Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪
WBBSE

WBBSE: প্রথম-নবমে পাঠ ছাঁটাই ৩৫%, দেরি নিয়েই প্রশ্ন

রাজ্য পাঠ্যক্রম কমিটির পক্ষ থেকে মঙ্গলবার জানানো হয়েছে, প্রথম থেকে নবম শ্রেণির পাঠ্যক্রম কমানোর সুপারিশ করেছিল মধ্যশিক্ষা পর্ষদ।

প্রতীকী চিত্র।

প্রতীকী চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২১ ০৬:২৪
Share: Save:

অতিমারির দরুন আগামী বছরের মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের পাঠ্যক্রম কমানোর সিদ্ধান্ত মধ্যশিক্ষা পর্ষদ এবং উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ আগেই ঘোষণা করেছিল। এ বার প্রথম থেকে নবম শ্রেণিরও পাঠ্যক্রম কমানো হচ্ছে।

রাজ্য পাঠ্যক্রম কমিটির পক্ষ থেকে মঙ্গলবার জানানো হয়েছে, প্রথম থেকে নবম শ্রেণির পাঠ্যক্রম কমানোর সুপারিশ করেছিল মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। সেই প্রস্তাব অনুযায়ী ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ পাঠ্যক্রম কমিয়ে পর্ষদে পাঠানো হয়েছে। পর্ষদ সেই সুপারিশকে মান্যতা দিলে প্রথম থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠ্যক্রম কমবে।

এত দেরিতে পাঠ্যক্রম কমানো হচ্ছে কেন, সেই প্রশ্নও তুলেছেন কেউ কেউ। শিক্ষক শিবিরের একাংশের বক্তব্য, বছরের আট মাস অতিক্রান্ত। যারা অনলাইনে নিয়মিত ক্লাস করেছে, তাদের পাঠ্যক্রমের অধিকাংশ পড়া হয়ে গিয়েছে। এখন ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ পাঠ কমিয়ে কী লাভ?

রাজ্য পাঠ্যক্রম কমিটির এক কর্তা জানান, এখনও অনলাইনে ক্লাস হচ্ছে। করোনা পরিস্থিতি যদি নিয়ন্ত্রণে থাকে, তা হলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ অনুযায়ী স্কুল খুলবে পুজোর পরে। নভেম্বর নাগাদ স্কুল খুললে এই শিক্ষাবর্ষের বাকি থাকবে মাত্র দু’মাস। তার পরে আর পড়ানোর কতটা সময় পাওয়া যাবে, প্রশ্ন তোলেন পাঠ্যক্রম কমিটির কর্তা। তিনি জানান, পরবর্তী ক্লাসে গিয়ে ছাত্রছাত্রীদের যাতে কোনও অসুবিধা না-হয়, সে-কথা ভেবেই পাঠ্যক্রম ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ কমানো হয়েছে। তিনি বলেন, “পরবর্তী মাসগুলিতে অ্যাক্টিভিটি টাস্কও দেওয়া হবে সংক্ষিপ্ত পাঠ্যক্রম থেকে। এর ফলে পড়ুয়াদের অ্যাক্টিভিটি টাস্কের উত্তর দিতে অসুবিধা হবে না।”

পশ্চিমবঙ্গ সরকারি বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সৌগত বসু বলেন, “মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের পরীক্ষার্থীদের পাঠ্যক্রম কমানো হয়েছে আগামী বছরের বোর্ড পরীক্ষার কথা ভেবে। তা হলে কি প্রথম থেকে নবম শ্রেণির ছাত্রছাত্রীদেরও বছর শেষে কোনও বার্ষিক পরীক্ষা নেওয়া হবে? যদি পরীক্ষা না-হয়, তা হলে নতুন করে পাঠ্যক্রম কমিয়ে লাভ কী? বরং পুরো পাঠ্যক্রম অনলাইনে পড়ালে পড়ুয়ারা তাদের ক্লাসের পুরো বিষয়টা জানতে পারবে। আর যদি পাঠ্যক্রম কমানোর ভাবনাই থেকে থাকে, তা হলে অন্তত জুন-জুলাইয়ে কমানো দরকার ছিল। তা হলে সেই অনুযায়ী পরিকল্পনা করে এগোতে পারতেন শিক্ষকেরা।”

তবে পাঠ্যক্রম কমানোয় সুবিধা হবে বলেও মনে করছেন কিছু শিক্ষক-শিক্ষিকা। বেথুন কলেজিয়েট স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা শাশ্বতী অধিকারী বলেন, “গ্রামের দিকে প্রত্যন্ত এলাকার ছেলেমেয়েরা অনলাইনে সে-ভাবে ক্লাসই করতে পারেনি। ফলে পাঠ্যক্রমের অনেক অংশই হয়তো বুঝতে অসুবিধা হচ্ছে তাদের। পুজোর পরে স্কুল খুললে ততটা পাঠ্যক্রমের বোঝা কাঁধে না-থাকায় তারা পুরনো পড়াও ক্লাসরুমে বসে ঝালিয়ে নিতে পারবে। আমরা শিক্ষক-শিক্ষিকারাও ক্লাসরুমে সামনাসামনি পড়ুয়াদের চাহিদা অনুযায়ী পড়াতে পারব।”

সিআইএসসিই বা সিবিএসই বোর্ড দশম ও দ্বাদশের জন্য পাঠ্যক্রম কমালেও প্রথম থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত কোনও পাঠ্যক্রম কমায়নি। সিআইএসসিই বোর্ডের একটি স্কুলের অধ্যক্ষ বলেন, “প্রথম থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত নিয়মিত অনলাইন ক্লাস হচ্ছে। অনলাইনে লিখিত পরীক্ষাও চলছে। শিক্ষাবর্ষের মাঝখানে আর নতুন করে প্রথম থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠ্যক্রম কমানোর পরিকল্পনা বোধ হয় কাউন্সিলের নেই।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

WBBSE Education
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE