Advertisement
E-Paper

নাগরিকদের স্বাস্থ্যরক্ষা, সংশয়ী সুদীপ

উন্নয়ন প্রকল্প রূপায়ণে কাজের তৎপরতা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন কলকাতা উত্তরের সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়।

অনুপ চট্টোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ০৩ নভেম্বর ২০১৬ ০১:৩৯

উন্নয়ন প্রকল্প রূপায়ণে কাজের তৎপরতা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন কলকাতা উত্তরের সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার কলকাতা পুরসভায় জাতীয় স্বাস্থ্য মিশন প্রকল্পের সফল প্রয়োগ নিয়ে এক বৈঠক হয়। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সরকার কলকাতা শহরে ওই প্রকল্প রূপায়ণের জন্য সিটি লেভেল ভিজিল্যান্স অ্যান্ড মনিটরিং কমিটি গড়েছে। মূল কাজ হল, শহরবাসীর স্বাস্থ্য সুরক্ষার দিকে নজর দেওয়া। ওই কমিটির চেয়ারম্যান সুদীপবাবু। এ দিনই ওই কমিটির প্রথম বৈঠক হয় পুরসভায়। সেখানেই সুদীপবাবু বলেন, ‘‘কাজ শুরু হয় ভাল ভাবে, কিন্তু ফিনিশিংটা হয় না।’’ কলকাতার মতো শহরে বাসিন্দাদের স্বাস্থ্য সুরক্ষিত রাখার কাজটা যে অত্যন্ত কঠিন, তা মেনে নিয়েছেন তিনি। তবু ম্যালেরিয়া এবং ডেঙ্গিতে আক্রান্তের সংখ্যা যাতে বাড়তে না পারে, তার জন্য তিনি আরও সতর্ক হতে বলেছেন পুর প্রশাসনকে।

পুরসভা সূত্রের খবর, কলকাতা-সহ দেশের ৭টি বড় শহর নয়া দিল্লি, মুম্বই, চেন্নাই, বেঙ্গালুরু, হায়দরাবাদ এবং আমদাবাদ শহরে জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের প্রকল্প হাতে নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। প্রতিটি শহরেই গড়ে তোলা হয়েছে মনিটরিং কমিটি। এ দিন কমিটির প্রথম বৈঠক থাকলেও ইতিমধ্যেই কলকাতা পুরসভা জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের কাজ শুরু করে দিয়েছে। তবে সেই কাজ কতটা এগিয়েছে, তা যাচাই করতেই এই বৈঠক বলে পুরসভা সূত্রের খবর। সেখানে পুরসভার স্বাস্থ্য দফতরের মেয়র পারিষদ অতীন ঘোষ-সহ কলকাতার পাঁচ জন বিধায়কও ছিলেন।

বৈঠকে জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের নানা পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা হলেও বক্তাদের কথায়, শহরের ডেঙ্গি পরিস্থিতির প্রসঙ্গও উঠে এসেছে। সে ব্যাপারে কাউন্সিলরদের ভূমিকা নিয়ে সমালোচনার কথা শোনা গিয়েছে একাধিক বিধায়কের মুখে। পুরসভা সূত্রের খবর, এন্টালির বিধায়ক স্বর্ণকমল সাহা পরিষ্কার জানিয়ে দেন মশাবাহী রোগ নিবারণে কাউন্সিলরদের আরও বেশি করে নজর দিতে হবে। পুরসভার স্বাস্থ্য দফতরের কর্মীরা প্রতিদিন ঠিক ভাবে কাজ করছেন কি না, তা যাচাই করার দায়িত্ব কাউন্সিলরদের থাকা উচিত। আর এক বিধায়ক খালেক মোল্লা তো বলেই দেন, সংযোজিত কলকাতার নিকাশি ব্যবস্থা ভাল নয়। যা থেকে মশাবাহী রোগের প্রকোপ বাড়ছে। মেটিয়াবুরুজ, গার্ডেনরিচ এলাকায় জঞ্জাল অপসারণ এবং নিকাশি ব্যবস্থায় পুরকর্মীদের আরও সক্রিয় ভূমিকা নেওয়া প্রয়োজন বলে দাবি তাঁর।

পুরসভার এক আমলার কথায়, ‘‘এটা ঠিক, মশাবাহী রোগ নিবারণে কাউন্সিলরদের তৎপরতা সবচেয়ে আগে দরকার। রোজের রুটিন মেনে স্বাস্থ্য দফতর কাজ করছে কি না, একটু সক্রিয় হলেই কাউন্সিলর তা জানতে পারেন। কিন্তু তা হয় না বলেই কোনও কোনও ওয়ার্ডে মশাবাহী রোগের প্রকোপ বাড়ছে।’’ তাঁর অভিযোগ, বিল্ডিং নির্মাণ, হকার বসানো বা প্রোমোটারি কারবারে কাউন্সিলরেরা যতটা সময় দেন, স্বাস্থ্য পরিষেবা নিয়ে ততটা আগ্রহ নেই বলেই মশাবাহী রোগ দমনে গাফিলতি থেকে যাচ্ছে।

এই অভিযোগ যে মিথ্যা নয়, তা ফুটে উঠেছে অতীনবাবুর কথাতেও। বলেছেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে বছর তিনেক ধরে প্রতি জানুয়ারি মাস থেকে মশাবাহিত রোগ নিয়ন্ত্রণে নানা প্রকল্প হাতে নেওয়া হচ্ছে। কাউন্সিলরদের নিয়ে বার কয়েক সচেতনতা বৈঠকও করা হয়েছে। তবে তাতে কাউন্সিলরদের উপস্থিতি আশানুরূপ নয়। কোনও বরোয় ১২ জন কাউন্সিলরের মধ্যে মাত্র দু’জন যোগ দিয়েছেন এই কাজে, কোথাও ১০ জনের মধ্যে মাত্র তিন জন হাজির ছিলেন। তাঁর বক্তব্যে এও উঠে এসেছে, স্বাস্থ্যকর্মীদের কোথায় কী করছেন, সব ওয়ার্ডের কাউন্সিলরেরা একটু নজরদারি করলেই অনেকটা কাজ হতে পারে।

এ দিনই বৈঠকে স্থির হয়েছে, আগামী বছর ৮ জানুয়ারি রবিবার মশাবাহী রোগ নিবারণে শহরের প্রতিটি ওয়ার্ডে মিছিল করবেন কাউন্সিলরেরা। জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের প্রকল্প হিসেবে সে দিন শহরের বিভিন্ন স্থানে প্রচার ও সভা করবে পুর প্রশাসন। ডেঙ্গি ও ম্যালেরিয়া রোগ নিবারণে শহরবাসীকে সচেতন করতেই ছুটির দিনে ওই কর্মসূচি নেওয়া হচ্ছে বলে পুরসভা সূত্রের খবর।

Sudip Bandyopadhyay health project
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy