প্রতীকী ছবি।
বন্দির সংখ্যা ক্রমাগত বেড়ে চলায় রাজ্যে জেলের সংখ্যাও বাড়ানো হচ্ছে। সেই সব বন্দির সঙ্গেই রয়েছেন বিদেশি ‘জানখালাস’ বন্দিরা। জেলে বন্দির ভিড় কমাতে এ বার সেই জানখালাসদের জন্য পৃথক ডিটেনশন সেন্টার বা বন্দি শিবির গড়তে চলেছে রাজ্য সরকার। কিন্তু প্রয়োজনীয় জমি না-মেলায় সেই পরিকল্পনার অগ্রগতি অনেকাংশে ব্যাহত হচ্ছে।
মামলা থেকে খালাস পেয়েছেন কিংবা সাজা শেষ হয়েছে, অথচ প্রয়োজনীয় নথিপত্রের অভাবে দেশে ফিরতে পারছেন না, কারাগারের পরিভাষায় এমন বন্দিদেরই বলা হয় ‘জানখালাস’। রাজ্যের বিভিন্ন সেন্ট্রাল জেলে আপাতত এমন বন্দি আছেন ২৭৩ জন। তাঁদের মধ্যে ২৩০ জন পুরুষ এবং ৪৩ জন মহিলা। এই ধরনের বন্দির সংখ্যার নিরিখে অন্য সেন্ট্রাল জেলগুলিকে অনেকটাই পিছনে ফেলে দিয়েছে দমদম জেল। সেখানে জানখালাসের সংখ্যা সব চেয়ে বেশি— ১৬৩। তার পরে রয়েছে বহরমপুর সেন্ট্রাল জেল— ৮৩ জন। জলপাইগুড়ি, আলিপুর, প্রেসিডেন্সি সেন্ট্রাল জেলেও কয়েক জন জানখালাস রয়েছেন। বাকি তিনটি সেন্ট্রাল জেলে অবশ্য এই ধরনের কোনও বন্দি নেই।
ওই সব বিদেশি বন্দির মধ্যে বাংলাদেশির সংখ্যা সব থেকে বেশি। জেলে ভিড় কমাতে সেই সব বন্দির জন্য শিবির গড়তে চাইছে রাজ্য সরকার। উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁয় জমিও দেখা হয়েছিল। কিন্তু সেই জমি প্রয়োজনের তুলনায় কম বলে সেখানে ডিটেনশন সেন্টার গড়ার পরিকল্পনা থেকে পিছিয়ে এসেছে কারা দফতর। নদিয়ার কৃষ্ণনগর সংলগ্ন এলাকাতেও জমি খোঁজা হবে বলে প্রাথমিক ভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ওই দফতর। কিন্তু রাজ্য প্রশাসনের শীর্ষ মহলের আপত্তিতে সেই সিদ্ধান্ত বাতিল করতে হয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে উত্তর ২৪ পরগনাতেই, বিশেষত জেলা সদর বারাসত সংলগ্ন এলাকায় জমির সন্ধান চলছে। জেলা প্রশাসনের সঙ্গে কথাবার্তাও শুরু হয়েছে রাজ্য প্রশাসনের। জমি মিললে বারাসত সংলগ্ন এলাকাতেই বন্দি শিবির গড়বে রাজ্য। জানখালাসদের মধ্যে বাংলাদেশিই বেশি। উত্তর ২৪ পরগনার মতো সীমান্তবর্তী জেলায় ডিটেনশন সেন্টার গড়লে জানখালাসদের সহজেই ও-পার বাংলায় ফেরত পাঠানো যাবে বলে কারাকর্তাদের একাংশের অভিমত।
ডিটেনশন সেন্টার তৈরি হয়ে গেলে বিভিন্ন জেলে বাড়তি বন্দির সমস্যা তো মিটবেই। সাজা শেষের পরেও অন্য কয়েদিদের সঙ্গে থাকতে বাধ্য হওয়ায় যে-সব জানখালাস বন্দি মানসিক সমস্যায় ভোগেন, তার থেকে তাঁদের মুক্তি দেওয়া যাবে বলে আশা করছেন কারাকর্তারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy