Advertisement
E-Paper

আগে গোলাপ, পরে কাঁটা টিএমসিপি-র

সকালের ‘গাঁধীগিরি’ বিকেলে পাল্টে গেল ‘দাদাগিরি’তে!মঙ্গলবার সকালে বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে মনোনয়ন জমা দিতে আসা ডিএসও কর্মী-সমর্থকদের হাতে গোলাপ ফুল ও চকোলেট ধরিয়ে দিয়ে স্বাগত জানিয়েছিলেন তৃণমূল ছাত্র পরিষদ (টিএমসিপি)-এর নেতা-কর্মীরা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১১ জানুয়ারি ২০১৭ ০২:২৬
সকালে বিরোধীদের স্বাগত জানাচ্ছে টিএমসিপি। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল।

সকালে বিরোধীদের স্বাগত জানাচ্ছে টিএমসিপি। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল।

সকালের ‘গাঁধীগিরি’ বিকেলে পাল্টে গেল ‘দাদাগিরি’তে!

মঙ্গলবার সকালে বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে মনোনয়ন জমা দিতে আসা ডিএসও কর্মী-সমর্থকদের হাতে গোলাপ ফুল ও চকোলেট ধরিয়ে দিয়ে স্বাগত জানিয়েছিলেন তৃণমূল ছাত্র পরিষদ (টিএমসিপি)-এর নেতা-কর্মীরা। যা দেখে চোখ কপালে ওঠে ডিএসও-র ছেলেদের। তবে কি পাল্টে গেল টিএমসিপি! এ বার কি ছাত্রভোটে লড়াইটা অন্তত হবে!

দিনের শেষে অবশ্য গোলাপের কাঁটাই বিঁধল ডিএসও-কে। স্বমূর্তিতে দেখা গেল শাসক দলের ছাত্র সংগঠনকে। অভিযোগ, সকালে গোলাপ দেওয়ার পরে দুপুরে হামলা চালায় টিএমসিপি। ডিএসও কর্মী-সমর্থকদের মারধর করা হয়। সব্যসাচী চৌধুরী, রবিন টুডু এবং শুভব্রত হাইত নামে তিনজন গুরুতর জখম হন। তাঁদের মেদিনীপুর মেডিক্যালে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করাতে হয়। এরপর আর ৭টির বেশি আসনে মনোনয়ন দিতে পারেনি ডিএসও। আর এসএফআই, ছাত্র পরিষদের মতো সংগঠনগুলি তো লড়াইয়ের ময়দানেই নেই। ফলে, ১৩৭টি আসনের মধ্যে ১৩০টিতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতে এ দিনই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ দখল নিশ্চিত করে ফেলেছে টিএমসিপি। ৭টি আসনে ডিএসও-র প্রার্থী দিতে পারার মধ্যেও রাজনৈতিক কৌশল দেখতে পাচ্ছে বিরোধীরা। সেই সূত্রে মেদিনীপুরের প্রবীণ নেতারা মনে করিয়ে দিচ্ছেন ১৯৯৯ সালে পাঁশকুড়া লোকসভা কেন্দ্রে উপ-নির্বাচনের কথা। বাম জমানার সেই ভোটে বিপুল ব্যবধানে জিতেছিল তৃণমূল। অভিযোগ উঠেছিল, ছাপ্পা-ভোট লুঠের। সে বার বহু বুথেই তৃণমূল ৯০টি ভোট পেলে, বিরোধীরা পেয়েছিল ১০টি ভোট। আসলে ওই ১০টি ভোট বিরুদ্ধ পক্ষকে পাইয়ে দিয়ে সুষ্ঠু নির্বাচনের ছবিটা সামনে আনার চেষ্টা হয়েছিল হলে দাবি তৃণমূল-বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির।

এ বার ছাত্রভোটেও টিএমসিপি সেই একই কৌশল নিয়েছে বলে অভিযোগ। কয়েকটি আসন বিরোধীদের ছেড়ে তারা বোঝাতে চাইছে, গণতান্ত্রিক পরিবেশেই ভোট হচ্ছে। ডিএসও-র পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা নেতা রাকিবুল হাসান বলছিলেন, “সকালে গোলাপ ফুল দিয়ে অভ্যর্থনা জানানোয় অবাকই হয়েছিলাম। অনেকের মনে প্রশ্ন জেগেছিল, তবে কি টিএমসিপি পাল্টে গেল! বেলা গড়াতেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে, এটা টিএমসিপির চাল।”

মারধরের অভিযোগ মানতে নারাজ টিএমসিপি। টিএমসিপির জেলা নেতা তথা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক স্বদেশ সরকারের কথায়, “বিরোধী যারা মনোনয়ন দিতে এসেছিল, তাদের গোলাপ দিয়ে অভ্যর্থনা জানানো হয়েছে। আমরা চেয়েছিলাম, সব আসনে লড়াই হোক। প্রার্থী খুঁজে না পেয়ে ডিএসও মিথ্যে অভিযোগ করছে।” ক্যাম্পাসে কোনও গোলমাল হয়নি বলে দাবি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষেরও। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিবন্ধক জয়ন্তকিশোর নন্দী বলেন, “মনোনয়ন সুষ্ঠু ভাবেই হয়েছে।”

গতবারও বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রভোটে দাপট দেখিয়েছিল টিএমসিপি। মাত্র ২৯টি আসনে ভোটাভুটি হয়েছিল। ১২টিতে এসএফআই, ৬টিতে ডিএসও এবং ১১টিতে জিতেছিল টিএমসিপি। এ বার সেখানে ভোট হবে মোটে ৭টি আসনে। তাও বিরোধী শুধু ডিএসও। এসএফআই এ বার প্রার্থী দেওয়ার চেষ্টাই করেনি। সংগঠনের জেলা সভাপতি সৌমিত্র ঘোড়ইয়ের দাবি, “নির্বাচনের নামে প্রহসন হচ্ছে। প্রার্থী দেওয়ার পরিস্থিতিই নেই।”

TMCP DSO
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy