Advertisement
E-Paper

ব্যাগ রাখি কোথায়? চিন্তা পরীক্ষা শুরুর আগে

বৃষ্টিতে ভেসে যাচ্ছে চার দিক। তার মধ্যেই পরীক্ষা কেন্দ্রের গেটের বাইরের দেওয়ালে ঝুলছে বই ভর্তি ব্যাগ। ব্যাগ, বইপত্র, নোট— সব ভিজে ন্যাতা। 

আর্যভট্ট খান

শেষ আপডেট: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০০:১৬
পরীক্ষা কেন্দ্রের বাইরে পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা মঙ্গলবার, উত্তর কলকাতায়। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী

পরীক্ষা কেন্দ্রের বাইরে পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা মঙ্গলবার, উত্তর কলকাতায়। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী

বৃষ্টিতে ভেসে যাচ্ছে চার দিক। তার মধ্যেই পরীক্ষা কেন্দ্রের গেটের বাইরের দেওয়ালে ঝুলছে বই ভর্তি ব্যাগ। ব্যাগ, বইপত্র, নোট— সব ভিজে ন্যাতা।

‘‘কাকু, ব্যাগটা একটু রাখবেন?’’— পরীক্ষা শুরুর কার্যত আগের মুহূর্তে পরীক্ষার্থীরা এ ভাবেই অনুরোধ জানাল আশপাশের দোকানিদের কাছে। মঙ্গলবার, উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার প্রথম দিনে এমনই ছবি চোখে পড়ল কলকাতার অনেক স্কুলের বাইরে। ক্ষুব্ধ পরীক্ষার্থীরাও। কিন্তু উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের নিয়ম না মেনে উপায় ছিল না কারও।

পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছতে হবে সকাল ন’টার মধ্যেই। সেখানে ব্যাগ নিয়ে ঢোকা যাবে না। অতীতে এই নিয়ম ছিল না। কিন্তু এ বছর থেকে নতুন নিয়ম চালু করেছে সংসদ। তাতে এ দিন সবচেয়ে বেশি হেনস্থার মুখে পড়েন একা পরীক্ষা দিতে আসা পরীক্ষার্থীরা। কোনও পরীক্ষা কেন্দ্রেই পরীক্ষার্থীদের ব্যাগ পাহারা দেওয়ার মতো কেউ ছিলেন না। ফলে তাঁদের ব্যাগ রইল অরক্ষিতই।

অভিভাবকদের অনেকেই তাই এ দিন প্রশ্ন তুলেছেন, সংসদ নিয়ম করার সময়ে পরীক্ষার্থীদের সমস্যার দিকটিকে গুরুত্ব দেওয়া হল না কেন?

বাগবাজার মাল্টিপারপাস স্কুলে যেমন দমদম কুমার আশুতোষ ও বেলগাছিয়া উর্দু স্কুলের ছাত্রীদের সিট পড়েছিল। ছাত্রীদের অনেককেই দেখা গেল বাইরে ব্যাগ ঝুলিয়ে রেখে পরীক্ষা কেন্দ্রে ঢুকতে। এক ছাত্রীর কথায়, ‘‘স্কুলের ভিতরে কোথাও, অন্তত বারান্দায় ব্যাগ রাখতে দিলে ভাল হত। মেঘ করেছে। বাইরে ব্যাগ রেখে যাচ্ছি। বৃষ্টি হলে তো বই-ব্যাগ সব ভিজে যাবে।’’ অভিভাবকদের সঙ্গে আসা পরীক্ষার্থীদের অবশ্য এই সমস্যায় পড়তে হয়নি।

পরীক্ষার এক ঘণ্টা আগে কেন্দ্রে ঢুকতে হবে বলে সংসদ নিয়ম করলেও হেয়ার স্কুলের সামনে দেখা গেল, অনেক ছাত্রই গেটের বাইরে দাঁড়িয়ে বই পড়ছে। আধ ঘণ্টা আগেও তারা কেন্দ্রে ঢোকেনি। এক ছাত্রের কথায়, ‘‘ভিতরে তো বই নিয়ে যেতে পারব না। শেষ মুহূর্তে একটু বইয়ে চোখ বুলিয়ে নিলে আত্মবিশ্বাস বাড়ে। তাই রাস্তায় দাঁড়িয়েই পড়ছি।’’ ছেলেদের পড়তে দেখে অভিভাবকদের কেউ কেউ আবার জানালেন, পরের পরীক্ষা থেকে এত তাড়াতাড়ি আসবেন না। অনেককেই দূর থেকে আসতে হয়। কেন্দ্রে একটু দেরিতে ঢুকলে ছেলেরা একটু বেশি পড়ার সুযোগ পাবে বলেই মনে করেন তাঁরা।

কোনও স্কুলে আবার দেখা গেল পরীক্ষার ঠিক এক ঘণ্টা আগে গেট খোলেনি। হিন্দু স্কুলে যেমন সওয়া ন’টা নাগাদ গেট খোলে। ওই স্কুলে বারান্দায় ব্যাগ রাখার ব্যবস্থা ছিল। তবে শহরের বেশির ভাগ স্কুলেই মোবাইল ডিটেক্টর দেখা যায়নি। সংসদ অবশ্য জানিয়েছিল, শুধু স্পর্শকাতর পরীক্ষা কেন্দ্রগুলিতেই মোবাইল ডিটেক্টর থাকবে। বাকি স্কুলে শিক্ষকেরাই পরীক্ষা করবেন কারও সঙ্গে মোবাইল আছে কি না।

হেয়ার স্কুলে আবার ঘড়ি পরেও ঢুকতে নিষেধ করেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। তাই ব্যাগের সঙ্গে ঘড়িও খুলে অভিভাবকদের দিতে দেখা যায় পরীক্ষার্থীদের। ঘড়ি ছাড়া কী ভাবে পরীক্ষার্থীরা পরীক্ষা দেবে, প্রশ্ন তোলেন কয়েক জন অভিভাবক। তবে স্কুেলর এক আধিকারিক আশ্বাস দেন, সব ঘরের দেওয়ালেই ঘড়ি রয়েছে।

সংসদ অনেক দিন আগেই অবশ্য নির্দেশ দিয়েছিল, ডিজিটাল ঘড়ি ব্যবহার করা যাবে না। অ্যানালগ ঘড়ি চলতে পারে। কিন্তু তাতেও কেন নিষেধাজ্ঞা জারি হল, তা নিয়ে হেয়ার স্কুল কর্তৃপক্ষ মন্তব্য করেননি।

এ দিন অবশ্য শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এই সমস্যা নিয়ে বিশেষ কিছু বলতে চাননি। তিনি শুধু বলেন, ‘‘সংসদ নিশ্চয়ই চিন্তাভাবনা করেই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পরীক্ষা

শুরু হয়ে গিয়েছে। তাই এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করব না। তবে ব্যাগে মোবাইল নিয়ে কেউ ঢুকে পড়লে তার দায় কে নেবে?’’

Higher Secondary Examination
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy