Advertisement
১১ মে ২০২৪
জেলায় দ্রুত এলাকা বাছাই
COVID-19

দ্বিতীয় ঢেউ থেকে শিক্ষা, জেলায় জেলায় কন্টেনমেন্ট জোন তৈরির কাজ শুরু করল রাজ্য

মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদীর নির্দেশিকা পাওয়ার পরে বুধবারেই এলাকা বাছাই শুরু করেছে বিভিন্ন জেলা প্রশাসন।

ফাইল চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ জুন ২০২১ ০৫:৩২
Share: Save:

নাস্তানাবুদ করে দিয়েছে অতিমারির দ্বিতীয় ঢেউ। স্বাস্থ্য-বিশেষজ্ঞদের হুঁশিয়ারি, করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের সংক্রমণ-শৃঙ্খল ভাঙতে না-পারলে সম্ভাব্য তৃতীয় তরঙ্গের মোকাবিলা করা মুশকিল। সংক্রমণ আপাতত নিম্নমুখী, কিন্তু উৎকণ্ঠায় রেখেছে প্রাণহানি। এই অবস্থায় তৃতীয় কোভিড যুদ্ধের প্রস্তুতিতে কোনও রকম ফাঁকফোকর রাখতে চাইছে না রাজ্য সরকার। দ্বিতীয় ঢেউয়ের শিক্ষাকে কাজে লাগিয়েই স্থানীয় স্তরে কন্টেনমেন্ট বা মাইক্রো-কন্টেনমেন্ট জ়োন তৈরির কাজ চলছে পুরোদমে। কলকাতার কাছে এবং দূরের জেলা— সর্বত্রই করা হচ্ছে কন্টেনমেন্ট জ়োন।

জেলায় জেলায় কন্টেনমেন্ট বিধি আরোপের ব্যাপারে মঙ্গলবার মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদীর নির্দেশিকা পাওয়ার পরে বুধবারেই এলাকা বাছাই শুরু করেছে বিভিন্ন জেলা প্রশাসন। কোন এলাকায় সংক্রমণের চরিত্র কেমন, তা বুঝে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। বিভিন্ন জেলার কর্তাদের দাবি, চলতি সপ্তাহের মধ্যেই সর্বত্র এই বিধিনিষেধ চালু করা যাবে।

দক্ষিণ ২৪ পরগনার সোনারপুর, বারুইপুর, মহেশতলার কিছু জায়গায় সংক্রমণের গতিপ্রকৃতি বুঝে কন্টেনমেন্ট জ়োন গড়া হয়েছে। ওই জেলার বাকি অংশের ব্যাপারে আজ, বৃহস্পতিবার সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। বিধাননগর কমিশনারেটের লেক টাউন থানা এলাকার বাঙুরের একটি অংশ, বাগুইআটি থানার অধীন কেষ্টপুরে রবীন্দ্রপল্লির একটি অংশ এবং রাজারহাট-বিষ্ণুপুর ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের ভাতেন্ডা এলাকার একটি অংশ কন্টেনমেন্ট জ়োন হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, করোনা আক্রান্তের সংখ্যা অনেকটাই কমেছে। কন্টেনমেন্ট জ়োন করে আরও দ্রুত পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা চলছে। হুগলির শহর এবং গ্রামীণ, দুই এলাকাতেই ৪০-৪৫টি করে কন্টেনমেন্ট জ়োন গড়া হয়েছে। হাওড়ায় কন্টেনমেন্ট জ়োন করা হয়েছে ২২টি এলাকায়। তার মধ্যে চারটি হাওড়া সদরে এবং বাকি সব উলুবেড়িয়া
মহকুমা এলাকায়।

ঝাড়গ্রামে এই মুহূর্তে কন্টেনমেন্ট জ়োন গড়া হচ্ছে না। জেলাশাসক জয়সী দাশগুপ্ত বলেন, ‘‘কয়েকটি জায়গায় ‘হাই রেস্ট্রিকশন জ়োন’ করা হবে। এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়ে ওই সব এলাকায় প্রশাসনের তরফে মাইকে প্রচার চালিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।’’ পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘কোন কোন পাড়ায় সংক্রমণ তুলনায় বেশি, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’ মেদিনীপুরের পুর-প্রশাসক দীনেন রায় বলেন, ‘‘তথ্য খতিয়ে দেখে অতি-সংক্রমণের এলাকা চিহ্নিত করার প্রস্তুতি শুরু হয়েছে।’’ পূর্ব মেদিনীপুরে কন্টেনমেন্ট জ়োন নিয়ে কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজি বলেন, ‘‘জেলার যে-সব এলাকায় সংক্রমণ বেশি, সেগুলি চিহ্নিত করে শুক্রবারের মধ্যে কন্টেনমেন্ট জ়োন করা হবে।’’

অনেক প্রশাসনিক কর্তা জানান, সার্বিক নিয়ন্ত্রণ বিধি, টিকাকরণ এবং স্থানীয় স্তরে কড়া নিয়ন্ত্রণ— এই তিনটি কাজ সমান্তরাল ভাবে চালানো গেলে এক দিকে সংক্রমণের শৃঙ্খল তো ভাঙবেই। সেই সঙ্গে তৃতীয় তরঙ্গের মোকাবিলা করার ক্ষেত্রে তা যথেষ্ট সহায়ক হতে পারে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

COVID-19 Containment Zone
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE