Advertisement
E-Paper

টাকা মেলেনি ক্ষতিপূরণের, বেঁধে মার নেতাকে

চাষে ক্ষতিপূরণের তালিকা তৈরিতে দলবাজির অভিযোগ তুলে বর্ধমানের মেমারিতে তৃণমূল নেতাকে মারধর করলেন বেশ কিছু গ্রামবাসী। ওই নেতাকে উদ্ধার করতে গিয়ে বিক্ষোভের মুখে পড়ে পুলিশও।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২১ অগস্ট ২০১৫ ০৩:০৭
তখনও খুঁটিতে বাঁধা তৃণমূল নেতা অরবিন্দ হুঁই। ছবি: উদিত সিংহ।

তখনও খুঁটিতে বাঁধা তৃণমূল নেতা অরবিন্দ হুঁই। ছবি: উদিত সিংহ।

চাষে ক্ষতিপূরণের তালিকা তৈরিতে দলবাজির অভিযোগ তুলে বর্ধমানের মেমারিতে তৃণমূল নেতাকে মারধর করলেন বেশ কিছু গ্রামবাসী। ওই নেতাকে উদ্ধার করতে গিয়ে বিক্ষোভের মুখে পড়ে পুলিশও।

আবার, ক্ষতিগ্রস্ত চাষিদের ফর্ম বিলি নিয়ে অশান্তির জেরে দক্ষিণ ২৪ ক্যানিং ২ ব্লক অফিস চত্বরে ভাঙচুর করা হল বিডিও এবং পুলিশের গাড়ি। জখম ৩ জন পুলিশ কর্মী। পুলিশের লাঠিতে কয়েক জন চাষিও আহত হয়েছেন বলে অভিযোগ।

প্রাকৃতিক দুর্যোগে চাষ নষ্ট হলেও সরকারি ক্ষতিপূরণ না মেলায় বহু জায়গায় ক্ষোভের আগুন ধোঁয়াচ্ছে। বৃহস্পতিবার তারই বহিঃপ্রকাশ ঘটল রাজ্যের দুই প্রান্তে।

মেমারির বেগুটি গ্রামে শিলাবৃষ্টির জেরে যে চাষিদের বোরো ধানের ক্ষতি হয়েছিল, তাঁদের তালিকা করে প্রশাসনের কাছে পাঠিয়েছিল স্থানীয় পঞ্চায়েত। কিন্তু, সম্প্রতি ক্ষতিপূরণ হিসেবে কৃষি দফতর যাঁদের চেক দিয়েছে, তাঁদের অনেকে বোরো চাষই করেননি বলে গ্রামবাসীর একাংশের অভিযোগ। পঞ্চায়েতের প্রতিনিধি হিসেবে গ্রামের তৃণমূল নেতা অরবিন্দ হুঁই তালিকা তৈরিতে যুক্ত ছিলেন বলে গ্রামবাসীর কাছে খবর ছিল।

এ দিন সকালে এক দল গ্রামবাসী অরবিন্দবাবুর বাড়িতে ক্ষতিপূরণের তালিকা নিয়ে ক্ষোভ জানাতে যান। অভিযোগ, তিনি কারও কথা শুনতে চাননি। এর পরেই তাঁকে গ্রামের বারোয়ারিতলায় তুলে নিয়ে এসে একটি খুঁটিতে পিছমোড়া করে বেঁধে চড়-থাপ্পড় মারা শুরু হয়। গ্রামের অশোক সরকার, বাকু সাঁতরা, রবি হেমব্রমদের অভিযোগ, “বেশি জমি দেখিয়ে তৃণমূল-ঘনিষ্ঠরা ক্ষতিপূরণের টাকা তুলে নিয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তেরা টাকা পায়নি।” গ্রামবাসীর একাংশের দাবি, ক্ষতিপূরণের টাকার বড় অংশ দলের নেতাদের মধ্যে ভাগ হয়েছে বলে অরবিন্দবাবু স্বীকারও করেছেন।

চড়া রোদে ঘণ্টা তিনেক আটকে থাকার পরে পুলিশ গিয়ে তৃণমূলের ওই নেতাকে উদ্ধার করে। কিন্তু তাঁকে নিয়ে যাওয়ার সময়ে পুলিশের গাড়ি আটকেও বিক্ষোভ দেখান বাসিন্দারা। পুলিশ তাঁদের সরিয়ে অরবিন্দবাবুকে থানায় নিয়ে যায়। রাত পর্যন্ত তাঁকে সেখানেই রাখা হয়েছে। তাঁর কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি। তবে তৃণমূলের বর্ধমান ২ ব্লক সভাপতি তথা বর্ধমান ২ পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি শ্যামল দত্তের দাবি, ‘‘যাঁরা গোলমাল পাকিয়েছেন, তাঁরা ক্ষতিপূরণের জন্য আদৌ আবেদনই করেননি। এখন অন্য চাষিরা ক্ষতিপূরণ পাচ্ছেন দেখে এই কাণ্ড ঘটালেন।”

ক্যানিংয়ে এ দিন ব্লক অফিসের উল্টো দিকে কমিউনিটি হল থেকে ক্ষতিগ্রস্ত চাষিদের ফর্ম বিলি করা শুরু হয়েছিল। প্রায় আট হাজার চাষি ফর্ম নিতে জড়ো হয়েছিলেন। বিকেল পর্যন্ত মাত্র ৭০০ জন ফর্ম পান। এর পরেই ব্লক অফিসের কর্তারা জানিয়ে দেন, এ দিন আর ফর্ম দেওয়া হবে না। বিক্ষোভ শুরু হয়ে যায়। বিডিও-র গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। পুলিশের গাড়ি লক্ষ করেও ইট ছোড়া শুরু হয়। তিন পুলিশকর্মী জখম হন। পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ লাঠিচার্জ করে বলে অভিযোগ। ক্যানিং ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সওকত মোল্লা জানান, আজ, শুক্রবার থেকে ব্লকের প্রতিটি পঞ্চায়েত অফিস থেকে ফর্ম দেওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

Trinamool leader Bardhaman villagers memeri
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy