ফাইল চিত্র।
এই দহনকালে অন্তত কয়েকটা দিন উত্তরের হিম-রাজ্যে রেহাই খোঁজেন ভ্রমণার্থীরা। কিন্তু ঠিক এমন সময়েই লখনউ ডিভিশনে নন-ইন্টারলক সিগন্যাল সিস্টেম-এর কাজের জন্য বেশ কয়েক দিন হাওড়া থেকে উত্তরমুখী বেশ কিছু মেল ও এক্সপ্রেস ট্রেন বাতিল করে দিল রেল। বাতিল ট্রেনগুলির মধ্যে রয়েছে উপাসনা, কুম্ভ, হিমগিরি, অমৃতসর এক্সপ্রেস প্রভৃতি। বাতিল হচ্ছে মালদহ থেকে নয়াদিল্লি ফরাক্কা এক্সপ্রেসও।
যাত্রী-স্বাচ্ছন্দ্যের খাতিরেই রেলের পরিকাঠামোর কাজ করতে হবে। কিন্তু গরমের দাপটে এই সময়ে উত্তরের বিভিন্ন জায়গায় যাওয়ার জন্য ভ্রমণার্থীদের ভরসা ওই সব ট্রেনই। কিন্তু আচমকা তিন-চার দিন করে এত গুরুত্বপূর্ণ ট্রেন একসঙ্গে বাতিল করে দেওয়ায় যাত্রীরা
প্রমাদ গুনছেন। তাঁদের প্রশ্ন, জরুরি কাজ করতে হবে ঠিকই, কিন্তু ঠিক এই সময়েই কেন?
রেলকর্তাদের বক্তব্য, ট্রেনের গতি দ্রুততর করার জন্য এই কাজ করতে হবে এবং এখনই করতে হবে। এই কাজ শেষ হয়ে যাওয়ার পরে ওই লাইনে ট্রেনের কিছুটা হলেও গতি ফিরবে। পরিকাঠামো ঠিক রাখতে এই কাজ সেরে ফেলা জরুরি। যাত্রীদের অসুবিধা হলেও তা করতেই হবে।
আরও পড়ুন: সবার প্রিয় উমর খেলাতেও তুখোড়, জুনেই ছিল জন্মদিন
রেল সূত্রের খবর, আপাতত নতুন সিগন্যালের এই কাজের জন্য অমৃতসর এক্সপ্রেস হাওড়া থেকে ১১ এবং ১৭ মে বাতিল করা হচ্ছে। একই কারণে ফিরতি পথে ১৩ এবং ১৯ মে বাতিল থাকবে ওই ট্রেন। হাওড়া থেকে উপাসনা এক্সপ্রেস বাতিল হচ্ছে ১২ এবং ১৬ মে। ফিরতি পথে অমৃতসর থেকে ট্রেনটি বাতিল হবে ১৩ এবং ১৭ মে। কুম্ভ এক্সপ্রেস হাওড়া থেকে বাতিল ১৩, ১৪, ১৫ এবং ১৭ মে। ফিরতি পথে হরিদ্বার থেকে এই ট্রেনটি পাওয়া যাবে না ১৪, ১৫, ১৬ এবং ১৮ মে। হিমগিরি এক্সপ্রেস হাওড়া থেকে বাতিল ১২, ১৩ এবং ১৬ মে। ফিরতি পথে জম্মু থেকে ওই ট্রেন মিলবে না ১৪, ১৫ এবং ১৮ মে। দিল্লিমুখী ফরাক্কা এক্সপ্রেস মালদহ থেকে বাতিল হচ্ছে ১১, ১৩ এবং ১৫ মে। একই ভাবে ফিরতি পথে দিল্লি থেকে ওই ট্রেন মিলবে না ১৩, ১৫ এবং ১৭ মে।
হাওড়া-নয়াদিল্লি রুটে মোগলসরাই থেকে কানপুর পর্যন্ত অতিরিক্ত লাইন না-থাকায় এমনিতে লাইনের ক্ষমতার চেয়ে প্রায় ৫০ শতাংশ বেশি ট্রেনে চলাচল করে। এই বাড়তি ট্রেনের চাপ সামলাতে গিয়ে ভ্রমণসূচি বিপর্যস্ত হয়ে যায় প্রায় প্রতিদিনই। কেননা ট্রেনের পর ট্রেন জড়ো হয়ে ওই লাইনে জট লেগেই থাকে। তার জেরে অবধারিত ভাবে ট্রেন লেটের চক্করে পড়ে জেরবার হতে হয় যাত্রীদের। উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেল থেকে শুরু করে পূর্ব, পূর্ব-মধ্য, পূর্ব উপকূল রেলের দিল্লিমুখী সব ট্রেনই ওই লাইন দিয়ে চলাচল করে। তার উপরে রয়েছে মালগাড়ি। সব মিলিয়ে ট্রেনের জট পাকিয়ে যাচ্ছে। রাজধানী, দুরন্ত, পূর্বা এক্সপ্রেস-সহ প্রায় সব ট্রেনই নিত্যদিন ন্যূনতম চার ঘণ্টা করে দেরিতে চলাচল করছে।
এই অবস্থায় পরিকাঠামোর সার্বিক উন্নতি হলে ট্রেন যে গতি পাবে এবং জট যে অনেকটা কাটবে, যাত্রীরাও তা জানেন। কিন্তু নন-ইন্টারলক সিস্টেম ওই লাইনের যাত্রীদের কতটা যন্ত্রণা কমাবে, সেটা নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না কেউই। সর্বোপরি গরমে পর্যটকদের দুর্ভোগে ফেলে এখনই এই কাজ কেন, সেই প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy