Advertisement
E-Paper

কর্পোরেট ভরসায় বড় মাঠে নামছে টলিউড

সেলুলয়েডের কাদম্বরীকে নিয়ে উত্তাল বাঙালির নেটপাড়ার আড্ডা। কলকাতায় বসে যাঁরা ছবিটি দেখে ফেলেছেন, প্রবাসী বন্ধুদের প্রশ্নে জর্জরিত তাঁরা। মার্কিন মুলুকের পরবর্তী বঙ্গসম্মেলনে ছবিটি ‘দেখানো হবে’ বলে জল্পনা চলছে। ‘বেলাশেষে’তে সৌমিত্র-স্বাতীলেখার অভিনয় দেখতেও অনেকেরই তর সইছে না।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৮ জুন ২০১৫ ০৩:১০

সেলুলয়েডের কাদম্বরীকে নিয়ে উত্তাল বাঙালির নেটপাড়ার আড্ডা। কলকাতায় বসে যাঁরা ছবিটি দেখে ফেলেছেন, প্রবাসী বন্ধুদের প্রশ্নে জর্জরিত তাঁরা। মার্কিন মুলুকের পরবর্তী বঙ্গসম্মেলনে ছবিটি ‘দেখানো হবে’ বলে জল্পনা চলছে। ‘বেলাশেষে’তে সৌমিত্র-স্বাতীলেখার অভিনয় দেখতেও অনেকেরই তর সইছে না। পুণে-হায়দরাবাদ-বেঙ্গালুরুর বাঙালিরা ফেসবুকে ঘোষণা করছেন, অমুক হলে শোয়ের পর খানাপিনার আসর বসবে। বেঙ্গালুরুবাসী এক বঙ্গতনয়ই শোনাচ্ছিলেন, হোয়াইটফিল্ডে ‘ওপেন টি বায়োস্কোপ’ দেখে ৩০ কিলোমিটার ড্রাইভ করে বাড়ি ফেরার কথা।

বাংলার বাইরে এই ‘বং কানেকশন’-এর টানে হঠাৎ অক্সিজেন খুঁজে পেয়েছে টালিগঞ্জ।

বহু বছর আগে রাঁচি-পটনা-বারাণসীর মতো বাঙালি-অধ্যুষিত জায়গায় নিয়মিত বাংলা ছবি মুক্তি পেত। টলিউডি প্রযোজকরা আজকাল মেট্রো শহরগুলোকে তাক করে থাকেন। কিন্তু বাংলার বাইরে সত্যিকার বাজার তৈরি করতে হলে চাই নির্দিষ্ট পরিকল্পনা। এটা মাথায় রেখেই ঘুঁটি সাজিয়েছে ‘বেলাশেষে’। ফিল্ম পরিবেশনায় এ দেশের প্রথম সারির সংস্থা ইরস ইন্টারন্যাশনাল এই প্রথম বাংলা ছবির হাত ধরছে। মুম্বই, বেঙ্গালুরু, হায়দরাবাদ, পুণে, দিল্লি, গুড়গাঁওয়ে ‘বেলাশেষে’ দেখানোর ব্যবস্থা করেছে তারাই। ইরস-কর্তা নন্দু আহুজা বলছেন, ‘‘ভাল কনটেন্ট (বিষয়বস্তু) থাকলে ভাষাটা বড় ব্যাপার নয়। তামিল-তেলুগু ছবিতেও আমরা এটা দেখেছি।’’ ভিন রাজ্যের হলে বেশ কয়েকটা ‘প্রাইম টাইম শো’ পেয়েছে এই বাংলা ছবি। নির্দিষ্ট পরিকল্পনার ভিত্তিতে ছবিটিকে বিদেশে নিয়ে যেতেও তৎপর ইরস। খবরটা শুনে টলি তারকা প্রসেনজিতের মন্তব্য, ‘‘এ ছাড়া কোনও রাস্তা নেই। মহারাষ্ট্র বা অন্ধ্রপ্রদেশের সঙ্গে তুলনায় বাংলায় ভাল হল-এর সংখ্যা সিকিভাগও নয়। অথচ বাংলা ছবির দর্শকেরা সারা দুনিয়ায় ছড়িয়ে। এই দর্শকদের কাছে বাংলা ছবিকে পৌঁছতেই হবে।’’

তবে কলকাতা বা দেশের বাইরে বাংলা ছবি রিলিজ করে মুশকিলে পড়ার নমুনাও আছে। যেমন ভেঙ্কটেশ ফিল্মস-এর ‘চাঁদের পাহাড়’ নিয়ে আমেরিকা-যাত্রার অভিজ্ঞতাই তত সুখের হয়নি। ‘কাদম্বরী’-র পরিচালক সুমন ঘোষের কথায়, ‘‘বাণিজ্যিক থিয়েটারে ছবি রিলিজ করলেই যে হল ভর্তি হবে, তেমন সোজা নয়। এর জন্য পরিকল্পনা দরকার।’’ ‘ওপেন টি বায়োস্কোপ’ নিয়ে সদ্য আমেরিকা ও সুইডেনের বেশ কয়েকটি শহরে ঘুরে এসেছেন পরিচালক অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলছেন, বিক্ষিপ্ত চেষ্টা ছাড়া কোনও কর্পোরেট সংস্থা এগিয়ে এলে তবেই বাংলা ছবির নতুন দিক খুলবে।

সিঙ্গাপুরের বাঙালিরাও ইদানীং বাংলা ছবি দেখতে ও দেখাতে বেশ তৎপর। এর আগে সৃজিত মুখোপাধ্যায়-কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়দের ছবি, গৌতম ঘোষের ‘মনের মানুষ’ বা অনীক দত্তের ‘ভূতের ভবিষ্যৎ’ও দেশে-বিদেশে দেখানোর চেষ্টা হয়েছে। অনিরুদ্ধ রায়চৌধুরীর ‘অনুরণন’ বিদেশে দেখিয়েছিল শেমারু সংস্থা। তাঁর ‘বুনোহাঁস’ বিলেতে দেখিয়েছিল রিলায়েন্স। অনিরুদ্ধের মত হল, ছবি দেখানোর বিষয়টা আরও সংগঠিত করা চাই। নইলে ইন্টারনেটে ‘হলপ্রিন্ট’ দেখে নেওয়ার প্রবণতা ঠেকানো যাবে না। ‘বেলাশেষে’-র চেষ্টাকে স্বাগত জানিয়েও অনিরুদ্ধ তাই বলছেন, ‘‘বলিউড বা দক্ষিণী ছবির মতো বাংলা ছবিকেও একই সঙ্গে দেশে-বিদেশে রিলিজ করতে হবে। কর্পোরেট সাহায্যে এটা সফল ভাবে করা গেলেই লক্ষ্মীর মুখ দেখবে টালিগঞ্জ।’’

tollywood film kolkata kadambari belaseshe
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy