Advertisement
E-Paper

সিঙ্গুরে এখনই জমির দখল সরাসরি চাষিদের হাতে তুলে দিচ্ছে না সরকার

ক্ষতিপূরণের টাকা মিলেছে, হাতে পরচা এসেছে, প্রকল্প এলাকার ভিতরে কোথাও আল দিয়ে, কোথাও ফিতে ফেলে জমি চিহ্নিত করার কাজও অনেকটাই সারা। শীর্ষ আদালতের রায় ঘোষণার দু’সপ্তাহের মধ্যে এত দূর কাজ এগিয়েও এখনই জমির দখল (ফিজিক্যাল পজেশন) সরাসরি চাষিদের হাতে তুলে দিচ্ছে না রাজ্য সরকার। ভাঙা হচ্ছে না টাটাদের পরিত্যক্ত কারখানার পাঁচিলও।

ফিতে ফেলে চিহ্নিত করা হচ্ছে জমি। — নিজস্ব চিত্র

ফিতে ফেলে চিহ্নিত করা হচ্ছে জমি। — নিজস্ব চিত্র

জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৪:০১
Share
Save

ক্ষতিপূরণের টাকা মিলেছে, হাতে পরচা এসেছে, প্রকল্প এলাকার ভিতরে কোথাও আল দিয়ে, কোথাও ফিতে ফেলে জমি চিহ্নিত করার কাজও অনেকটাই সারা। শীর্ষ আদালতের রায় ঘোষণার দু’সপ্তাহের মধ্যে এত দূর কাজ এগিয়েও এখনই জমির দখল (ফিজিক্যাল পজেশন) সরাসরি চাষিদের হাতে তুলে দিচ্ছে না রাজ্য সরকার। ভাঙা হচ্ছে না টাটাদের পরিত্যক্ত কারখানার পাঁচিলও। সবটাই থাকবে পুলিশি পাহারায়।

বুধবারই সিঙ্গুরে ‘বিজয় উৎসব’ পালন করে চাষিদের হাতে আনুষ্ঠানিক ভাবে জমির পরচা তুলে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি নিজেই জানিয়েছেন, ৯ হাজারের বেশি পরচা তৈরির কাজ শেষ। যার অর্থ, ওই চাষিদের জমির মালিকানা নির্দিষ্ট হয়ে গিয়েছে এবং খাতায়কলমে এখন তাঁরাই ওই জমির মালিক। হুগলি জেলা প্রশাসনও নবান্নের কাছে জানতে চেয়েছে, পরচা হাতে পাওয়া চাষিদের জমির দখল কবে দেওয়া হবে? নবান্ন থেকে এই প্রশ্নের উত্তর মেলেনি। আর নবান্নের অনুমতি না মেলা পর্যন্ত মালিকদের জমির দখলও দিতে চাইছে না জেলা প্রশাসন।

নবান্নের এহেন অবস্থানের কারণ কী? রাজ্যের প্রশাসনিক কর্তাদের একাংশ বলছেন, মূল সমস্যা ন্যানো কারখানার শেড। ওই শেডের মালিক টাটারা। কিন্তু সেটা সরানোর ব্যাপারে তারা কোনও উচ্চবাচ্য করছে না। এই অবস্থায় তাদের কিছুটা সময় দিতে চান মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু সেই সময়সীমা পেরিয়ে যাওয়ার পরেও যদি তারা শেড না-সরায় তা হলে কী করা হবে— তা-ও এখনও চূড়ান্ত হয়নি। রাজ্য নিজে থেকে ওই শেড ভেঙে দিলে কোনও আইনি সমস্যা হবে কিনা, তা আগে বুঝে নিতে চাইছে সরকার। আর শেড না-ভাঙা পর্যন্ত তার তলায় থাকা জমির মালিকানা নির্ধারণ করা যাচ্ছে না। জেলা প্রশাসনের একটি সূত্র বলছে, ৯৯৭.১১ একর জমির পুরোটারই মালিকানা নির্দিষ্ট করার আগে কোনও একটি অংশে জমির দখল দেওয়া কঠিন। কারণ, সে ক্ষেত্রে পরে মাপজোকে কোনও গলদ ধরা পড়লে তা সংশোধন করার ক্ষেত্রে জটিলতা দেখা দিতে পারে। তাই শেড (এবং টাটাদের করা রাস্তা) সরানো নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে অন্য অংশের জমির পরচা পাওয়া চাষিদের জমির দখল দিতে চাইছে না রাজ্য। নবান্নের এক শীর্ষকর্তার কথায়, ‘‘সরকার জমি চাষযোগ্য করে দেবে বলে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন। তাই হাতে পরচা পেলেও এখনই চাষিদের মাঠে নামার প্রয়োজন নেই। ঠিক সময়ে সেটা হবে। প্রশাসনের উপর আস্থা রাখুন চাষিরা।’’

সর্বোচ্চ আদালতের রায় ঘোষণার পর জমি ফেরাতে গত পনেরো দিনে প্রায় ৮০০ কর্মী রাত-দিন কাজ করছেন সিঙ্গুরে। প্রশাসনের দাবি, ইতিমধ্যে ৬২৩ একর জমির মালিকানা নির্দিষ্ট করে ফেলা হয়েছে। ১০০ একর জমিতে আল দেওয়ার কাজও শেষ। বাকি ৫২৩ একর জমি আলাদা করে ফিতে দিয়ে চিহ্নিত করে রাখা হয়েছে। বৃহস্পতিবার জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, ‘‘১০০ দিনের কাজে নিযুক্ত শ্রমিকদের কাজে লাগিয়ে আল তৈরির কাজ শুরু হয়েছিল। কিন্তু প্রবল বৃষ্টিতে তা ভেঙে যাওয়ায় ফিতে দিয়ে চিহ্নিত করা হয়েছে।’’ অবশিষ্ট ৩৫০ একরের কিছু বেশি জমিতে টাটাদের কারখানার শেড, গড়ে ২৫ মিটার চওড়া প্রায় ২০ কিলোমিটার রাস্তা, কৃত্রিম জলাশয়, নর্দমা-নয়ানজুলি রয়েছে। এই জমিই চিহ্নিত করার কাজ এখনও শুরু হয়নি।

বুধবার সিঙ্গুরে সমাবেশ করে পরচার পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী প্রায় ৩৫০ জন ‘অনিচ্ছুক’ চাষির হাতে চেক তুলে দিয়েছেন। জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, এ দিন সন্ধ্যা পর্যন্ত ৬২৩ জন জমি-মালিকের হাতে ক্ষতিপূরণের ৮০৬টি চেক তুলে দেওয়া হয়েছে। টাকার অঙ্কে যা চার কোটির মতো। এ দিন ক্ষতিপূরণ চেয়ে নতুন করে আবেদন করেছেন আরও ১৬০ জন। প্রশাসনের এক কর্তা জানান, সর্বোচ্চ আদালতের রায়ে অনিচ্ছুকদের ক্ষতিপূরণ দিতে বলা হয়েছে। কিন্তু অনন্তকাল ধরে তাঁদের খুঁজবে না সরকার। ইতিমধ্যে ২২২১ জন অনিচ্ছুক চাষিকে নোটিস পাঠানো হয়েছে, যাঁদের হাতে রয়েছে ২৪৪ একর জমি।

সহ প্রতিবেদন: গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়

lands Hand over farmers govt singur

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে আপনার সাবস্ক্রিপশন আপনাআপনি রিনিউ হয়ে যাবে

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।