Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪
West Bengal CPM

কেন তিনি মমতার পাশে? পাঁচ মাস পর বাংলায় এসে ব্যাখ্যা দিলেন সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক ইয়েচুরি

শুক্রবার থেকে দলের হাওড়া জেলা দফতরে শুরু হয়েছে সিপিএম রাজ্য কমিটির বর্ধিত অধিবেশন। উদ্বোধনী বক্তৃতা করেন ইয়েচুরি। সেখানেই মমতা-অভিষেকের সঙ্গে এক মঞ্চে থাকার ব্যাখ্যা দেন তিনি।

Sitaram Yechury gave his explanation to Bengal CPM about Opposition Alliance INDIA

‘ইন্ডিয়া’র বৈঠকে মমতা, সনিয়া, রাহুল, ইয়েচুরি। —ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
হাওড়া শেষ আপডেট: ০৩ নভেম্বর ২০২৩ ১৬:৪২
Share: Save:

বিজেপি বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র একাধিক বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে সীতারাম ইয়েচুরির পাশাপাশি ছবি নিয়ে সিপিএমের নিচুতলায় বিস্তর ক্ষোভ তৈরি হয়েছিল। দীর্ঘ দিন পর বাংলায় এসে শুক্রবার রাজ্য সিপিএমের শীর্ষনেতাদের সামনে এক মঞ্চে থাকার ব্যাখ্যা দিলেন দলের সাধারণ সম্পাদক।

শুক্রবার থেকে দলের হাওড়া জেলা দফতরে শুরু হয়েছে সিপিএম রাজ্য কমিটির বর্ধিত অধিবেশন। সেই অধিবেশনের উদ্বোধনী বক্তৃতায় ইয়েচুরি বলেন, ‘‘ভারতকে বাঁচানোর জন্যই ‘ইন্ডিয়া’ তৈরি হয়েছে। দেশকে যদি সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হয়, তা হলে অবশ্যই আগে দেশকে বাঁচাতে হবে। সেই কাজে যাঁরা আসতে চান, তাঁদের সবাইকে নিতে হবে।’’

এর পর সরাসরি মমতার পাশে তাঁর ছবির প্রসঙ্গ তোলেন সিপিএম সাধারণ সম্পাদক। বলেন, ‘‘অনেকে আপনারা বলেছিলেন, কেন আমি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে ছিলাম। বিষয়টা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে থাকা নয়। গোটা দেশ জানে, তৃণমূল আগে বিজেপির শরিক ছিল। আবার দরকারে তারা বোঝাপড়া করতে পারে। কিন্তু সামগ্রিক যে ধারণা থেকে ‘ইন্ডিয়া’ তৈরি হয়েছে তাতে যারা আসতে চায়, তাদের সবাইকেই নিতে হবে।’’ তিনি এ-ও স্পষ্ট করে দিয়েছেন, ‘ইন্ডিয়া’ কোনও নির্বাচনী জোট নয়। ফলে তৃণমূলের সঙ্গে রাজ্যে সমঝোতার কোনও প্রশ্ন নেই।

ইয়েচুরি যখন বিজেপির সঙ্গে তৃণমূলের অতীত সম্পর্ক টেনে এনে বাংলার শাসকদলের ‘দোদুল্যমানতা’কে কৌশলে আক্রমণ করেছেন, তখন তণমূলও পাল্টা জবাব দিয়েছে। দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, ‘‘ইয়েচুরি নিশ্চয়ই জানেন, ১৯৮৮ সালে রাজীব গান্ধীকে হারানোর জন্য জ্যোতি বসু, বিশ্বনাথ প্রতাপ সিংহ ও অটলবিহারী বাজপেয়ী হাতে হাত ধরে সভা করেছিলেন কলকাতার শহিদ মিনার ময়দানে। সে বারই বিজেপি গোটা দেশে দুই থেকে ৮৪ হয়েছিল। আর ২০১৯ সালে সিপিএমের লোকেরাই বিজেপিকে ভোট দিয়ে বাংলায় ওদের বাড়িয়েছে।’’

হাওড়ায় সিপিএম রাজ্য কমিটির বর্ধিত অধিবেশন চলবে রবিবার পর্যন্ত। মূলত কিছু সাংগঠনিক বিষয় এবং লোকসভা ভোটের কৌশল চূড়ান্ত হবে এই বৈঠক থেকে। ইয়েচুরি পুরনো উদাহরণ টেনে বলেন, ‘‘ইন্দিরা গান্ধীকে হারানোর জন্য সবাই যখন এক হচ্ছে, তখন আমরা ছাত্র আন্দোলন করি। আমরা অনেকেই সেই সময়ে ক্ষোভ, বিক্ষোভ দেখিয়েছিলাম। আমাদের ডেকে বিটি রণদিভে বুঝিয়েছিলেন, দিল্লি থেকে একটি গাড়ি যদি আগ্রা যাওয়ার পথে খারাপ হয়, তা হলে তাকে ঠেলতে হবে। আশপাশের লোককে ডাকতে হবে। যারা আসবে, তাদের মধ্যে কি বাছবিচার করা হবে? না কি তখন আশু উদ্দেশ্য হবে গাড়িটাকে ঠেলে নিয়ে যাওয়া?’’

গত জুন মাসে পটনায় বিরোধী দলগুলি প্রথম একসঙ্গে বসেছিল। বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের বাসভবনে সেই বৈঠকের পর বৈঠক হয় বেঙ্গালুরুতে। সেখানেই ঠিক হয়, বিরোধী জোটের নাম হবে ‘ইন্ডিয়া’। তার পর মুম্বইয়ে আরও একটি বৈঠক হয়েছিল। প্রসঙ্গত, জুন মাসের সেই বৈঠকের পর থেকে ইয়েচুরি দলের কোনও কর্মসূচিতেই এ রাজ্যে আসেননি। শুক্রবার এলেন পাঁচ মাস পর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE