Advertisement
১২ মে ২০২৪
TET Protest

কামড়ে দিয়ে পুলিশ হাসপাতালে, আর কামড় খাওয়া চাকরিপ্রার্থী হাজতে! প্রশ্ন তুলে উত্তাল কোর্ট

বুধবারের বিক্ষোভের ঘটনায় অরুণিমা-সহ মোট ৩০ জন গ্রেফতার হন। শুনানিতে আন্দোলনকারীদের পক্ষের আইনজীবীরা প্রশ্ন তোলেন, পুলিশ যাঁদের হেফাজতে নিতে চাইছেন, তাঁরা কি মাওবাদী?

কামড়ে দেওয়ার দৃশ্য।

কামড়ে দেওয়ার দৃশ্য।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ নভেম্বর ২০২২ ১৯:৩২
Share: Save:

বিক্ষোভ দেখানো এক চাকরিপ্রার্থীকে বুধবার কামড়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল পুলিশের বিরুদ্ধে। ওই চাকরিপ্রার্থীকে অন্যদের সঙ্গে বুধবার গ্রেফতার করা হয়। বৃহস্পতিবার তাঁদের ব্যাঙ্কশাল আদালতে হাজির করিয়ে নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার আবেদন করে পুলিশ। আর গোটা বিষয় নিয়ে উত্তাল হয়ে ওঠে আদালত কক্ষ।

অরুণিমা পাল নামে এক চাকরিপ্রার্থী বুধবার অভিযোগ করেন, তাঁর হাতে কামড়ে দিয়েছেন মহিলা পুলিশকর্মী। পুলিশ সেই অভিযোগ স্বীকার করে নিয়ে দাবি করে, অভিযুক্ত মহিলা পুলিশকর্মীর হাতেও কামড়ানো হয়েছে। বুধবারের বিক্ষোভের ঘটনায় অরুণিমা-সহ মোট ৩০ জন চাকরিপ্রার্থীকে গ্রেফতার করা হয়। সেই মামলার শুনানিতে আন্দোলনকারীদের পক্ষের আইনজীবীরা প্রশ্ন তোলেন, পুলিশ যাঁদের হেফাজতে নিতে চাইছেন, তাঁরা কি মাওবাদী? সরকারি আইনজীবীর পাল্টা যুক্তি, শান্তিপূর্ণ অবস্থান বিক্ষোভে পুলিশের কোনও অসুবিধে নেই। কিন্তু বিক্ষোভ দেখাতে গিয়ে আন্দোলনকারী চাকরিপ্রার্থীরা আক্রমণাত্মক হয়ে উঠেছিলেন বলেই পুলিশ তাঁদের আটকেছে।

শুনানি চলাকালীন চাকরিপ্রার্থীদের আইনজীবী ইয়াসিন রহমান এবং অমিত হালদারের কটাক্ষ, পুলিশ যাঁকে কামড়েছে, তিনি লক আপে। অথচ, যিনি কামড়েছেন, তিনি হাসপাতালে ভর্তি। ইয়াসিন প্রশ্ন তোলেন, ‘‘সরকার চাকরি দিতে পারছে না। দুর্নীতি করে সকলে জেলে রয়েছেন। তার পরেও পুলিশ বলছে, চাকরিপ্রার্থীদের সংগঠনকে খুঁজে বার করতে হবে? চাকরিপ্রার্থীরা কি মাওবাদী? কোন যুক্তিতে তাঁদের পুলিশ হেফাজত চাওয়া হচ্ছে? চাকরিপ্রার্থীদের পুলিশ হেফাজত দেওয়া হলে সমাজের প্রতি অবিচার হবে।’’

সরকারের পাল্টা দাবি, আন্দোলন করার অধিকার সকলের আছে। কিন্তু, বুধবার চাকরিপ্রার্থীদের আন্দোলন আক্রমণাত্মক হয়ে উঠেছিল। সিসিটিভি ফুটেজেই তা স্পষ্ট। পুলিশ হেফাজতের পক্ষে যুক্তি দেখিয়ে সরকারি আইনজীবী অভিজিৎ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আন্দোলন হিংসাত্মক হয়ে উঠেছিল বলেই পুলিশকে তা নিয়ন্ত্রণ করতে হয়েছে। পুলিশের যা কর্তব্য, পুলিশ তা-ই করেছে। শিক্ষকেরা শিক্ষকদের মতো আচরণ করবেন, এটাই স্বাভাবিক। এতে আমাদের কোনও আপত্তি নেই। কিন্তু নিয়মভঙ্গ হয়েছে।’’

পুলিশের এই দাবি অবশ্য মানতে রাজি নন চাকরিপ্রার্থীরা। তাঁদের আইনজীবীর বক্তব্য, আন্দোলনকারীরা হিংসাত্মক হয়ে উঠলে, তাঁদের হাতে লাঠি থাকত। তাঁদের কাছ থেকে কি সে রকম কোনও লাঠি পাওয়া গিয়েছে? অমিত বলেন, ‘‘কামড়াচ্ছে তো পুলিশ! রক্ষকই ভক্ষক হয়ে গিয়েছে। চাকরিপ্রার্থীদের আন্দোলন শান্তিপূর্ণই ছিল। পুলিশই আক্রমণাত্মক হয়ে লাঠিচার্জ করেছে। চাকরিপ্রার্থীরা আক্রান্ত হয়েছেন। আমরা তাঁদের জামিনের আবেদন করছি।’’

সওয়াল-জবাব শেষে সিজেএম আদালতের বিচারক শৌনক মুখোপাধ্যায় ধৃতদের জামিন মঞ্জুর করেছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

TET Protest
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE