Advertisement
২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩
Mamata Banerjee

শালবনির ‘অব্যবহৃত’ জমি ফিরিয়ে দিচ্ছেন জিন্দলেরা, জানালেন মুখ্যমন্ত্রী! ঘোষণা, সেখানে শিল্পই গড়বে রাজ্য

শালবনিতে জিন্দল গোষ্ঠীর কারখানার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনে ছিলেন তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। সেখান থেকে ফেরার পথেই মাওবাদীদের ল্যান্ডমাইন হামলার লক্ষ্য হন তিনি।

Mamata Banerjee

মুখ্যমন্ত্রী জানান, শিল্পায়নের জন্য প্রয়োজনীয় জমি রেখে বাকি অংশ ফেরত দেবেন জিন্দলেরা এবং সেখানে নতুন শিল্প গড়ে তোলা হবে। — ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ২৭ মে ২০২৩ ১৯:০২
Share: Save:

প্রায় দেড় দশক আগে বাম জমানায় পশ্চিম মেদিনীপুরের শালবনিতে শিল্পায়নের জন্য পাওয়া জমির ‘অব্যবহৃত’ অংশ রাজ্য সরকারকে ফেরত দিচ্ছে জিন্দল গোষ্ঠী। শালবনিতে দাঁড়িয়েই ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। শনিবার অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘তৃণমূলে নবজোয়ার’ কর্মসূচিতে যোগ দেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে তিনি জানান, শিল্পায়নের জন্য প্রয়োজনীয় জমি রেখে বাকি অংশ ফেরত দেবেন জিন্দলেরা। এবং সেখানে নতুন শিল্পই গড়ে তোলা হবে বলে ঘোষণা করেন মমতা।

শালবনির সভায় মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘জ্যোতিবাবুরা জমি দিয়ে পালিয়েছিলেন। তার পর কিছু হয়েছিল? জিন্দলদের কারখানা আমি এসে উদ্বোধন করেছিলাম। ওঁরা কিছু জমি ফেরত দিচ্ছেন। তাতে নতুন কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হবে। জিন্দলদের শিল্পের জন্য জমি লেগেছে, বাদবাকি জমি ওঁরা ফেরত দিচ্ছেন। সেখানে বড় ইন্ডাস্ট্রি (শিল্প) তৈরি হবে। শালবনিতে আবার একটা বড় ইন্ডাস্ট্রি হবে।’’

ইতিহাস বলছে, বামফ্রন্ট সরকারের আমলে পশ্চিম মেদিনীপুরের শালবনিতে ইস্পাত এবং বিদ্যুৎকেন্দ্র তৈরির জন্য প্রায় ৪,৩৩৪ একর জমি দেওয়া হয়েছিল। প্রথম ইউপিএ সরকারের আমলের দুই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রামবিলাস পাসোয়ান এবং জিতিন প্রসাদকে সঙ্গে নিয়ে ২০০৮ সালের ২ নভেম্বর জিন্দল গোষ্ঠীর সেই কারখানার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন কর্মসূচিতে গিয়েছিলেন তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। সেখান থেকে ফেরার পথে তাঁদের লক্ষ্য করে ল্যান্ডমাইন হামলা চালায় মাওবাদীরা। ওই ঘটনার পর পুলিশি নিপীড়নের অভিযোগকে কেন্দ্র করেই গড়ে উঠেছিল ‘পুলিশি সন্ত্রাস বিরোধী জনগণের কমিটি’। দানা বেঁধেছিল ‘লালগড় আন্দোলন’। বাংলায় ‘পরিবর্তন’কালের রাজনীতিতে এই ঘটনার অভিঘাতও কম ছিল না।

শেষ পর্যন্ত জিন্দল গোষ্ঠী ইস্পাত এবং বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের পরিকল্পনা বাতিল করে। ফলে জমি পড়েই ছিল। ২০১৪ সালের জুলাই মাসে পশ্চিম মেদিনীপুরে একটি শিল্পপ্রকল্পের উদ্বোধন করতে গিয়ে জিন্দল গোষ্ঠীকে প্রকাশ্যে হুঁশিয়ারি দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে দিয়েছিলেন, শিল্পের জন্য নেওয়া জমি এ ভাবে ফেলে রাখলে সরকার ব্যবস্থা নেবে।

এর পরে বিকল্প শিল্প হিসাবে ১৩৫ একর জমিতে সিমেন্ট কারখানা তৈরি করেন জিন্দলেরা। ২০১৮ সালে মমতাই সেই কারখানার উদ্বোধন করেছিলেন। ওই কারখানা সম্প্রসারণের পাশাপাশি রং কারখানাও গড়া হচ্ছে সেখানে। এ ছাড়া, ‘ফিনিশিং স্টিল’, সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্প, কর্মী আবাসন ইত্যাদি মিলিয়ে আরও ১,২০০ একর জমির প্রয়োজন হবে জিন্দলদের। সব মিলিয়ে মোট ১৫০০ একর হাতে রেখে বাকি জমি ফিরিয়ে দিতে চান তাঁরা। এই পরিস্থিতিতে শালবনিতে নতুন বিনিয়োগের মাধ্যমে কর্মসংস্থানের সুযোগ আসতে চলেছে বলেই ‘অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মঞ্চে’ দাঁড়িয়ে বার্তা দিয়ে গেলেন মমতা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement

Share this article

CLOSE