চন্দননগর আদালতে বিক্রম গুপ্ত। শনিবার তাপস ঘোষের তোলা ছবি।
চারটি জামিন-অযোগ্য ধারায় মামলা থাকা সত্ত্বেও সরকারি আইনজীবীরাও তাঁর জামিনের বিরোধিতা করলেন না। শনিবার সন্ধ্যায় কয়েকশো অনুগামীর সঙ্গে গলায় মালা পরে, কালো কাচে ঢাকা গাড়িতে উঠে চন্দননগর জেল থেকে বাড়ির পথ ধরলেন চাঁপদানি ফাঁড়িতে হামলায় অন্যতম অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা তথা চাঁপদানির ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বিক্রম গুপ্ত। পিছনে বাইক-বাহিনী। তিন হাজার টাকার বন্ড এবং প্রতি মাসে এক বার আদালতে হাজিরার শর্তে এ দিন চন্দননগর মহকুমা আদালত থেকে জামিন পেলন বিক্রম।
সরকারি আইনজীবীদের ‘ভূমিকা’য় চাঁপদানি ফাঁড়ির পুলিশকর্মীদের একাংশ ক্ষোভ গোপন রাখেননি। তাঁদের মতে, যেখানে পুলিশ মার খায়, সেখানে জামিনের বিরোধিতা করাই দস্তুর। তবে, জেলা পুলিশের কর্তারা মন্তব্য করে চাননি।
গত ৫ এপ্রিল বিক্রমের পরিচিত এক মোটরবাইক আরোহীকে ধরে চাঁপদানি ফাঁড়িতে নিয়ে যায় পুলিশ। অভিযোগ, সেই যুবকের ফোন পেয়েই থানায় সদলবলে চড়াও হয়ে বিক্রম ভাঙচুর চালান এবং পুলিশকর্মীদের মারধর করেন। কিন্তু পুলিশ তাঁকে ধরেনি। গত ১৩ এপ্রিল থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করেন বিক্রম। শনিবার চন্দননগর আদালতের অতিরিক্ত জেলা দায়রা বিচারক মাসুদ হোসেন খানের এজলাসে ওঠে মামলাটি। বিক্রমের আইনজীবীরা জামিনের আর্জি বিচারক মঞ্জুর করেন। সরকারি আইনজীবী নাসিম হালদার বলেন, ‘‘আমাদের মক্কেল জনপ্রতিনিধি। তিনি এলাকা ছেড়ে যাবেন না, এই শর্তে রাজিও হয়েছেন। তাঁর কাছ থেকে আর কিছু জানারও নেই। তাই জামিনের বিরোধিতা করা হয়নি।’’
‘আদালতের বিষয়’ বলে এ নিয়ে জেলা পুলিশের কর্তারা কোনও মন্তব্য করতে চাননি। বিরোধীরা মনে করিয়ে দিচ্ছেন, আলিপুর থানায় তাণ্ডবে মূল অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা প্রতাপ সাহা এবং বোলপুর থানায় পুলিশ পেটানোয় মূল অভিযুক্ত যুব তৃণমূল নেতা সুদীপ্ত ঘোষেরও জামিন হয়েছিল। সিপিএম নেতা ও আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘অপরাধী যদি শাসকদলের হয়, তা হলে সরকারি আইনজীবীও তার বিরোধিতা করার সাহস পায় না।’’ বিজেপি রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহও বলেন, ‘‘সরকার তৃণমূল কর্মীদের যথেচ্ছাচার করার বার্তা দিচ্ছে। চাঁপদানি কী আলিপুর, সর্বত্রই সরকার অপরাধীদের পাশে আছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy