Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

ভাষা-বিভ্রাটে ধৃত চিনাদের জেরা শিকেয়

গোয়েন্দা সূত্রের খবর, ধৃতেরা চিনের গুয়াংঝৌ প্রদেশের বাসিন্দা এবং সেই আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলছে। তাই জেরায় কোনও তথ্যই মিলছে না। ওই দলের চাঁই ওয়াং শিয়াতং তবুও ভাঙা ভাঙা ইংরেজি বলতে পারে। কিন্তু সে-ও তেমন কিছুই বলছে না বলেই সিআইডি-র দাবি।

কলকাতা স্টেশনে মাদক সহ ধৃত চিনা নাগরিকরা।— নিজস্ব চিত্র।

কলকাতা স্টেশনে মাদক সহ ধৃত চিনা নাগরিকরা।— নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৩ জুলাই ২০১৮ ০২:৫২
Share: Save:

কত কী জানার বাকি! কিন্তু কিছুই জানতে পারছেন না সিআইডি-র দুঁদে অফিসারেরা।

গত শুক্রবার রাতে কলকাতা স্টেশন থেকে প্রায় ১৯৭ কিলোগ্রাম মাদক-সহ পাঁচ জন চিনা নাগরিককে গ্রেফতার করেছিল রেল পুলিশ। সেই ঘটনার তদন্তভার নিয়েছে সিআইডি। কিন্তু জেরায় কিছুই জানতে পারছে না তারা। গোয়েন্দা সূত্রের খবর, ধৃতেরা চিনের গুয়াংঝৌ প্রদেশের বাসিন্দা এবং সেই আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলছে। তাই জেরায় কোনও তথ্যই মিলছে না। ওই দলের চাঁই ওয়াং শিয়াতং তবুও ভাঙা ভাঙা ইংরেজি বলতে পারে। কিন্তু সে-ও তেমন কিছুই বলছে না বলেই সিআইডি-র দাবি।

পুলিশকর্তারা বলছেন, চিনে প্রায় ২১ ধরনের আঞ্চলিক ভাষা রয়েছে। গুয়াংঝৌ প্রদেশের ভাষা বলতে বা বুঝতে পারেন, এমন কোনও দোভাষী পেলে এই জটিলতা কাটবে বলে আশা করছে তদন্তকারীদের। পুলিশ সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই অন্তত পাঁচ জন দোভাষীকে আনা হয়েছিল। তাঁরা কেউই ধৃতদের সঙ্গে বিস্তারিত কথা বলতে সক্ষম হননি। ভাষা জটিলতা কাটাতে সিবিআই-সহ বিভিন্ন কেন্দ্রীয় সংস্থার কাছে সাহায্য চাওয়া হয়েছে বলেও একটি সূত্রের খবর। এক পুলিশকর্তা বলেন, ‘‘ধৃতেরা ১৪ দিনের পুলিশি হেফাজতে রয়েছে। সেই সময়ের মধ্যে দোভাষী জোগাড় না হলে তদন্তে অসুবিধা হবে।’’

ভাষা সমস্যা কতটা গভীর তা বোঝাতে গিয়ে রীতিমতো আক্ষেপ করছিলেন এক তদন্তকারী অফিসার। বলছিলেন, ‘‘শিয়াতং বলে লোকটি ভীষণ ধুরন্ধর। সে কিছুতেই ভাঙছে না। বাকিরা ভাষা সমস্যায় কার্যত মূক বধির হয়ে রয়েছে। কিন্তু ওদের সঙ্গে কথা বলতে পারলে অনেক তথ্য মিলতে পারে।’’ পুলিশ সূত্রের খবর, ধৃতদের কাছে প্রায় ৩৯ কোটি টাকার মাদক মিলেছে। ‘অ্যামফেটামাইন’ জাতীয় ওই ট্যাবলেট বিভিন্ন বিত্তশালীদের পার্টিতে ব্যবহার করা হয়। এ শহরে কারা ওই মাদক কিনত তা জানাও জরুরি বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা। শুধু তাই নয়, সম্প্রতি এক লপ্তে এত বড় পরিমাণের মাদক বাজেয়াপ্ত হয়নি। এর পিছনে বড় চক্র রয়েছে বলেও মনে করছেন তদন্তকারীরা।

সিআইডি সূত্রের খবর, এ রাজ্যেও ঘোরাফেরা করেছে ওই পাঁচ চিনা। মুর্শিদাবাদের বেলডাঙা এলাকা থেকে মাদক নিয়ে কলকাতায় আসছিল ধৃতেরা। ধৃত এক জনকে জেরায় জানা গিয়েছে, গত মে ও জুন মাসে দিল্লি থেকে এ রাজ্য এসে ঘাঁটি গেড়েছিল পাচারকারীরা। ধৃতদের কাছে চার বছরের ভিসাও রয়েছে। মুলত মালদা ও মুর্শিদাবাদের সীমান্ত এলাকায় ঘোরাফেরা করত ধৃতেরা। এক তদন্তকারীর কথায়, এর থেকে বেশি কিছুই এখনও উদ্ধার করা যায়নি। ধৃতদের কাছে ট্রেন বাস ও হোটেলের টিকিট-রসিদ উদ্ধার করা হয়েছে। ওই নথির ভিত্তিতে ধৃতদের গতিবিধি আন্দাজ করা হয়েছে। কলকাতার চিনা দূতাবাসেও ধৃতদের বিষয়ে জানানো হয়েছে। তবে ওখান থেকে এখনও ধৃতদের বিষয়ে কোনও তথ্য পাওয়া যায়নি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Chinese Drug peddler Interrogation CID Chinese
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE