তিনি মনে করছেন, গলার চেনটা ছিঁড়ে গেল। তবে বকলসটা এখনও আটকে আছে। বুধবার দুপুরে কাঁথির বাড়ি থেকে আনন্দবাজার ডিজিটালকে তেমনই বললেন শিশির অধিকারী। তার কিছু ক্ষণ আগেই তাঁকে পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা সভাপতি পদ থেকে সরিয়ে সৌমেন মহাপাত্রকে সেই পদে বসানো হয়েছে। এখন তিনি কী ভাবছেন? মঙ্গলবার কলকাতার হাসপাতালে চোখের ছানি কাটিয়ে কাঁথির বাড়িতে ফেরা প্রবীণ সাংসদ হাসতে হাসতে বললেন, ‘‘২০০৬ সাল থেকে আমি কংগ্রেসের জেলা সভাপতি। পরে তৃণমূলে যোগ দিয়েছি। এটা ২০২১ সাল। এতদূর তো আমিই টেনে নিয়ে এলাম!’’
তার পর সেই হাসি ধরে রেখেই বলেছেন, ‘‘সিপিএম আমায় টিপ করে বোমা ছুড়েছে। আমি বেলের মতো লুফে নিয়েছি। আমি সেই লোক! আবার সিপিএমের ছোড়া বোমা লুফতে গিয়ে হাত ঝলসে গিয়েছে। তেমনও হয়েছে। কিন্তু আমি নিজের মতো করে জেলায় ঘুরে ঘুরে সংগঠনটা করেছি। তখন পরিবারকেও সময় দিতে পারিনি। দিদিমণি যা নির্দেশ দিয়েছেন, মাথা পেতে পালন করেছি। এখন সরিয়ে দিলে দেবে! আমার কাউকে কিছু বলার নেই।’’
শিশিরের যে ডানা ছাঁটা হচ্ছে, তার ইঙ্গিত মিলেছিল মঙ্গলবারেই, যখন তাঁকে সরিয়ে দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান করা হয়েছিল রামনগরের বিধায়ক অখিল গিরিকে। জেলার রাজনীতিতে অধিকারী-গিরির সম্পর্ক অহি-নকুলের। ফলে বার্তা স্পষ্ট ছিল। সেই বার্তাই স্পষ্টতর হল বুধবার যখন তাঁকে জেলার কর্তৃত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হল। শিশিরকে জেলা কমিটির চেয়ারম্যান পদে এখনও রেখে দেওয়া হয়েছে বটে। কিন্তু ওই পদ তৃণমূলের অন্দরে নেহাতই ‘আলঙ্কারিক’। সব ক্ষমতা সভাপতিরই। ফলে নাম কা ওয়াস্তে শিশিরকে রেখে দেওয়া হল কমিটির ক্ষমতাহীন সদস্য করে। একেই কি ‘বকলস’ বলছেন অশীতিপর রাজনীতিক? প্রশ্ন করায় আবার হেসেছেন কাঁথির অধিকারী পরিবারের কর্তা।