Advertisement
E-Paper

অবৈধ খনন থেকে নারী নিগ্রহ, সরব স্মৃতি

দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলে অবৈধ কয়লার কারবার, রাজ্যের শিল্প পরিস্থিতি থেকে সারদা কেলেঙ্কারি বা নারী নিগ্রহ— দুর্গাপুর সভা করতে এসে তৃণমূলের সরকারকে নানা অস্ত্রে বিঁধলেন কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৮ জানুয়ারি ২০১৬ ০০:৪৫
রাজীব গাঁধী ময়দানের জনসভায় স্মৃতি ইরানি। ছবি: বিকাশ মশান।

রাজীব গাঁধী ময়দানের জনসভায় স্মৃতি ইরানি। ছবি: বিকাশ মশান।

দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলে অবৈধ কয়লার কারবার, রাজ্যের শিল্প পরিস্থিতি থেকে সারদা কেলেঙ্কারি বা নারী নিগ্রহ— দুর্গাপুর সভা করতে এসে তৃণমূলের সরকারকে নানা অস্ত্রে বিঁধলেন কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি। বুধবার দুর্গাপুরের জনসভায় ছিলেন পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির রাজ্য সহ-পর্যবেক্ষক সিদ্ধার্থনাথ সিংহ, রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ, রাহুল সিংহ, রূপা গঙ্গোপাধ্যায়েরা।

বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের নিয়ে রাজ্য জুড়ে জানুয়ারি মাসে মোট চারটি জনসভা করার কথা ছিল। বুধবার শেষ সভাটি হয় দুর্গাপুরে। এ দিন চিত্রালয় লাগোয়া রাজীব গাঁধী ময়দানের ওই সভায় দুর্গাপুর ও আশপাশের এলাকা থেকে প্রায় হাজার দশেক কর্মী-সমর্থক জড়ো হয়েছিলেন।

বক্তৃতার শুরুতেই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রাজ্যের নারী নিগ্রহের বিভিন্ন ঘটনা তুলে ধরে তৃণমূলের সরকারকে বিঁধতে শুরু করেন। উঠে আসে বছর চারেক আগে বারাসতে দিদির সম্ভ্রম বাঁচাতে গিয়ে রাজীব দাসের খুনের ঘটনাও। যদিও দিন কয়েক আগেই রাজীব খুনে তিন জনকে যাবজ্জীবনের সাজা শুনিয়েছে বারাসত আদালত। রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়েও তোপ দাগেন স্মৃতি। দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষও রাজ্যে নারী নিগ্রহের বিভিন্ন ঘটনা প্রসঙ্গে সরব হন। সেই সঙ্গে তিনি জানান, রাজ্যে নারী নিগ্রহের প্রতিবাদে ফেব্রুয়ারি মাসে রূপা গঙ্গোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে কামদুনি থেকে কাকদ্বীপ পর্যন্ত প্রায় ১৬০ কিলোমিটার পদযাত্রার আয়োজন করা হবে।

এর পরেই শিল্পাঞ্চলে কয়লার অবৈধ খনন প্রসঙ্গে স্মৃতি প্রশাসনের একাংশ জড়িত বলে অভিযোগ করেন। উপস্থিত কর্মী-সমর্থকদের উদ্দেশে মন্ত্রী বলেন, ‘‘দুর্গাপুরের মানুষ জানেন, কী ভাবে এখানে বেআইনি কয়লা খনন চলছে। কী ভাবে মাফিয়ারা দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। মাফিয়াদের না আটকে রাজ্য সরকার তাদের উৎসাহ দিচ্ছে।’’ নিমচা ফায়ার প্রজেক্ট এলাকা, অন্ডালের পরাশকোল, জামুড়িয়ার কেন্দা প্রভৃতি এলাকায় অবৈধ কয়লার কারবারের অভিযোগ উঠেছে বারবার। এ ছাড়া বিভিন্ন খনি এলাকায় পুনর্বাসন প্রকল্পের জট নিয়েও মন্ত্রী অভিযোগ করেন।

সিদ্ধার্থনাথ সিংহ সারদা কেলেঙ্কারিতে তৃণমূল নেতা-মন্ত্রীদের নাম উঠে আসা নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি। তাঁর কথায়, ‘‘বেআইনি অর্থলগ্নি সংস্থার কর্তাদের প্রশ্রয় দিয়ে গরীব মানুষের টাকা লুঠ চলছে। দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেওয়া হচ্ছে।’’ রাজনৈতিক মহলের মতে, আগামী বিধানসভা নির্বাচনে সংগঠনকে চাঙ্গা করতেই বিজেপির এই সভার আয়োজন। সিদ্ধার্থনাথবাবুও বলেন, ‘‘২০১৬ সাল এসে গিয়েছে। এ বার ‘ভাগ মমতা ভাগ’ হয়েই যাবে।’’

সাম্প্রতিক সময়ে সিঙ্গুরে শিল্প করতে না পারা নিয়ে একাধিকবার সরব হয়েছেন বাম নেতারা। সিল্পের দাবিতে জাঠাও হয়েছে রাজ্য জুড়ে। এ দিনের সভা থেকে রাজ্যে বিজেপির একমাত্র বিধায়ক শমীক ভট্টাচার্যও সিঙ্গুর প্রসঙ্গ তুলে রাজ্য সরকারের ভুল শিল্প-নীতির অভিযোগ করেন। নাম না করে শমীকবাবুর বক্তব্য, ‘‘একজনের অনমনীয় মনোভাবের জন্য সিঙ্গুরের ইচ্ছুক চাষিরা শিল্পে কর্মসংস্থানের সুযোগ পেলেন না। আর অনিচ্ছুক চাষিরা জমিও ফেরত পেলেন না। তাঁদের ২ টাকা কিলোগ্রাম দরে চাল দিয়ে ভিখিরি বানাতে চায় রাজ্য সরকার।’’ সদ্য বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন নেতাজি পরিবারের সদস্য চন্দ্র বসু। এ দিনের সভা থেকে চন্দ্রবাবুর গলায় নেতাজি ফাইল-প্রকাশ প্ররসঙ্গটি উঠে আসে বারবার। তাঁর প্রশ্ন, ‘‘স্বাধীনতার পরে কংগ্রেস সরকার কেন সব নথি গোপন করে রেখেছিল, তা মানুষ জানতে চায়।’’

এ দিনের সভায় যোগ দিতে আসা বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের বাস তৃণমূল আটকে দিয়েছে বলে অভিযোগ করেন বিজেপি নেতারা। বেশ কয়েকটি জায়গায় দলীয় পতাকা খুলে নেওয়ারও অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে দুর্গাপুরের বিধায়ক অপূর্ব মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘মানুষ ওঁদের পাশে নেই। এ সব ফাঁকা বুলি।’’

smritiirani BJP westbengal
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy