Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

রবিবার রাতেই নিঃশব্দে সরানো হয় দামি জিনিস

বেদখল হয়ে থাকা জমি উদ্ধারে বন্দর কর্তৃপক্ষ যে মাঠে নামছেন, গত শনিবার রাতেই সে খবর চলে এসেছিল ভেঙ্কটেশ ফিল্মস-এর কাছে। আর সেই রাতেই ছকা হয়ে গিয়েছিল পরবর্তী পদক্ষেপের ব্লু প্রিন্ট।

শুভাশিস ঘটক
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ০৪:২০
Share: Save:

বেদখল হয়ে থাকা জমি উদ্ধারে বন্দর কর্তৃপক্ষ যে মাঠে নামছেন, গত শনিবার রাতেই সে খবর চলে এসেছিল ভেঙ্কটেশ ফিল্মস-এর কাছে। আর সেই রাতেই ছকা হয়ে গিয়েছিল পরবর্তী পদক্ষেপের ব্লু প্রিন্ট। সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী এক দিকে যেমন বন্দর কর্তৃপক্ষ জমি জবরদখল মুক্ত করার পরে তাঁদের নিরাপত্তা রক্ষীদের মেরেধরে সরিয়ে দিয়ে ফের জমি কব্জা করা হয়েছিল, অন্য দিকে সাবধানের মার নেই বিবেচনা করে রবিবার রাতেই অন্যত্র সরিয়ে দেওয়া হয় স্টুডিওয় থাকা বহু দামি যন্ত্রপাতি এবং তাদের পরিবহণ ব্যবসার মালপত্র।

বন্দর এলাকার তৃণমূল কর্মীদের একাংশ এবং ঘটনার দিন উপস্থিত প্রযোজক সংস্থার কয়েক জন কর্মীর সঙ্গে কথা বলা জানা গিয়েছে, বন্দর কর্তৃপক্ষ যে রবিবার সকালে পি-৫১ হাইড রোডের জমির দখল নিতে আসবেন, সেই খব শনিবার রাতেই পেয়ে দিয়েছিলেন ভেঙ্কটেশ ফিল্মসের কর্ণধার শ্রীকান্ত মোহতা। আর তার পরে রাতেই তলব করা হয় সংস্থার বেশ কয়েক জন কর্মীকে। বন্দর জমি দখল করে নিলে কী করা হবে, তা নিয়ে আলোচনা হয়। সেই সঙ্গে সিদ্ধান্ত হয় দামি যন্ত্রপাতি সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার। সেই মতো স্টুডিওয় কাজ চালানোর মতো কিছু যন্ত্রপাতি রেখে বাকি যন্ত্র খোলার কাজ শুরু হয়ে যায় সেই রাতেই। প্রযোজক সংস্থার এক কর্মীর কথায়, ‘‘রবিবার সকালে বন্দর কর্তৃপক্ষ জমি দখল করলে কী কী করতে হবে, তা আমাদের সব কর্মীকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল। পরিকল্পনা অনুযায়ী, সারা রাত ধরে বিভিন্ন যন্ত্রাংশ খোলা হয়।’’

সংস্থার এক কর্মী জানাচ্ছেন, কোটি কোটি টাকার মালপত্র পি ৫১-র গুদামে ছিল। বন্দর কর্তৃপক্ষ জমির দখল নিয়ে নিলে সেই সব মালপত্র আর হাতে পাওয়া যাবে কিনা, তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছিল সংস্থার কর্তাদের মনে। কিন্তু শনিবার রাতেই সব মাল সরিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব ছিল না। আর সেই কারণেই রবিবার বন্দর কর্তৃপক্ষ জমির দখল নেওয়ার পরে মরিয়া হয়ে তা পুনর্দখল করা হয় বলে ভেঙ্কটেশের এই কর্মীর দাবি। তিনি আরও জানাচ্ছেন, বন্দরের নিরাপত্তারক্ষীদের তাড়িয়ে দিয়ে ফের হাইড রোডের ওই জমিতে ঢোকার পরে রবিবার সারা দিন ধরেই যন্ত্রপাতি খোলার কাজ করেন তাঁরা। রাতের অন্ধকার নামতে শুরু হয় সেগুলি সরানোর পালা। সেই কাজেও যথেষ্ট সাবধানতা অবলম্বন করা হয়েছিল। ভেঙ্কটেশের এক কর্মী জানান, রাত আটটা নাগাদ প্রথম একটি ছোট লরি স্টুডিওর সামনে আসে। তাতে মাল তোলা হয়। তার পর সেটি হেডলাইট না জ্বালিয়ে যায় ডায়মন্ড হারবার রোড অবধি। ওই লরিটি নিরাপদ দূরত্বে পৌঁছে যাওয়ার পরে ফের একটি লরি আসে স্টুডিওর সামনে। এই ভাবে মাল সরানোর কাজ চলে ভোর তিনটে পর্যন্ত। ২০ থেকে ২২টি লরিতে সেই রাতেই অধিকাংশ মালপত্র সরিয়ে ফেলা হয়েছে বলে সংস্থা সূত্রে খবর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE