বুধবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার উড়ান ছিল কলকাতা থেকে। দুই-আড়াই ঘণ্টার মধ্যে পৌঁছে যাওয়ার কথা ছিল দিল্লি। তবে স্পাইসজেটের সেই উড়ানে উল্টোডাঙার বাসিন্দা অভিজিৎ ঘোষ দিল্লি পৌঁছলেন বৃহস্পতিবার সকাল পৌনে এগারোটায়। ১৭ ঘণ্টা ১৫ মিনিট পরে!
অভিজিতের কথায়, ‘‘সরাসরি উড়ানে এই সময়ে তো প্রায় সান ফ্রান্সিসকো পৌঁছে যেতাম!’’
ওই উড়ানেই দিল্লি যাচ্ছিলেন কলকাতার দুই অসুস্থ বাসিন্দা শচীদুলাল দাস (৭৭) ও তাঁর স্ত্রী মমতা দাস (৭০)। দু’জনেই হুইল চেয়ারে ছিলেন। দিল্লি বিমানবন্দরে ছেলে শমিতের গাড়িতে ওঠা পর্যন্ত ২০ ঘণ্টা তাঁরা হুইল চেয়ারে বা বিমানের আসনেই বসেছিলেন। শচীদুলালবাবু বলেন, ‘‘এই যন্ত্রণা ভাষায় প্রকাশ করা যায় না।’’
কেন এই দেরি? কলকাতা বিমানবন্দর সূত্রে খবর, বুধবার ঠিক সময়ে কলকাতা থেকে ১৫০ জন যাত্রী নিয়ে উড়েছিল বিমানটি। দিল্লির আকাশে পৌঁছনোর পরেই বিপত্তি। এক ঘণ্টা আকাশে চক্করের পরে পাইলট ঘোষণা করেন, আবহাওয়া প্রতিকূল বলে নামতে দেরি হচ্ছে। জ্বালানি ফুরিয়ে আসছে। বাধ্য হয়ে জয়পুর যাচ্ছেন তিনি। রাত ১১টা নাগাদ বিমানটি জয়পুরে নামে। জ্বালানি ভরে ৪৫ মিনিট পরে বিমানটি দিল্লির দিকে রওনা হয়। ৪০ মিনিটে দিল্লির আকাশে পৌঁছতেই ফের সমস্যা।
অভিজিৎ ছিলেন জানলার ধারে। তাঁর কথায়, ‘‘দেখলাম বিমানটি দিল্লিতে প্রায় মাটির কাছে এসেও ফের উপরে উঠে গেল। পাইলট আর কিছু ঘোষণা করলেন না। রাত একটার পরে আবার জয়পুরে নামল বিমান।’’ অন্য যাত্রীরা নামার প্রায় এক ঘণ্টা পরে নামিয়ে আনা হয় শচীদুলাল-সহ তিন জন হুইল চেয়ার যাত্রীকে। অভিজিৎ বলেন, ‘‘রাত তিনটে পর্যন্ত জয়পুরে অপেক্ষার পরে ফের বিমানে উঠতে বলা হয়।’’ এর পরেই তিন নম্বর ধাক্কা। বলা হয়, যে পাইলট ও বিমানসেবিকাদের ডিউটির সময় পেরিয়ে গিয়েছে। সারা রাত জয়পুর বিমানবন্দরে হুইল চেয়ারে বসে থাকেন শচীদুলালবাবুরা।
স্পাইসজেট সূত্রে খবর, খারাপ আবহাওয়ার জন্যই দিল্লিতে দু’বার নামা যায়নি। জয়পুরে একসঙ্গে ১৬টি উড়ান চলে গিয়েছিল বলে দ্বিতীয় বার সেখানে পৌঁছনোর পরে হুইল চেয়ার পাওয়া যাচ্ছিল না। তাই, শচীদুলালবাবুদের নামিয়ে আনতে সময় লাগে। জয়পুরে অতিরিক্ত পাইলট বা বিমানসেবিকা থাকেন না, তাই বৃহস্পতিবার সকালে দিল্লি থেকে পাইলট ও বিমানসেবিকারা অন্য উড়ানে জয়পুর পৌঁছে আটকে পড়া যাত্রীদের দিল্লি নিয়ে আসেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy