Advertisement
E-Paper

রোগী দেখছেন সাফাইকর্মী

প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি উপর নির্ভরশীল ২৫টি গ্রামের প্রায় হাজার কুড়ি বাসিন্দা। দিনভর লেগে থাকে রোগীর ভিড়। কিন্তু চার মাস ধরে চিকিৎসক নেই।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০১ মার্চ ২০১৬ ০২:৩২
রোগীর প্রেসার মাপছেন সাফাইকর্মী। নিজস্ব চিত্র।

রোগীর প্রেসার মাপছেন সাফাইকর্মী। নিজস্ব চিত্র।

প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি উপর নির্ভরশীল ২৫টি গ্রামের প্রায় হাজার কুড়ি বাসিন্দা। দিনভর লেগে থাকে রোগীর ভিড়। কিন্তু চার মাস ধরে চিকিৎসক নেই। অভিযোগ, রোগী দেখছেন স্বাস্থকেন্দ্রের ফার্মাসিস্ট, নার্স, চতুর্থ শ্রেণির কর্মী থেকে অস্থায়ী সাফাই কর্মী— সকলেই। বিপাকে পড়ে রোগীরাও তাঁদেরই দেখাতে ছুটছেন। এমনই হাল কাটোয়া ২ ব্লকের অগ্রদ্বীপ প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে।

গাজিপুর, অগ্রদ্বীপ ও পূর্বস্থলী ২ ব্লকের পিলা অ়ঞ্চলের প্রায় ২৫টি গ্রামের ভরসা এই স্বাস্থ্যকেন্দ্র। জানা গিয়েছে, চিকিৎসক থাকাকালীন বহির্বিভাগে ফি দিন তিনশো থেকে সাড়ে তিনশো রোগী আসতেন। কিন্তু চার মাস ধরে চিকিৎসক না থাকায় বহু রোগীকেই ফিরে যেতে হচ্ছে। চিকিৎসকের জায়গায় বহির্বিভাগে রোগী দেখছেন হাসপাতালের কর্মীরা। ফার্মাসিস্ট থাকলে তিনিই প্রেসক্রিপশন করেন। তিনি কোনও কারণে ছুটি নিলে দায়িত্ব এসে পড়ে নার্স ও সাফাইকর্মীর উপরে।

নার্স পিয়ালী মণ্ডল জানান, এখন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এক জন ফার্মাসিস্ট, দু’জন নার্স, দু’জন চতুর্থ শ্রেণির কর্মী ও এক জন অস্থায়ী সাফাই কর্মী রয়েছেন। স্বাস্থ্যকেন্দ্রে দু’বেলা ভাগাভাগি করে ‘ডিউটি’ করেন তাঁরা। তিনি জানান, এখন রোগীর সংখ্যা অনেকটাই কমে গিয়েছে। তবু প্রতিদিন ৭০-৮০ জন রোগীর প্রাথমিক চিকিৎসা করতে হয় তাঁদের। চিকিৎসক নেই, এ কথা জানানোর পরেও বহু মানুষ চিকিৎসার জন্য আসেন এখানে। রোগীর প্রতি দায়বদ্ধতার কারণে তাঁরাও ফেরাতে পারেন। যতটা সম্ভব হয়, পরিষেবা দেওয়ার চেষ্টা করেন। হাসপাতালের অস্থায়ী সাফাইকর্মী শম্ভু হাজরা জানান, চিকিৎসক নেই বেশ কিছুদিন। কিন্তু কোনও মানুষ গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় এলে প্রাথমিক চিকিৎসাটুকু তো তাঁদের করতেই হয়। ওই অবস্থায় রোগীকে ফিরিয়ে দিতে পারেন না তাঁরা।

অগ্রদ্বীপ ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক পরাণ দত্ত জানান, বার বার আবেদন করে চিকিৎসক পেলেও কোনও বারই বেশি দিন স্থায়ী হন না তিনি। বহু দিন ধরেই এই সমস্যা চলছে বলে তাঁর দাবি। স্থানীয় হামিদপুর গ্রামের বাসিন্দা রফি শেখ, নাজাই বিবিরাও জানান, স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসক নেই জেনেও তাঁরা আসেন। আশেপাশে কোনও চিকিৎসাকেন্দ্র না থাকায় অন্য কোনও উপায়ও নেই। দিন দু’য়েক আগে নতুন গ্রামের বাসিন্দা শ্যামলী দাস এসেছিলেন চিকিৎসা করতে। তিনি জানান, পা কেটে যাওয়ায় আগের দিন সেলাই করাতে এসেছিলেন। আজ এসেছেন সেলাই কাটতে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, অধিকাংশ সময়ে ডাক্তার থাকে না। এলাকায় বেশ কয়েকটি হোমিওপ্যাথি ও অ্যালোপ্যাথির চিকিৎসকের কাছে বেশি টাকা দিয়ে চিকিৎসা করাতে বাধ্য হন তাঁরা। না হলে ছুটতে হয় ১৮ কিলোমিটার দূরের কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে। স্বাস্থ্যকেন্দ্রের নিজস্ব অ্যাম্বুল্যান্সও নেই বলে জানান তিনি। কাটোয়া ২ ব্লকের পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি নরেশ মণ্ডলের দাবি, অগ্রদ্বীপ স্বাস্থ্য কেন্দ্রে চিকিৎসক নিযুক্ত করার জন্য বহু বার আবেদন করেছি। কিন্তু চিকিৎসক এলেও কিছু দিন পরেই তাঁরা বদলি বা ছুটিতে চলে যান।

কাটোয়া মহকুমা সহ-মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক কবিতা শাসমল জানান, মহকুমা জুড়ে শূন্য পদগুলি পূরণের জন্য নভেম্বর ও ডিসেম্বরে মোট তিন বার আবেদন করা হয়েছে। শীঘ্রই চিকিৎসক পাওয়া যাবে বলে আশ্বাসও দেওয়া হয়েছে।

তাঁতযন্ত্র বিলি। একশো জন তাঁতশিল্পীকে তাঁত যন্ত্র দেওয়া হল সোমবার। তাঁতসাথী প্রকল্পে রাজ্য সরকারের ক্ষুদ্র ও মাঝারি তাঁত ও বস্ত্র দফতরের উদ্যোগে কাটোয়ার ঘোষহাটে ওই অনুষ্ঠানে ছিলেন বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়। তিনিই শিল্পাদের হাতে তাঁতযন্ত্র তুলে দেন। মহকুমা হস্তচালিত তাঁত উন্নয়ন আধিকারিক কৌশিক হালদার জানান, এ দিন তাঁত যন্ত্র নেই এমন ১০০ জনকে তাঁত যন্ত্র দেওয়া হয়েছে।

hospital doctor without doctor
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy