E-Paper

‘কথাই শোনেনি’, পুলিশ নিয়ে ক্ষোভ তৃণমূলের

এ বারের ভোটে শাসক দলের প্রার্থী বাছাইপর্বে স্থানীয় স্তরে পুলিশের ‘মাথা গলানো’র অভিযোগও রয়েছে দলের জেলা স্তরে। কলকাতা লাগোয়া জেলার ওই ঘটনা বিচ্ছিন্ন কিছু নয়।

রবিশঙ্কর দত্ত

শেষ আপডেট: ২৩ জুলাই ২০২৩ ০৫:১৭
An image of police

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

পঞ্চায়েত ভোটের দিন পুলিশ সুপার পদমর্যাদার এক আধিকারিককে বার বার ফোন করেছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের এক জেলা সভাপতি। কিন্তু তিনি ফোন ধরেননি। ভোটের দিন ঘরোয়া আলোচনায় তা নিয়েই ক্ষোভে ফেটে পড়েন তিনি। পরে জানা যায়, যে-অশান্তি বন্ধ করতে ফোন করা হয়েছিল, তা নিয়েই চূড়ান্ত হতাশ ওই পুলিশকর্তা সে দিন কারও ফোনই ধরেননি। শুধু তা-ই নয়, এ বারের ভোটে শাসক দলের প্রার্থী বাছাইপর্বে স্থানীয় স্তরে পুলিশের ‘মাথা গলানো’র অভিযোগও রয়েছে দলের জেলা স্তরে।

কলকাতা লাগোয়া জেলার ওই ঘটনা বিচ্ছিন্ন কিছু নয়। তৃণমূলের প্রতাপশালী ওই জেলা সভাপতির থেকেও ‘খারাপ অভিজ্ঞতা’ দূরবর্তী একাধিক জেলার নেতাদের। জেলা স্তরে পঞ্চায়েত নির্বাচনের সঙ্গে যুক্ত তৃণমূলের সাংগঠনিক পদাধিকারী ও বিধায়কদের অনেকেই এই রকম অভিজ্ঞতার সাক্ষী। গণনা-পর্ব মিটে যাওয়ার পরে এ বার সেই সব জায়গাগুলি চিহ্নিত করার উদ্যোগ শুরু করেছে শাসক দল। ব্লক ও থানা স্তরে তো বটেই, একাধিক জেলায় জেলাশাসক ও পুলিশ সুপার স্তরের আধিকারিকদের ‘অসহযোগিতা’য় বিরক্ত তাঁরা।

পূর্ব মেদিনীপুরের মতো জেলায় শাসক দলের নেতাদের ‘অভিজ্ঞতা’ বা অভিযোগ, প্রশাসনের একাংশ সরাসরি বিরোধীদের মদত দিয়েছে। রাজ্য দলের অন্যতম মুখপাত্র তাপস রায়ের বক্তব্য, ‘‘পুলিশের ভূমিকা নিয়ে বিক্ষিপ্ত ভাবে কিছু বিষয় কানে আসছে। দল যখন গোটা নির্বাচন পর্যালোচনা করবে, তখন নিশ্চয়ই বিষয়টি দেখে করণীয় ঠিক করা হবে।’’

নির্বাচনে শাসক দলের প্রার্থীকে জেতাতে পুলিশ ও নীচের তলার প্রশাসনকে নিয়ে ইতিমধ্যেই অভিযোগ তুলেছে বিরোধীরা। পুলিশের হাতে শুধু বিরোধীদের আক্রান্ত হওয়া বা শাসকের আক্রমণের মুখে পুলিশের নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগও করেছে তারা। এ বার সেই সুর শোনা যাচ্ছে তৃণমূলের নেতাদের মুখেও। তার ভিত্তিতেই নির্দিষ্ট করে জেলা ভিত্তিক তথ্য সংগ্রহে উদ্যোগী হচ্ছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। দলীয় সূত্রে খবর, ভোটের দিন এক জেলা থেকে নির্বাচিত রাজ্যের দুই মন্ত্রী ও সংশ্লিষ্ট জেলার সভাপতি কয়েকটি জায়গা থেকে অশান্তির খবর পেয়ে জেলার পুলিশ সুপারের সঙ্গে বার বার যোগাযোগ করার চেষ্টা করেন। কিন্তু ওই আধিকারিক ফোন ধরেননি। পরে তিনি জেলারই এক নেতাকে জানিয়ে দেন, ভোটের দিন ওই এলাকার একাধিক বুথে যে ‘অস্বাভাবিক’ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল, তাতে তিনি বিরক্ত হয়েই শাসক দলের নেতাদের ফোন ধরেননি।

পূর্ব মেদিনীপুরেও একাধিক জায়গায় স্থানীয় পুলিশ ও প্রশাসনের বিরুদ্ধে ‘অসহযোগিতা’র অভিযোগ রয়েছে শাসক দলে। কয়েক জায়গায় সরাসরি বিজেপিকে সাহায্য করার অভিযোগও করেছেন জেলার একাধিক নেতা ও জনপ্রতিনিধি। তাঁদের অভিযোগ, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর প্রভাবে একাধিক জায়গায় শাসক দলের ‘কথাই শোনেনি’ পুলিশ। আবার দক্ষিণবঙ্গে নিজের দলের নেতাদের সঙ্গে নীচের তলার পুলিশ ও প্রশাসনের ‘যোগসাজশে’ গণনায় গরমিল ঠেকাতে বেশি রাতে পুলিশ সুপার আর জেলাশাসককে ফোন করে হুঁশিয়ারি দিতে হয় এক জেলা সভাপতিকে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

West Bengal Panchayat Election 2023 TMC Police officer

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy