Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

বন্যা বুঝতে নিজেদের কেন্দ্র খুলছে ডিভিসি

ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস পাওয়া যায় বটে, তবে দামোদর উপত্যকার কোথায় ঠিক কতটা বৃষ্টি হল, নির্দিষ্ট করে তা বোঝার উপায় নেই দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশন বা ডিভিসি কর্তৃপক্ষের।

পিনাকী বন্দ্যোপাধ্যায় ও কুন্তক চট্টোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ অগস্ট ২০১৬ ০৩:৩২
Share: Save:

ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস পাওয়া যায় বটে, তবে দামোদর উপত্যকার কোথায় ঠিক কতটা বৃষ্টি হল, নির্দিষ্ট করে তা বোঝার উপায় নেই দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশন বা ডিভিসি কর্তৃপক্ষের। আর তার জেরে অনেক সময় বন্যা নিয়ন্ত্রণের কাজেও ঘাটতি থেকে যায়। কখনও বা আগাম জল ছেড়ে দেওয়ায় শুখা মরসুমে জল মেলে না। ডিভিসি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, জাতীয় জল-অনুসন্ধান প্রকল্পের (ন্যাশনাল হাইড্রোলিক প্রজেক্ট) আওতায় মাইথন, পাঞ্চেত-সহ চারটি জলাধারে নিজস্ব আবহাওয়া কেন্দ্র গড়ে তোলা হবে। তাঁদের দাবি, এতে আগামী দিনে বন্যা পরিস্থিতির মোকাবিলা করা এখনকার তুলনায় সহজ হবে। সেচেরও উন্নতি হবে।

ডিভিসি-র এক কর্তা জানান, বন্যা নিয়ন্ত্রণ ও সেচের উন্নতির জন্য জাতীয় জল-অনুসন্ধান প্রকল্প চালু করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। দামোদর উপত্যকায় এই পরিকাঠামো গ়ড়ার জন্য ডিভিসি-কে ৫০ কোটি টাকার মঞ্জুরি দিয়েছে কেন্দ্রীয় জলসম্পদ মন্ত্রক। চলতি বছরে কাজ শুরু হলেও এই প্রকল্প শেষ হবে ২০২৩ সাল নাগাদ। ডিভিসির ওই কর্তার কথায়, ‘‘এই পরিকাঠামো চালু হয়ে গেলে মাউসের এক ক্লিকেই দামোদর উপত্যকার সর্বত্র নদী ও বৃষ্টিপাতের খুঁটিনাটি তথ্য মিলবে।’’

এখন অবশ্য দামোদর উপত্যকার পূর্বাভাস দেওয়ার জন্য আলিপুর আবহাওয়া দফতরে পৃথক শাখা রয়েছে। ওই এলাকায় ভারী বৃষ্টি হবে কি না, আবহাওয়া কেমন থাকবে, তার পূর্বাভাস দেওয়ার দায়িত্ব ওই শাখার। আবহাওয়া অফিস সূত্রের খবর, দামোদর উপত্যকার বিরাট এলাকা জুড়ে ভারী বৃষ্টির সতর্কতা জানান তাঁরা। সেই সতর্কতা মেনেই জল ছাড়া বা ধরে রাখার সিদ্ধান্ত নেয় কেন্দ্রীয় জল কমিশন এবং ডিভিসি। কিন্তু বিরাট এলাকার এই পূর্বাভাস অনেক সময়ই কাঁটায়-কাঁটায় মেলে না। ফলে জলাধার পরিচালন ব্যবস্থায় কিছু খামতি থেকে যেতে পারে। জলাধার পরিচালন ব্যবস্থার খামতির জেরে অনেক সময়ই রাজ্যে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয় বলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বার বার অভিযোগ করেছেন।

আবহাওয়া দফতরের এক পদস্থ বিজ্ঞানী বলেন, ‘‘আমরা হয়তো দামোদর উপত্যকায় এক দিনে ৫০ মিলিমিটার বৃষ্টির কথা বললাম। কিন্তু মাইথনে বা পাঞ্চেতে হয়তো ততটা হল না। ফলে বিপদের আশঙ্কায় জল ছেড়ে দিলে জলাধারের জলস্তর নেমে যেতে পারে।’’ তাঁর ব্যাখ্যা, পূর্বাভাস দেওয়া হয় বটে, কিন্তু জলাধার নিয়ন্ত্রণে তাৎক্ষণিক তথ্য বা ‘রিয়েল টাইম ডেটা’ গুরুত্বপূর্ণ। ভরা বর্ষায় কখন কতটা বৃষ্টি হচ্ছে, তা জানতে পারলে সিদ্ধান্ত নেওয়া সহজ হয়। আবহাওয়া কেন্দ্র চালু হলে নদীতে জলের গতিবেগ ও গভীরতা মাপার ব্যবস্থা, কতক্ষণ ধরে কতটা বৃষ্টি হল এবং বৃষ্টির চরিত্র সম্পর্কে তথ্য থাকবে তাঁদের হাতে। কোন নদীতে কত জল, জলাধার থেকে জল ছাড়লে কী পরিস্থিতি হতে পারে, সেই তথ্যও সহজে মিলবে। ফলে অন্তত তিন দিন আগে বন্যা পরিস্থিতি আঁচ করা যাবে। রাজ্যও ব্যবস্থা নিতে পারবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Damodar valley corporation
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE