প্রমোদ দাশগুপ্ত স্মারক বক্তৃতায় সূর্যকান্ত মিশ্র। সোমবার। — নিজস্ব চিত্র
তৃণমূলের মোকাবিলায় একজোট হয়ে লড়াইয়ের দাবি ক্রমেই জোরালো হচ্ছে। পরিস্থিতি বুঝে এ বার জোট বাঁধার দরজা খুলতে শুরু করল সিপিএম। ছয় ও সাতের দশকে যুক্তফ্রন্ট তথা যুক্তমঞ্চ গড়ার কারিগর প্রমোদ দাশগুপ্তের জন্মদিনেই তেমন ইঙ্গিত দিলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র। সরাসরি দলের পরিচয় এড়িয়ে সব দল থেকে ধর্মনিরপেক্ষ ও গণতান্ত্রিক মানুষকে একজোট করে বুথ স্তরে লড়াই শুরু করার কথা বললেন তিনি।
প্রমোদ দাশগুপ্ত স্মারক বক্তৃতায় সূর্যবাবু সোমবার পরিষ্কার বুঝিয়ে দিয়েছেন, স্বৈরতান্ত্রিক শক্তির মোকাবিলায় গণতান্ত্রিক সব মানুষকে এক জায়গায় এনে লড়াই চালাতে হবে। এই প্রসঙ্গেই অতীতের উদাহরণ ব্যাখ্যা করেছেন সিপিএমের এই পলিটব্যুরো সদস্য। সাতের দশকে জরুরি অবস্থার পরে ইন্দিরা গাঁধীর শাসনের অবসান ঘটাতে এমন কিছু দলের সঙ্গে বামেরা এক মঞ্চে গিয়েছিল, যাদের সঙ্গে বামপন্থী নীতি ও আদর্শের মিল ছিল না। সূর্যবাবুর কথায়, ‘‘তখনও প্রশ্ন উঠেছিল, আমরা কি একাই লড়ব? আবার অন্য একটা মত ছিল, এই ধরনের দলগুলির সঙ্গে কোনও সম্পর্কই রাখা চলবে না! দু’দিকেই দু’টো সম্পূর্ণ বিপরীত মেরু!’’ সেই সময়ে জয়প্রকাশ নারায়ণের মতো নেতার জন্যই যে যৌথ মঞ্চে যাওয়া সম্ভব হয়েছিল, তা-ও উল্লেখ করেছেন তিনি। এবং সেই সঙ্গেই বুঝিয়ে দিয়েছেন, এখনও আবার পশ্চিমবঙ্গে সেই রকম টানাপড়েনের মুখে বামেরা!
এই টানাপড়েন কাটিয়ে এগোনোর পথও কিছুটা বাতলে দিয়েছেন সূর্যবাবু। বলেছেন, ‘‘ভিন্ন রাজনীতি, ভিন্ন মতাদর্শের সঙ্গে মিশে না গিয়ে স্বাতন্ত্র্য বজায় রেখেই কী ভাবে যুক্ত মঞ্চ গড়ে কাজ করতে হয়, সেটা প্রমোদবাবুই শিখিয়ে গিয়েছেন।’’ প্রয়াত জ্যোতি বসুর মত মেনে কংগ্রেসকে যে তাঁরা সাম্প্রদায়িক দল বলে মনে করেন না, সূর্যবাবু জানিয়েছেন সে কথাও। কিন্তু দল হিসাবে কংগ্রেসের হাত ধরতে গেলে এই মুহূর্তে বাম শিবিরেই ভাঙন ধরতে পারে। তাই সূর্যবাবুর আহ্বান, ‘‘কলকাতায় বসে দু-চারটে কনভেনশনে কী হল, তা দিয়ে কিছু হবে না। আপনার এলাকায় কারা স্বৈরতন্ত্রের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে পারেন, কে ধর্মনিরপেক্ষ, তাঁদের নিয়ে সমবেত ভাবে বুথ স্তর থেকে লড়াই শুরু করুন। দরকারে তাঁদের জন্য চেয়ার ছেড়ে দিন।’’ এই যৌথ মঞ্চের দরজাই ভবিষ্যতে পথের সন্ধান দিতে পারে বলে সিপিএম সূত্রের ব্যাখ্যা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy