Advertisement
E-Paper

শিক্ষায় হস্তক্ষেপ নিয়ে সরব স্বপন

প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য গড়া মেন্টর গ্রুপের সদস্য তিনি। ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশিষ্ট অধ্যাপক বা ডিস্টিংগুইশ্ড প্রফেসর-ও। সেই স্বপন চক্রবর্তীই এ বার সরব হলেন শিক্ষাক্ষেত্রে সরকারি নিয়ন্ত্রণের বিরুদ্ধে। শুক্রবার একটি বেসরকারি বিজনেস স্কুলের সমাবর্তনে জাতীয় গ্রন্থাগারের এই প্রাক্তন ডিরেক্টর জেনারেল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে সরকারের দূরত্ব বজায় রাখার পক্ষে সওয়াল করলেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩০ মে ২০১৫ ০৩:১৩
স্বপন চক্রবর্তী

স্বপন চক্রবর্তী

প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য গড়া মেন্টর গ্রুপের সদস্য তিনি। ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশিষ্ট অধ্যাপক বা ডিস্টিংগুইশ্ড প্রফেসর-ও। সেই স্বপন চক্রবর্তীই এ বার সরব হলেন শিক্ষাক্ষেত্রে সরকারি নিয়ন্ত্রণের বিরুদ্ধে। শুক্রবার একটি বেসরকারি বিজনেস স্কুলের সমাবর্তনে জাতীয় গ্রন্থাগারের এই প্রাক্তন ডিরেক্টর জেনারেল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে সরকারের দূরত্ব বজায় রাখার পক্ষে সওয়াল করলেন।

কী বলেছেন এ দিন স্বপনবাবু?

তাঁর কথায়, ‘‘শিক্ষাকে ক্ষমতার অলিন্দ থেকে দূরে রাখতে হবে।নইলে তা সাম্য ও সামাজিক ন্যায়ের পরিপন্থী হয়ে উঠবে। শিক্ষাক্ষেত্রকে নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা সরকার জন্মসূত্রে লাভও করে না, উপার্জনও করে না।’’

কয়েক সপ্তাহ আগেই কিন্তু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিকে নিয়ন্ত্রণ করার অধিকার সরকারের আছে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন খোদ শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। রাজ্য সরকারি কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা রাজ্য সরকারের বেতনভুক। অতএব তাঁদের নিয়ন্ত্রণ সরকার করতেই পারে বলে মন্তব্য করেছিলেন পার্থবাবু। তাঁর সেই মন্তব্য নিয়ে বিস্তর জলঘোলা হয়েছে। কিন্তু তাতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির উপরে সরকারি নিয়ন্ত্রণে ছেদ পড়েনি। উচ্চশিক্ষা দফতরেরই খবর, মূলত সরকারের ইচ্ছেতেই সম্প্রতি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের দায়িত্ব পেয়েছেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুরঞ্জন দাস। এই পরিস্থিতিতে স্বপনবাবু সরকারি নিয়ন্ত্রণের সমালোচনা করে সরাসরি পার্থবাবুকেই বিঁধেছেন বলে অনেকে মনে করছেন।

স্বপনবাবু নিজে অবশ্য পরে বলেন, ‘‘আমি কোনও দল বা ব্যক্তিকে নিশানা করিনি। আমার বক্তব্য রাষ্ট্রযন্ত্রের বিরুদ্ধে।’’

শিক্ষাবিদ হিসেবে স্বপনবাবু কোনও দিনই কোনও রাজনৈতিক রং নিজের গায়ে লাগতে দেননি। এ দিনের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে তিনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে আচমকা শিক্ষকদের বদলি করে দেওয়ারও নিন্দা করেছেন। দিন দুয়েক আগে প্রেসিডেন্সিরই দুই অভিজ্ঞ শিক্ষককে আচমকা বদলি করেছে সরকার। এর জেরে বিশ্ববিদ্যালয়ে পঠনপাঠন, স্নাতক স্তরে ছাত্র ভর্তির কাজ ধাক্কা খাবে বলে আশঙ্কা। অনেকেই মনে করছেন, বদলির প্রসঙ্গ টেনে স্বপনবাবু তাঁর বর্তমান কর্মস্থল প্রেসিডেন্সির দুই শিক্ষককে অন্যত্র পাঠিয়ে দেওয়ার নিন্দাই করেছেন।

শিক্ষামন্ত্রী পার্থবাবু অবশ্য স্বপনবাবুর এই বক্তব্যের প্রেক্ষিতে কিছু বলতে চাননি। তাঁর কথায়, ‘‘উনি কোন প্রেক্ষাপটে কী বলেছেন, তা না জেনে কিছু বলতে চাই না।’’

প্রাক্তন উচ্চশিক্ষা মন্ত্রী সুদর্শন রায়চৌধুরী অবশ্য দাবি করছেন, ‘‘স্কলারশিপ দেওয়া, সংরক্ষণ চালু, স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে সকলের পঠনপাঠনের সুযোগ করা সরকারের কর্তব্য। কিন্তু তার সঙ্গে সরকারি অনুপ্রবেশ বা নিয়ন্ত্রণকে গুলিয়ে ফেললে চলবে না। অর্থ দেওয়ার অজুহাতে বর্তমান শিক্ষামন্ত্রী যে ভাবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হস্তক্ষেপ করবেন বলেছেন, সেটা তো কোনও অবস্থাতেই মেনে নেওয়া যায় না।’’ উচ্চশিক্ষা দফতরের কর্তাদের অবশ্য ব্যাখ্যা, সব দেশের সব সময়ের সরকারই স্বাস্থ্য ও শিক্ষাক্ষেত্রকে হাতে রাখে। কারণ, মানবসম্পদ গড়া ও তাকে সুস্থ রাখার দায় সরকারেরই। আর তাঁরা এও মনে করিয়ে দিচ্ছেন, সুদর্শনবাবুর বামফ্রন্ট সরকারও শিক্ষাক্ষেত্রে হস্তক্ষেপকে প্রাতিষ্ঠানিক চেহারা দিয়েছিল। তবে বিরোধীদের দাবি, বাম জমানার অনিলায়নকে চার বছরেই টপকে যাওয়ার উপক্রম করেছে পরিবর্তনের সরকার।

Swapan Chakraborty presidency university partha chattopadhyay trinamool tmc mamata bandopadhyay
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy