Advertisement
১৮ মে ২০২৪

জমি না থাকলেও মিলবে বাড়ি, মত হাইকোর্টের

হাওড়া আদালতে আইনজীবীদের নিগ্রহের জেরে কর্মবিরতি চলায় মামলাটির শুনানি হচ্ছিল না। শুক্রবার মামলাটি ওঠে বিচারপতি বসাকের আদালতে।

জমি না থাকলেও সরকারি প্রকল্পে বাড়ি পাওয়ার যোগ্য, মত কলকাতা হাইকোর্টের।

জমি না থাকলেও সরকারি প্রকল্পে বাড়ি পাওয়ার যোগ্য, মত কলকাতা হাইকোর্টের।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ জুন ২০১৯ ০০:২৯
Share: Save:

দারিদ্র সীমার নিচে থাকা কোনও নাগরিকের জমি না থাকলে প্রধানমন্ত্রী গ্রামীণ আবাস যোজনার আওতায় বাড়ি পাওয়ার অধিকার তাঁর আরও বেড়ে যায়। এমনই পর্যবেক্ষণ কলকাতা হাইকোর্টের।

ওই প্রকল্পে বাড়ি না পেয়ে প্রতিবন্ধী এক মহিলা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। বিচারপতি দেবাংশু বসাক ১৪ জুন জয়নগর ১ নম্বর বিডিও-কে নির্দেশ দিয়েছেন, অবিলম্বে মহিলার আবেদন বিবেচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে।

সরস্বতী মণ্ডল নামে বছর ষাটেকের ওই মহিলা জয়নগর ১ নম্বর ব্লকের জানাগালিয়া পঞ্চয়েতের বাসিন্দা। তাঁর আইনজীবী ইন্দ্রজিৎ রায়চৌধুরী সোমবার জানান, মহিলার স্বামী কয়েক বছর আগে মারা গিয়েছেন। তাঁর এক পালিত সন্তান রয়েছে। সেই সন্তানও প্রতিবন্ধী। গ্রামের এক চায়ের দোকানে সকাল-বিকেল জল সরবরাহ করে সামান্য কিছু রোজগার করেন। অন্য সময়ে বছর কুড়ির পালিত সন্তানকে নিয়ে ভিক্ষা করেন মহিলা।

আইনজীবী জানান, সরস্বতীর এক ভাসুর তাঁকে ও তাঁর ছেলেকে নিজের বাড়িতে আশ্রয় দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী গ্রামীণ আবাস যোজনায় পাকা বাড়ি মিলতে পারে জেনে ওই মহিলা বিডিও অফিসে গত বছর একাধিকবার যোগাযোগ করেন। ওই মহিলার দাবি, ওই অফিসের লোকজন তাঁকে জানিয়ে দেন, নিজের জমি না থাকলে ওই প্রকল্পে পাকা বাড়ি তাঁর মিলবে না। মহিলা এর পরে পঞ্চায়েতে যোগাযোগ করেন। সেখান থেকেও তাঁকে একই কথা বলা হয়।

এই পরিস্থিতিতে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করে বিষয়টি তাদের বিস্তারিত জানান ওই মহিলা। সংস্থার লোকজন মহিলার হয়ে রাজ্য ও কেন্দ্রীয় স্তরের উচ্চ পদস্থ অফিসারদের চিঠি লিখে বাড়ির জন্য আবেদন জানান। আবেদন জানানো হয় দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলাশাসক, জয়নগর ১ বিডিও-র কাছেও। তাতেও কাজ না হওয়ায় স্বেচ্ছাসেবী ওই সংস্থার সাহায্যে এপ্রিল মাসে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন মহিলা।

হাওড়া আদালতে আইনজীবীদের নিগ্রহের জেরে কর্মবিরতি চলায় মামলাটির শুনানি হচ্ছিল না। শুক্রবার মামলাটি ওঠে বিচারপতি বসাকের আদালতে। মহিলার আইনজীবী আদালতে জানান, তাঁর মক্কেল এতই গরিব যে, নিজের ও তাঁর পালিত সন্তানের দু’বেলার খাবারও জোটাতে পারেন না। তাঁর কোনও সম্পত্তি নেই। জমিও নেই। সরকারি কৌঁসুলি আদালতে জানান, ওই প্রকল্পে বাড়ি পেতে হলে সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েতের সুপারিশ থাকা দরকার। নিজস্ব জমি থাকলে তবেই পঞ্চায়েত সুপারিশ করে। কারা বাড়ি পাবেন, তা ঠিক করেন সংশ্লিষ্ট বিডিও।

বিচারপতি বসাক সরকারি কৌঁসুলিকে জানিয়ে দেন, দারিদ্রসীমার তলায় বসবাসকারী কোনও নাগরিককে কেউ যদি জমি দেন, তা হলে সেই জমিতে ওই প্রকল্পের আওতায় বাড়ি পেতে পারেন তিনি। কোনও ব্যক্তি যদি দারিদ্রসীমার নীচে বসবাসকারী ব্যক্তিকে তাঁর নিজের জমিতে বাড়ি করার অনুমতি দেন, তা হলেও ওই প্রকল্পের আওতায় বাড়ি পাওয়া সম্ভব। এর পরে বিচারপতি জয়নগর ১ বিডিও-কে নির্দেশ দেন, মহিলার আবেদন অবিলম্বে বিবেচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Calcutta High Court House Pradhanmantri Awas Yojna
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE