প্রতীকী ছবি।
ডেঙ্গি মোকাবিলায় পুরসভাগুলো ভাল কাজ করেছে, পঞ্চায়েত ঠিক ততটা করেনি। সোমবার নদিয়ায় গিয়ে এ কথা বলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রীর ‘মূল্যায়নে’র পর ‘আসল’ তথ্য হাতড়ানো ছেড়ে আপাতত ডেঙ্গি মোকাবিলায় পঞ্চায়েত দফতরকে নামার নির্দেশ দিয়েছেন দফতরের মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়। মঙ্গলবার সুব্রতবাবু বলেন, ‘‘ডেঙ্গি মোকাবিলার মূল কাজ স্বাস্থ্য দফতরের। তবে মুখ্যমন্ত্রী যখন চেয়েছেন তখন ডেঙ্গি দমনেও আমরা নামব। অফিসারদের বলে দিয়েছি, এখন শয়নে-স্বপনে শুধু ডেঙ্গি-ডেঙ্গি করুন। আশা করি, এতেই কাজ হবে।’’
যদিও পঞ্চায়েত কর্তারা জানাচ্ছেন, গত বছরও ডেঙ্গি সচেতনতা অভিযানে নামা হয়েছিল। পঞ্চায়েত তার কাজ করেছে। গ্রাম বাংলা আর শহরের জনসংখ্যা এবং সেই অনুপাতে গত বছর কত জন শহরে ও গ্রামে ডেঙ্গিতে মারা গিয়েছেন, তার হিসাব কষলেই কারা ভাল কাজ করেছে তা স্পষ্ট হয়ে যাবে। পঞ্চায়েত কর্তাদের দাবি, কেন্দ্রীয় সরকার ডেঙ্গি সচেতনতায় রাজ্যকে প্রতি বছর টাকা পাঠায়। সেই টাকায় পুরসভাগুলি অস্থায়ী কর্মী রেখে প্রচার চালায় বা ধোঁয়া দেয়, তেল ছড়ায়। ১০০ দিনের প্রকল্পের টাকায় সেই কাজ করানোর ব্যাপারে নবান্ন গত বছর প্রস্তাব দেয়। কিন্তু ১০০ দিনের টাকায় ডেঙ্গি প্রচারের কাজ করা সম্ভব নয়। ফলে পঞ্চায়েত আলাদা করে কর্মী রাখতে পারেনি। এ বার অবশ্য ডেঙ্গি প্রচারে আরও জোর দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন কর্তারা।
নবান্নের বক্তব্য, পঞ্চায়েত দফতর কোনওভাবেই ডেঙ্গির মতো জনস্বাস্থ্যের বিষয়ে দায়িত্ব এড়াতে পারে না। কারণ, গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরে স্বাস্থ্য উপসমিতি, পঞ্চায়েত সমিতি ও জেলা পরিষদ স্তরে স্বাস্থ্য স্থায়ী সমিতির হাতেই এলাকার জনস্বাস্থ্যের নজরদারির ভার রয়েছে। ডাক্তার এবং স্বাস্থ্য আধিকারিকেরা পঞ্চায়েতের স্বাস্থ্য উপ বা স্থায়ী সমিতির সদস্য হিসাবেই কাজ করে থাকে। মুখ্যমন্ত্রী পঞ্চায়েতের সেই দায়িত্বের কথায় স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন মাত্র। নবান্নের এক শীর্ষ কর্তার বক্তব্য, ‘‘বেশ কয়েকটি নির্মল-জেলা ঘোষণা হয়েছে। নির্মল জেলা মানে তো স্বচ্ছ, আবর্জনামুক্ত পরিবেশ। সেখানে ডেঙ্গি হচ্ছে কী ভাবে? পঞ্চায়েতগুলি শৌচালয় বা নর্দমা নির্মাণে যতটা উৎসাহী, তার যথাযথ ব্যবহারে নয়। সমস্যা সেখানেই।’’
মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পর আর সে সব বিতর্কে পড়তে চান না পঞ্চায়েতমন্ত্রী। তাঁর সাফ কথা, ‘‘গ্রামে একজনও যাতে ডেঙ্গি আক্রান্ত না হন সেই চেষ্টা করতে হবে। প্রতিটি পঞ্চায়েতকেই নামতে হবে। মনে রাখতে হবে, সামনে ভোট। ডেঙ্গি এবার পঞ্চায়েত সদস্যদের ভোটেও হানা দিতে পারে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy