Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Manik Bhattacharya

ল কলেজ প্রিন্সিপালকে বলুন হাই কোর্টে যেতে! মানিককে থামিয়ে বিচারক বললেন তাঁর আইনজীবীকে

নিয়োগ দুর্নীতিতে অভিযুক্ত পলাশীপাড়ার বিধায়ক আগের দিনও আদালতকে বলেছিলেন, ‘‘হয় জামিন দিন, নয়তো এমন ব্যবস্থা করুন, যাতে পরের দিন আর ঘুম না ভাঙে।’’

মঙ্গলবার নগর দায়রা আদালতে মানিকের জামিনের আর্জির শুনানি ছিল।

মঙ্গলবার নগর দায়রা আদালতে মানিকের জামিনের আর্জির শুনানি ছিল। ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ মার্চ ২০২৩ ১৮:৫৮
Share: Save:

জামিন মামলায় বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্য নিজে মুখে কিছু বলতে চেয়েছিলেন বিচারককে। কিন্তু তাঁকে থামিয়ে আদালতের তরফে বলা হল, আইনজীবী তো যা বলার বলেছেন। তা হলে আপনার আর নতুন করে কী বলার আছে? এটা তো আদালতের ডেকোরাম। আর আইন কলেজের এক কালের অধ্যক্ষ মানিকের এই নিয়ম না জানার কথা নয়।

মঙ্গলবার নগর দায়রা আদালতে মানিকের জামিনের আর্জির শুনানি ছিল। নিয়োগ দুর্নীতিতে অভিযুক্ত পলাশীপাড়ার বিধায়ক, আগের দিনও আদালতকে বলেছিলেন, হয় জামিন দিন, নয়তো এমন ব্যবস্থা করুন, যাতে পরের দিন আর ঘুম না ভাঙে। অবশ্য তার পরও মানিকের জামিনের আর্জি মঞ্জুর হয়নি। মঙ্গলবার আবার তাঁকে তোলা হয় নগর দায়রা আদালতে। মানিকের জামিনের আর্জি জানিয়ে তাঁর আইনজীবী বিচারককে বলেন, ‘‘আমার মক্কেল কিছু বলতে চান।’’

মানিকের আইনজীবীর আবেদন শুনে বিচারক বলেন— ‘‘আমরা সবাই আইনের ছাত্র। শুনেছি উনি আইনের কলেজের প্রিন্সিপাল ছিলেন। আইনজীবী ওঁর কথা বলেছেন। আর ওঁর নতুন কী বলার আছে? ওঁর তো কোর্টের ডেকোরাম জানা উচিত।’’

বিচারকের কথা শেষ হতেই মানিক— আমি সংবিধানের ২১ নম্বর ধারা প্রয়োগের প্রস্তাব দিতে চাই। আমি ৫০০০ পাতা পড়েছি...

বিচারক— হাই কোর্টে যান। এখানে নয়। আমি কি আপনাকে বলার অনুমতি দিয়েছি?

মানিক— আমি শুধু একটিই কথা বলতে চাই।

সরকারি কৌঁসুলি— আমি বিরোধিতা করছি।

ইডির আইনজীবী— ক্ষমতার দুর্নীতি। পুরোপুরি ক্ষমতার দুর্নীতি। উনি একজন রাজনৈতিক দলের নেতা। রাজনৈতিক ইনফ্লুয়েন্স আছে। এতটাই প্রভাবশালী যে এখনও পার্টি থেকে বহিস্কার করা হয়নি।

মানিকের এক দাদার প্রসঙ্গ টেনে এনে এর পর ইডির আইনজীবী বলেন, ‘‘ওঁর একজন ভাই আছেন। হীরালাল ভট্টাচার্য। মানিকের যে সমস্ত অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করা হয়েছে, তার মধ্যে ওই দাদার নামও আছে। এ ব্যাপারে ওঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে উনি বলেন, আমার দুর্ভাগ্য যে আমি মানিক ভট্টাচার্যের দাদা।’’

মানিকের জামিনের বিরোধিতা করে ইডির আইনজীবী বলেন, ‘‘একজন ব্যক্তির উচিত তাঁর স্ত্রী ও ছেলেকে রক্ষা করা। ওঁর জন্য ওঁর স্ত্রী এবং ছেলে জেলে রয়েছেন। আমি জামিনের আবেদনের বিরোধিতা করছি।’’

এর জবাবে বিচারক মানিকের আইনজীবীকে বলেন, ‘‘আপনার ল কলেজের প্রিন্সিপালকে বলে দিন, আর্টিকল ২১ এর জন্য হাই কোর্টে যেতে।’’ উল্লেখ্য, সংবিধানের ২১ নম্বর ধারায় বলা হয় , সব নাগরিকেরই নিজের জীবন রক্ষা করা এবং ব্যক্তিগত স্বাধীনতা রক্ষার অধিকার আছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE