Advertisement
E-Paper

একের জন্য ছাড়ব না অন্যকে, কৌশল সূর্যের

কংগ্রেসের হাত ধরে থাকতে গিয়ে বামফ্রন্ট ভাঙা যাবে না। আবার বাম শরিকদের জেদে কংগ্রেসের সঙ্গে সম্পর্ক একেবারে ছেদ করে ফেলা হবে না। দলের কেন্দ্রীয় কমিটির ফরমানের পরে আপাতত এই দু’কূল রক্ষার কৌশলই নিল আলিমুদ্দিন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৪ জুন ২০১৬ ১০:০২
সূর্যকান্ত মিশ্র। ফাইল চিত্র।

সূর্যকান্ত মিশ্র। ফাইল চিত্র।

কংগ্রেসের হাত ধরে থাকতে গিয়ে বামফ্রন্ট ভাঙা যাবে না। আবার বাম শরিকদের জেদে কংগ্রেসের সঙ্গে সম্পর্ক একেবারে ছেদ করে ফেলা হবে না। দলের কেন্দ্রীয় কমিটির ফরমানের পরে আপাতত এই দু’কূল রক্ষার কৌশলই নিল আলিমুদ্দিন।

রাজ্যে কংগ্রেসের সঙ্গে নির্বাচনী সমঝোতা বিগত পার্টি কংগ্রেস এবং তার পরেও গৃহীত দলের রাজনৈতিক লাইনের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয় বলে রায় দিয়েছে সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটি। সেই বিবৃতিকে হাতিয়ার করে এক দিকে যেমন তৃণমূল লাগাতার বিরোধী জোটকে আক্রমণ শুরু করেছে, তেমনই সুর চড়াচ্ছে বাম শরিকেরাও। ঘরে-বাইরে আক্রমণের মুখে পড়ে বৃহস্পতিবার সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র স্পষ্ট করে দিয়েছেন, ‘‘আমরা সবাইকে নিয়ে একসঙ্গে চলতে চাই। কোনও ভুল বোঝাবুঝি যেন না থাকে। অনেকে থাকলে তাদের কথা মাথায় রেখেই একসঙ্গে এগোতে হয়।’’

দু’দিক রেখে চলার কৌশলের জন্যই কাল, শনিবার কংগ্রেসের মিছিলে যোগদান নিয়ে ফের ভাবনাচিন্তা শুরু করেছেন সূর্যবাবুরা। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে ওই মিছিলে অংশ নেওয়ার জন্য সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যবাবু এবং বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তীকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে কংগ্রেস। দলের কাজে সূর্যবাবু এবং সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি দু’দিন ওড়িশায় ব্যস্ত থাকবেন। সূর্যবাবু কলকাতায় ফিরবেন রবিবার। তিনি শহরে না থাকলেও কংগ্রেসের মিছিলে পরিষদীয় দলের প্রতিনিধি পাঠাতে যে কোনও আপত্তি নেই, সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলী তা স্পষ্ট করে দিয়েছে। কিন্তু তিন বাম শরিক আরএসপি, ফরওয়ার্ড ব্লক এবং সিপিআই জানিয়ে দিয়েছে, তারা মিছিলে যেতে রাজি নয়। এই পরিস্থিতিতে এ দিন সূর্যবাবুর বক্তব্য, ‘‘বামফ্রন্ট না গেলে আমরা (সিপিএম) কী করে যাব? আবার আলোচনা করে ঠিক করতে হবে।’’ সুজনবাবুও শরিক দলের পরিষদীয় নেতাদের সঙ্গে ফের কথা বলবেন।

দিল্লিতে কেন্দ্রীয় কমিটির বিবৃতিকে সামনে রেখে প্রচার শুরু হয়েছে, বাংলায় জোটের মৃত্যুঘণ্টা বাজিয়ে দিয়েছেন প্রকাশ কারাটেরা! সেই সংশয় দূর করতেই সূর্যবাবু এ দিন বলেছেন, ‘‘কেন্দ্রীয় কমিটির সিদ্ধান্ত সারা দেশের পার্টিকেই মানতে হবে। নির্বাচনী জোট নিয়ে তারা যা বলেছে, সেটা নির্বাচনেই দেখা যাবে। আন্দোলন কী হবে, সেটাও তো তারা বলে দিয়েছে। লড়াইয়ের ময়দানে মানুষের জোটকে চ্যালেঞ্জ নিতে হবে। আক্রান্ত মানুষের পাশে ঐক্যবদ্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে পরীক্ষা দিতে হবে।’’ সূর্যবাবুর ব্যাখ্যা, সন্ত্রাসের প্রতিবাদ বা গণতন্ত্র রক্ষার মতো বিষয়ে কংগ্রেসের সঙ্গে আন্দোলন করাই যায়। অন্য যে সব প্রশ্নে বামফ্রন্টের মধ্যেই যৌথ আন্দোলন নিয়ে মতবিরোধ আছে, সেখানে আলাদা কর্মসূচিই হবে।

কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য জগমতী সঙ্গওয়ানের বিদ্রোহের পরে এ রাজ্যেও লোকাল ও জোনাল কমিটি স্তরের কিছু নেতা দল থেকে ইস্তফা দিয়েছেন। সূর্যবাবু ব্যাখ্যা করেছেন, নিয়ম মেনে দল চাইলে পদত্যাগ গ্রহণ করতে পারে বা বহিষ্কার করতে পারে। সংশ্লিষ্ট কমিটির নেতারা বিদ্রোহীদের সঙ্গে কথা বলে তাঁদের মনোভাব বোঝার চেষ্টা করবেন। আর বাম শরিক ফ ব-র সাধারণ সম্পাদক দেবব্রত বিশ্বাস বুধবার যে ভাবে সিপিএমকে জোট-প্রশ্নে আক্রমণ করেছেন, তার জবাবে সূর্যবাবুর কৌশলী বার্তা, ‘‘কোনও শরিক দলের সম্পর্কে প্রকাশ্যে কিছু বলি না। এটা সৌজন্যও বটে! যা আলোচনা করার, বামফ্রন্টেই করব।’’

Suryakanta Mishra CPM Congress
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy