বিকাশ ভট্টাচার্য (বাঁ দিকে) ও প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ দফতরের সামনে আন্দোলনকারীরা (ডান দিকে)। ফাইল চিত্র।
টেট মামলায় সুপ্রিম কোর্টের জোড়া স্থগিতাদেশকে জোড়া ধাক্কা হিসাবে দেখছেন না আইনজীবী বিকাশ ভট্টাচার্য। টেট নিয়ে আন্দোলনকারীদের হয়ে কলকাতা হাই কোর্টে মামলা লড়ছে বিকাশ। মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর তিনি জানিয়েছেন রায় যথেষ্ট ইতিবাচক। এমনকি টেটের আন্দোলনকারীরাও সুপ্রিম কোর্টের উপরেই ভরসা রেখে জানিয়েছেন, তাঁদের বিশ্বাস সুপ্রিম কোর্টের দেরিতে হলেও সুবিচার আসবেই।
একদিনে জোড়া স্থগিতাদেশ এসেছে টেট মামলায়! রাজ্যে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগের দুর্নীতির মামলায় মূল অভিযুক্তের অপসারণে স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে স্থগিতাদেশ এসেছে, বেআইনি ভাবে চাকরি পাওয়া ২৬৯ জন প্রার্থীকে বরখাস্ত করা, মানিকের সম্পত্তির হিসাব চাওয়ার নির্দেশেও। দেশের শীর্ষ আদালতের এই রায়কে জোড়া ধাক্কা বলেই মনে করছিলেন অনেকে। কিন্তু টেটের আন্দোলনকারী চাকরিপ্রার্থীদের আইনজীবী বিকাশের মতে, এই রায়ে অখুশি হওয়ার কোনও কারণ দেখছেন না তিনি। বরং তিনি খুশিই। কারণ সুপ্রিম কোর্ট টেট মামলায় সিবিআই তদন্তে স্থগিতাদেশ দেয়নি। বরং সিবিআইকে তদন্ত চালিয়ে যেতে বলেছে। এমনকি, সিবিআইকে এ ব্যাপারে তদন্তের অগ্রগতির রিপোর্টও দিতে বলেছে চার সপ্তাহের মধ্য়ে। যা যথেষ্ট ইতিবাচক বলে মনে করছেন তিনি।
এ দিকে সোমবার থেকে টেট আন্দোলনকারীদের একাংশ আমরণ অনশনে বসেছে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের দফতরের বাইরে আমরণ অনশনে বসেছে। সুপ্রিম কোর্টের রায়ের ব্যাপারে তাঁদের প্রশ্ন করা হলে তাঁরা বলেছে, ‘‘দুর্নীতি যে হয়েছে, তা ইতিমধ্যেই মেনে নিয়েছে কলকাতা হাই কোর্ট। সুপ্রিম কোর্টে হয়তো বিষয়টি প্রমাণ হতে সময় লাগছে। কিন্তু আমাদের বিশ্বাস খুব শীঘ্রই যা সত্যি, তা প্রকাশ্যে আসবে। দেরি হলেও সুপ্রিম কোর্টে সুবিচার এবং ন্যায় পেতে অসুবিধা হবে না।’’
শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের একক বেঞ্চের নির্দেশে টেট মামলায় তদন্ত শুরু করেছিল সিবিআই। তাঁর নির্দেশেই পরে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি পদ থেকে সরানো হয় বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্যকে। বেআইনি ভাবে চাকরি পাওয়ার অভিযোগে বরখাস্ত করা হয় ২৬৯ জন টেট পরীক্ষার্থীর চাকরিও। এমনকি মানিককে তাঁর এবং তাঁর পরিবারের সম্পত্তির হিসাবও হলফনামার আকারে জমা দিতে বলা হয় হাই কোর্টে। মানিক এই রায়কে চ্যালেঞ্জ করেই মামলা করেন সুপ্রিম কোর্টে। যার শুনানিতে মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্ট সিবিআই তদন্তে স্থগিতাদেশ না দিলেও মানিকের অপসারণ এবং ২৬৯ জনের চাকরি বরখাস্তের নির্দেশে আপাতত স্থগিতাদেশ দিয়েছে।
এ ব্যাপারেই প্রশ্ন করা হয়েছিল আন্দোলনকারী টেট চাকরিপ্রার্থীদের। ২৬৯ জনের চাকরি ফিরে পাওয়া প্রসঙ্গে এক আন্দোলনকারী বলেন, ‘‘ওঁদের বেআইনি ভাবে একনম্বর বাড়িয়ে চাকরি দেওয়া হয়েছে। আর ভুল প্রশ্নের জন্য যে ৬ নম্বর পাওয়ার কথা ছিল, তা আমাদের মতো পাশ করারা পাইনি। আশা করি সুপ্রিম কোর্ট সেই বিষয়গুলি দেখবে।’’ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি পদ থেকে মানিকের অপসারণে স্থগিতাদেশ প্রসঙ্গে আরেক আন্দোলনকারী বলেন, ‘‘যিনি এই সবের মূলে তাঁকে যদি তাঁর পদ ফিরিয়ে দেওয়া হয়, তবে জনতা তা দেখবেন। তবে আমাদের আশা সুপ্রিম কোর্টে শেষপর্যন্ত সুবিচারই পাব আমরা।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy