়েছেন বলে খবর।

আরও পড়ুন:মোর্চা নেতাদের নির্দেশেই হামলা

সেই সূত্রের দাবি, ডিজি স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিয়েছেন, দার্জিলিং পাহাড়ে ধারাবাহিক বিস্ফোরণ, হামলা, হিংসা এবং খুনোখুনিতে অভিযুক্তদের সিকিম যে ভাবে মদত দিচ্ছে, তাতে তারা জঙ্গিপনায় অভিযুক্তদের ‘নিরাপদ আশ্রয়স্থল’ হিসেবে পরিচিত হয়ে যেতে পারে। সে কথাই তথ্যপ্রমাণ-সহ কেন্দ্রকে জানানো হবে। সিকিম সরকারের ভূমিকায় মুখ্যমন্ত্রীও ক্ষুব্ধ বলে তাঁর ঘনিষ্ঠ মহল থেকে জানা গিয়েছে।

অভিযানে সাহায্য চেয়ে সেই চিঠি। সবিস্তার দেখতে ক্লিক করুন।

নবান্নের অবস্থানে চাপে পড়েছে সিকিম। কারণ, পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখার নানা বাধ্যবাধকতা আছে তাদের। তাই বিষয়টি স্থানীয় স্তরে মিটিয়ে নিতে চেষ্টা করছে সিকিম সরকার। সিকিমের মুখ্যমন্ত্রী পবন চামলিঙের রাজনৈতিক পরামর্শদাতা কে টি গ্যালসেন বলেছেন, ‘‘একটা ঘটনার পরে বোঝাপড়ার অভাব দেখা গিয়েছে। আমাদের না জানিয়ে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের অভিযানের নিন্দা করছি। কিন্তু দুই প্রতিবেশী রাজ্যের মধ্যে সুসম্পর্ক থাকা দরকার।’’

সিকিমকে না জানিয়ে অভিযানের কথা অবশ্য জোর গলায় অস্বীকার করেছে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ। তাদের বক্তব্য, গুরুঙ্গ যে সিকিমে ডেরা বেঁধে পাহাড়ে অশান্তি চালিয়ে যাচ্ছেন এ সন্দেহ দীর্ঘদিন ধরেই ছিল। সে কথা সিকিম পুলিশকে বহু বার জানানোও হয়েছিল। কিন্তু তারা তা অস্বীকার করে। এর মাঝে শুক্রবার দার্জিলিঙের মাঝিটাঁড়ে বৈঠকের কথা রটিয়ে গুরুঙ্গ নামচির মাঝিটাঁড়ের অতিথি নিবাসে সকলকে ডাকেন। এডিজি, সিআইডি রাজেশ কুমার বলেন, ‘‘সেই খবর পেয়েই দক্ষিণ সিকিমের পুলিশ সুপারকে চিঠি লিখে অভিযুক্ত নেতাদের ধরার অভিযানে সাহায্য করার অনুরোধ জানান স্পেশ্যাল সুপারিন্টেন্ডেন্ট, সিআইডি অজয় প্রসাদ।’’ তা সত্ত্বেও রাজ্য পুলিশের দল গোড়া থেকেই নামচি থানার বাধার মুখে পড়ে বলে অভিযোগ এ রাজ্যের পুলিশ কর্তাদের। এক শীর্ষ পুলিশ কর্তা বলেন, পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ অতিথি নিবাসকে তিন দিক ঘিরে ফেলার চেষ্টা করলে ভিতর থেকে গুলি চলতে শুরু করে। সেই সময়ে নামচি থানার পুলিশ গিয়ে নানা নথিপত্র দেখতে চেয়ে অভিযানের গতি শ্লথ করে দেয়।

রাজ্য পুলিশের দাবি, ইতিমধ্যে গুলি চালিয়ে গুরুঙ্গকে আড়াল করে খাদ বেয়ে পালিয়ে যেতে দেন তাঁকে ঘিরে থাকা জিএলপি সদস্যরা। ঘটনাস্থল থেকে কয়েকজন মোর্চা নেতানেত্রীকে আটক করা হলেও নামচি থানা তাঁদের হেফাজতে রেখে দেয়। রাজ্য পুলিশের শীর্ষ এক কর্তা জানান, নাগালে পেয়েও ইউএপিএ-তে অভিযুক্তদের ধরা গেল না, বরং তাঁদের পালিয়ে যাওয়ায় মদত দেওয়া হয়েছে। সে কারণেই বিষয়টি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের নজর আনা প্রয়োজন।

এ দিকে, নামচি কাণ্ডের ফলে গুরুঙ্গকে নতুন ডেরার খোঁজ শুরু করতে হয়েছে বলে মোর্চা সূত্রের খবর। তবে গোপন ডেরা থেকে ভিডিও বার্তায় এ দিন তিনি বলেছেন, ‘‘আমি লুকিয়ে থাকলেও পাহাড়ের মানুষ লড়াই চালাবেন।’’ সূত্রের খবর, এখনও সিকিমের কাছাকাছিই রয়েছেন গুরুঙ্গ-সহ অন্তত ২৫ জন।

Sikkim Bimal Gurung Ministry of Home Affairs UAPA Darjeeling Unrest Gorkhaland Indefinite Strike নবান্ন
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy