সাম্প্রতিক প্রবণতা অব্যাহত রেখে বিধানসভা উপনির্বাচনেও খেলা এবং চলচ্চিত্র জগতের প্রতিনিধিই বেছে নিল তৃণমূল। উপনির্বাচনে বসিরহাট দক্ষিণ বিধানসভা কেন্দ্রে শাসক দলের প্রার্থী হলেন ফুটবলার দীপেন্দু বিশ্বাস। চৌরঙ্গিতে শাসক দলের টিকিট পেলেন অভিনেত্রী তথা প্রাক্তন বিধায়ক নয়না বন্দ্যোপাধ্যায়। লোকসভা ভোটে বসিরহাট ও উত্তর কলকাতা কেন্দ্রে বিপুল জয়ের মধ্যেও তৃণমূলের অস্বস্তির কারণ ছিল এই দুই বিধানসভা এলাকা। সেই অস্বস্তি জয় করতে প্রথাগত রাজনীতিকের বাইরে অন্য চেনা মুখেই ভরসা রাখল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল।
দুই বিধানসভা কেন্দ্রেই উপনির্বাচন ১৩ সেপ্টেম্বর। মনোনয়ন প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যাবে ২০ অগস্ট থেকে। অন্য কোনও দলের আগে রবিবার তৃণমূলের তরফেই প্রথম প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করে দিয়েছেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায়। দুই প্রার্থীর মধ্যে নয়নার অবশ্য রাজনৈতিক পরিচয়ও আছে। তিনি অতীতে বৌবাজার থেকে তৃণমূলের বিধায়ক হয়েছিলেন। লোকসভায় তৃণমূলের দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্ত্রী হওয়ার সুবাদে আসনটি লড়তে কিছু বাড়তি সুবিধা নয়না পেতে পারেন। অন্য প্রার্থী দীপেন্দু অবশ্য রাজনীতিতে আনকোরা। সল্টলেকের বাসিন্দা হলেও তিনি বসিরহাটের ছেলে।
লোকসভা ভোটের ফলের নিরিখে বসিরহাট দক্ষিণ এবং চৌরঙ্গি, দু’টি আসনেই পিছিয়ে রয়েছে তৃণমূল। লোকসভায় বসিরহাট দক্ষিণে বিজেপি তৃণমূলের চেয়ে ৩০ হাজারেরও বেশি ভোটে এগিয়ে ছিল। চৌরঙ্গিতে কংগ্রেস দেড় হাজার ভোটে এগিয়ে ছিল তৃণমূলের চেয়ে। তবে মুকুলবাবুর ব্যাখ্যা, “ওটা ছিল লোকসভা ভোট। এটা বিধানসভা উপনির্বাচন।” নয়নাও জানান, জয়ের ব্যাপারে তিনি আশাবাদী।
রাজনৈতিক চরিত্রে দুই কেন্দ্রের মধ্যে অবশ্য বিস্তর ফারাক। চৌরঙ্গি এলাকা যেমন ঐতিহ্যগত ভাবে বাম-বিরোধী আসন বলে পরিচিত, বসিরহাট দক্ষিণে আবার সদ্যপ্রয়াত নারায়ণ মুখোপাধ্যায় সিপিএমের হয়ে টানা ৮ বার জিতেছিলেন! তিন বছর আগে বিধানসভা ভোটে চৌরঙ্গিতে কংগ্রেস-তৃণমূল জোটের প্রার্থী শিখা মিত্র হেলায় হারিয়েছিলেন আরজেডি-র বিমল সিংহকে। বসিরহাট দক্ষিণে আবার জোট-প্রার্থী যেখানে ৫৪ হাজার ভোট পেয়েছিলেন, সেখানে নির্দল দাঁড়িয়ে কংগ্রেস নেতা অসিত মজুমদার প্রায় ৫২ হাজার ভোট টেনেছিলেন! কংগ্রেস এ বার অসিতবাবুকেই প্রার্থী করলে তাঁর স্থানীয় প্রভাব এবং অন্য দিকে বিজেপি-র উত্থানের সঙ্গে তৃণমূলের ফুটবলার প্রার্থীর মোকাবিলা জমজমাট হয়ে উঠবে।
বসিরহাট দক্ষিণে সিপিএমের প্রার্থী হওয়ার সম্ভাবনা বেশি স্থানীয় জোনাল সম্পাদকের। দলের উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সম্পাদকমণ্ডলী শীঘ্রই নাম চূড়ান্ত করবে। চৌরঙ্গি আসনটি আরজেডি-কেই ছাড়া হবে কি না, তা নিয়ে অবশ্য আলোচনা চলছে। অন্য দিকে, চৌরঙ্গিতে কংগ্রেস প্রার্থী হওয়ার সম্ভাবনা হেয়ার স্ট্রিট এলাকার এক দাপুটে কাউন্সিলরের।
বসিরহাট লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী শমীক ভট্টাচার্যের নামই ওই এলাকায় উপনির্বাচনের জন্য দলে আলোচনায় আছে। ভোটের পরেও তিনি জনসংযোগ বজায় রেখেছেন। চৌরঙ্গির জন্য নাম রয়েছে তথাগত রায় ও কংগ্রেস থেকে আসা প্রদীপ ঘোষের। অন্য কিছু মুখও কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে দরবার করছে। দুই কেন্দ্রের প্রার্থী ঠিক করতে সোমবার রাজ্য বিজেপির নির্বাচনী কমিটির বৈঠক হওয়ার কথা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy