Advertisement
০৩ মে ২০২৪

কলেজে তাণ্ডবে অভিযুক্ত তৃণমূল ছাত্র পরিষদ

এক কলেজে পরীক্ষার সময় হাতেনাতে টুকলি ধরে এক ছাত্রীর খাতা বাতিল করে দেন পরীক্ষক। অন্য কলেজে এক ছাত্র পরীক্ষা শুরুর দু’ঘন্টা পরে পরীক্ষা দেওয়ার দাবি জানালে আপত্তি জানান অধ্যক্ষ। কেন খাতা বাতিল করা হল এবং কেন পরীক্ষায় বসার অনুমতি মিলল না, সেই দাবি তুলে মঙ্গলবার বীরভূমের দুটি কলেজে তুমুল তাণ্ডব চালানোর অভিযোগ উঠল তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সদস্যদের বিরুদ্ধে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
সিউড়ি শেষ আপডেট: ২০ মে ২০১৫ ০৩:৩২
Share: Save:

এক কলেজে পরীক্ষার সময় হাতেনাতে টুকলি ধরে এক ছাত্রীর খাতা বাতিল করে দেন পরীক্ষক। অন্য কলেজে এক ছাত্র পরীক্ষা শুরুর দু’ঘন্টা পরে পরীক্ষা দেওয়ার দাবি জানালে আপত্তি জানান অধ্যক্ষ। কেন খাতা বাতিল করা হল এবং কেন পরীক্ষায় বসার অনুমতি মিলল না, সেই দাবি তুলে মঙ্গলবার বীরভূমের দুটি কলেজে তুমুল তাণ্ডব চালানোর অভিযোগ উঠল তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সদস্যদের বিরুদ্ধে।

দুটি কলেজের অধ্যক্ষেরই দাবি, স্নাতকস্তরের চূড়ান্ত পর্বের পরীক্ষা চলাকালীন কলেজের মধ্যে শাসকদলের ছাত্রসংগঠন এ দিন বহিরাগতদের সঙ্গে নিয়ে বেনজির বিশৃঙ্খলা চালায়। তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও প্রশাসনের কাছে এ ব্যাপারে অভিযোগ জানিয়েছেন।

প্রথম ঘটনাটি ঘটেছে, দুবরাজপুরের হেতমপুর কৃষ্ণচন্দ্র কলেজে। অন্যটি বীরভূম মহাবিদ্যালয়ে। হেতমপুর কৃষ্ণচন্দ্র কলেজ সূত্রের খবর, কলেজের এক ছাত্রী টুকলি করছিলেন। কলেজের ছাত্র সংসদের দাবি তোলে, কোনও ভাবেই যেন পরীক্ষকেরা ছাত্রদের উপর বেশি নজরদারি না করেন। প্রথমটা দ্বিধাগ্রস্ত থাকলেও কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ অমিনুল ইসলামের ভরসায় নিজেদের দায়িত্ব পালনে সচেষ্ট হন শিক্ষকেরা। সেই সময় যে ছাত্রীটি টুকলি করছিলেন তাঁর খাতাটি বাতিল করে দেন পরীক্ষক। সেই নিয়ে চূড়ান্ত হেনস্থার স্বীকার হতে হয় কলেজের অধ্যাপক ও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে। আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘‘বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে জানানোর পাশাপাশি দুবরাজপুরের বিডিওকে লিখিত ভাবে জানিয়েছি। শিক্ষকেরা খুব ভয়ে আছেন। তাঁরা বলছেন এমনটা হলে আর পরীক্ষার ঘরে থাকার ঝুঁকি তাঁরা নেবেন না।’’

অন্য দিকে এক ছাত্র সিউড়িতে বীরভূম মহাবিদ্যালয়ে পরীক্ষা দিতে আসেন পরীক্ষা শুরুর দু’ঘন্টা পরে। ওই ছাত্র দাবি করেন, তাঁকে পরীক্ষায় বসতে দিতে হবে। কিন্তু সে কথা মানতে পারেননি অধ্যক্ষ পার্থসারথি মুখোপাধ্যায়। ১২টা থেকে শুরু হওয়া পরীক্ষা (পাস কোর্সের )তিনটেয় শেষ হতেই, কেন পরীক্ষা দিতে দেওয়া হল না ওই ছাত্রকে, সেই নিয়ে অধ্যক্ষের উপর চাড়াও হয় তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সদস্য ও বহিরাগতরা।

অধ্যক্ষ পার্থসারথিবাবু বলেন, ‘‘বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী ২০ মিনিট দেরিতে এলেই সেই পরীক্ষার্থীকে আর পরীক্ষা বসতে দেওয়া যায় না। বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মসমিতির সদস্য হয়ে এমন অন্যায় দাবি কী ভাবে মানব? কিন্তু যে অত্যাচার আমার কলেজে চলেছে তাতে সত্যিই খুব দুঃখ পেয়েছি।’’ তিনি এ দিন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের পাশাপাশি জেলা প্রশাসনকেও আগামী পরীক্ষাগুলিতে নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার জন্য আবেদন জানিয়েছেন। দুবরাজপুরের বিডিও সুশান্তকুমার বালা এ দিন বলেন, ‘‘অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি নিয়ে মহকুমাশাসকের হস্তক্ষেপ চাইব।’’ তৃণমূল ছাত্র পরিষদের বীরভূম জেলা সভাপতি সুর়ঞ্জন চট্টোপাধ্যায় অবশ্য এ দিন ভাঙচুরের অভিযোগ মানেননি।

রাজ্যের শিক্ষা ও স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী তথা রামপুরহাটের বিধায়ক আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমি বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কাছ থেকেও ফোন পেয়েছি, সিউড়ি কলেজের অধ্যক্ষেরও ফোন পেয়েছি। এ ঘটনা যারাই ঘটাক, রাজ্য সরকার তা সমর্থন করে না। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE