‘ঘটি-বাঙালের যুদ্ধে’র দিন এগিয়ে আসতেই শহরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা সুনিশ্চিত করতে তৎপর হচ্ছে শিলিগুড়ি পুলিশ। সনি-কাতসুমি বা প্লাজা-ওয়েডসনেরা যখন কাঞ্চনজঙ্ঘার সবুজ ঘাসে বল কাড়ার লড়াইয়ে যখন ব্যস্ত থাকবেন তখন পুলিশ থাকবে সজাগ। স্টেডিয়ামের ভিতরে তো বটেই আশপাশের এলাকাও যাতে স্বাভাবিক থাকে তা নিশ্চিত করতে চায় তারা।
ভিড় নিয়ন্ত্রণ থেকে গোলমাল এড়াতে, প্রতিদিনই আগামী রবিবারের ডার্বির প্রস্তুতিতে বৈঠক করছে পুলিশ। আজ, বৃহস্পতিবারও ইস্টবেঙ্গল কর্মকর্তাদের সঙ্গে নিরাপত্তা নিয়ে আলোচনা করবেন কর্তারা। শিলিগুড়ি ইস্টবেঙ্গলের হোম গ্রাউন্ড হওয়ায় ম্যাচের উদ্যোক্তাও। শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার চেলিং সিমিক লেপচা বলেন, ‘‘ডার্বি ম্যাচ উত্তেজনায় ভরপুর থাকবে। মাঠের রেশ কোনও ভাবেই যাতে বাইরে না আসে, সে দিকেও নজর রাখা হবে। আমরা সব রকম প্রস্তুতি নিচ্ছি।’’
পুলিশ সূত্রের খবর, প্রথম সতর্কতা হিসাবে মোহনবাগান-ইস্টবেঙ্গলের গ্যালারি পুরোপুরি আলাদা করা হচ্ছে। যা গতবার অনেকটা চেষ্টা করা হলেও পুরোপুরি করা সম্ভব হয়নি। স্টেডিয়ামের চারদিকে ৬টি অস্থায়ী চেকগেট-ড্রপগেট হচ্ছে। গ্যালারিতে কম করে ১৫০ উপর পুলিশ কর্মী এবং স্টেডিয়ামের বাইরে ২০০ পুলিশ কর্মী থাকবেন। চারদিকের গ্যালারির দায়িত্ব ইন্সপেক্টর, এসিপি, ডিসি-দের টিমের মধ্যে করে দেওয়া হচ্ছে। স্পেশাল ব্রাঞ্চের অফিসার, কর্মীরা সাদা পোশাকে প্রতিটি গ্যালারিতে দর্শক আসনে বসেই নজরদারি করবেন।
গেট দিয়ে মাঠে ঢোকার আগে পরীক্ষা ছাড়াও গ্যালারি থেকে কোনও জিনিস মাঠের ভিতর ছোড়া হলেও অভিযুক্তকে সঙ্গে সঙ্গে ধরার কথা বলা হয়েছে। নইলে, তা সংক্রামক রোগের মত ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা থাকে। স্টেডিয়ামের পাশেই থাকা ডিসি (পূর্ব) অফিসে কন্ট্রোল রুম খোলা হচ্ছে। তেমনই, কোনও অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে রাখা হচ্ছে কমব্যাট ফোর্স, র্যাফ এবং জল কামানও। ইতিমধ্যে অতিরিক্ত পুলিশ কর্মীদের জন্য কলকাতায় আবেদন করা হয়েছে। ম্যাচের একদিন আগে জেলা লাগোয়া কোচবিহার, জলপাইগুড়ি, উত্তর দিনাজপুর থেকে তা আসতে পারে।
দু’দলের সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনার পারদ চড়লেই গ্যালারি তেতে উঠে। এতেই গোলমাল ছড়ায়। সল্টলেক স্টেডিয়ামের অতীতের অভিজ্ঞতা তাই বলছে। তাই ম্যাচ শেষের পর অন্তত ২ ঘণ্টা স্টেডিয়াম লাগোয়া এলাকায় বিশেষ নজরদারি থাকবে। ফেরার সময়ও অনেকক্ষেত্রে সমস্যা তৈরির ইতিহাস রয়েছে। স্থানীয়েরা ছাড়াও ডার্বিতে কলকাতা-সহ গোটা দক্ষিণবঙ্গ ক্লাবগুলির সদস্য, সমর্থকেরা আসে। অন্তত ২৫ হাজার লোক হবে, সেই হিসাবে প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। স্টেডিয়ামের আশপাশে রাস্তাতেও গাড়ি ও অত্যুৎসাহী সমর্থকদের নিয়ন্ত্রণ করবে পুলিশ।
প্রায় ৩০ হাজার দর্শক আসনের স্টেডিয়ামে টিকিট দেওযা হবে ২৭ হাজারের মত। এরমধ্য ইস্টবেঙ্গল সদস্য, সমর্কদের জন্য নিয়েছে ১০ হাজারের মত টিকিট। মোহনবাগান হাজার ছয়েক টিকিট চেয়েছে। বাকি টিকিট কাউন্টার থেকে সাধারণ বাসিন্দাদের জন্য বিক্রি হবে। কিন্তু গত বছরের ডার্বিতে একদলের বেশি সমর্থক থাকা স্টেডিয়ামের গ্যালারি আরেকদল ঢুকে পড়তেই গালাগালি, তেড়ে আসার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। পরে পুলিশ তাদের অন্য গ্যালারিতে সরানোর ব্যবস্থা করে। এবার সেটা প্রথম থেকেই আলাদা রাখার ব্যবস্থা থাকবে। শিলিগুড়ি মহকুমা ক্রীড়া পরিষদের সচিব অরূপরতন ঘোষ বলেন, ‘‘ডার্বি মানেই মাঠের যুদ্ধ। তাই পুলিশকে আমরা বলেছি, পুরোদস্তুর নিরাপত্তা-নজরদারি বজায় রাখতে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy