Advertisement
২০ মে ২০২৪

ছাত্র সংসদের ভোটে ‘নোটা’ চায় ইউজিসি

সাধারণ নির্বাচনের ধাঁচে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচনেও ‘অপছন্দের ভোট’ দেওয়ার ব্যবস্থা চালু করার সুপারিশ করল বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)।

স্কটিশ চার্চ কলেজের একটি অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী উপাচার্য আশুতোষ ঘোষ। শনিবার রণজিৎ নন্দীর তোলা ছবি।

স্কটিশ চার্চ কলেজের একটি অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী উপাচার্য আশুতোষ ঘোষ। শনিবার রণজিৎ নন্দীর তোলা ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ জুলাই ২০১৬ ০৩:২১
Share: Save:

সাধারণ নির্বাচনের ধাঁচে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচনেও ‘অপছন্দের ভোট’ দেওয়ার ব্যবস্থা চালু করার সুপারিশ করল বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। সম্প্রতি ওয়েবসাইটে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে দেশের সব উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ভোটে বিকল্প হিসেবে ‘নোটা’ চালু করার সুপারিশ করা হয়েছে।

২০১৪ সালের লোকসভা ভোটেই নির্বাচন কমিশন বৈদ্যুতিন ভোটযন্ত্রে অপছন্দের ভোট (নান অব দ্য অ্যাবাভ, সংক্ষেপে নোটা)-এর জন্য পৃথক বোতাম রাখা চালু করে। কোনও প্রার্থীকেই

পছন্দ না হলে ওই বোতাম টিপতে পারেন ভোটার। রাজ্যে বিগত বিধানসভা নির্বাচনেও বহু মানুষ ওই পথেই মত জানিয়েছেন। ইউজিসি চায়, ছাত্র সংসদ নির্বাচনেও ওই ধরনের ব্যবস্থা চালু হোক।

রাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় এবং প্রধান ছাত্র সংগঠনগুলির বেশির ভাগই মোটের উপর এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবনিযুক্ত অস্থায়ী উপাচার্য আশুতোষ ঘোষ বলেন, ‘‘ব্যক্তিগত ভাবে মনে করি, এই সুপারিশ গণতন্ত্রের পক্ষে শুভ। সিন্ডিকেটের পরবর্তী বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করব।’’ প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অনুরাধা লোহিয়াও মনে করেন,

ছাত্র সংসদ নির্বাচনেও নোটা চালু হলে ভাল। নির্দেশিকা হাতে এলে সেই অনুযায়ী কাজ করা হবে বলেও তিনি জানান। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুরঞ্জন দাস অবশ্য জানিয়েছেন, ইউজিসি-র কোনও সুপারিশ তিনি পাননি। পেলে

ভেবে দেখবেন।

আর যাঁদের নির্বাচন নিয়ে ওই সুপারিশ, সেই ছাত্র সংগঠনগুলির কী মত? এসএফআই-এর রাজ্য সভাপতি মধুজা সেন রায় মনে করেন, এটা ছাত্রদের পক্ষে মঙ্গলজনক। ছাত্র পরিষদের রাজ্য সভাপতি আশুতোষ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘নোটা-র ব্যবস্থা থাকলে ভালই হয়।’’

তবে তার আগে ভোট পরিচালনার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়, ছাত্র সংগঠনের প্রতিনিধি নিয়ে নির্বাচন কমিশনের মতো নিরপেক্ষ কমিটি গড়া দরকার বলে মনে করেন ওই ছাত্রনেতা। এবিভিপি-র রাজ্য সহ সভাপতি অভিজিৎ বিশ্বাসও জানান, তাঁরা নোটার পক্ষে। তবে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের রাজ্য সভাপতি জয়া দত্ত দলে আলোচনার আগে এ নিয়ে মত জানাতে রাজি নন।

কিন্তু ছাত্র সংসদ নির্বাচন ঘিরে সুপারিশ তো এই প্রথম নয়! বেশ কয়েক বছর আগে লিংডো কমিশন ছাত্র সংসদ নির্বাচনকে অবাধ ও স্বচ্ছ করার জন্য কিছু সুপারিশ করেছিল। সেগুলি বাস্তবায়িত হয়নি। কমিশনের প্রধান উদ্দেশ্য ছিল, ছাত্র সংসদ নির্বাচনকে দলীয় রাজনীতির সংস্রব মুক্ত করা। কিন্তু এ রাজ্যে বিগত প্রায় চার দশক ধরে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়কে কার্যত নিজেদের সদস্য-সমর্থক ও নেতানেত্রী তৈরির কারখানা হিসেবেই দেখেছে রাজনৈতিক দলগুলি। শিক্ষাঙ্গনে দাপিয়ে রাজত্ব করে চলেছে বাইরের রাজনীতি। বহু ক্ষেত্রে ছাত্র সংসদ নির্বাচন প্রহসনে পরিণত হয়। ভোটপত্রে ‘নোটা’র ব্যবস্থা থাকলেই এ রোগের উপশম হবে, শিক্ষাজগতের অনেকেই তেমন মনে করেন না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

UGC NOTA student union polls
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE