Advertisement
E-Paper

পিএল তহবিলে মাত্র ৩৫০০ কোটি

নবান্ন মনে করেছিল, পিএল অ্যাকাউন্টে লুকিয়ে থাকা টাকা রাজকোষে ফেরাতে পারলে অন্তত ১০ হাজার কোটির সংস্থান হতে পারে। কিন্তু উদ্ধার হয়েছে মাত্র সাড়ে তিন হাজার কোটি। ফলে বছরে ৫০ হাজার কোটি টাকার দেনায় ডুবে থাকা রাজ্যে কাজের কাজ কিছুই হয়নি।

জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১৯ নভেম্বর ২০১৮ ০৩:০৫

আশা ছিল, মোটা টাকা উদ্ধার হবে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত যা দাঁড়িয়েছে, তাতে ‘চিঁড়েও ভেজে না’! সরকারি দফতরের পার্সোনেল লেজার বা পিএল অ্যাকাউন্ট থেকে বহু পুরনো টাকা উদ্ধারে নেমে এমনই অভিজ্ঞতা হয়েছে রাজ্যের অর্থ দফতরের।

নবান্ন মনে করেছিল, পিএল অ্যাকাউন্টে লুকিয়ে থাকা টাকা রাজকোষে ফেরাতে পারলে অন্তত ১০ হাজার কোটির সংস্থান হতে পারে। কিন্তু উদ্ধার হয়েছে মাত্র সাড়ে তিন হাজার কোটি। ফলে বছরে ৫০ হাজার কোটি টাকার দেনায় ডুবে থাকা রাজ্যে কাজের কাজ কিছুই হয়নি।

অবশ্য এতে একেবারে হতাশও নয় অর্থ দফতর। কর্তাদের বক্তব্য, এই ব্যবস্থায় অন্তত পিএল অ্যাকাউন্টের হাল কী, সেটা তো বোঝা গেল! এই অ্যাকাউন্টগুলির হিসেবের আতসকাচ সব সময় থাকে না বলে অনিয়মের সুযোগ বেশি। এক শীর্ষ কর্তার কথায়, ‘‘সরকার পিএল অ্যাকাউন্টের টাকা প্রতি বছরের শেষে ফেরত নেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে। তার জেরে বিভিন্ন প্রকল্প বা অন্য খাতের টাকা সেখানে সরিয়ে রাখতেও অনীহা তৈরি হয়েছে নিচু তলার প্রশাসনে। তাতে আর্থিক ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা এসেছে।’’

দফতর সূত্রের খবর, এখন জমি কিনতে হলে সেই টাকা পিএল অ্যাকাউন্টে রাখার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া আরআইডিএফ প্রকল্পের ২০% টাকা এবং যে-সব সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান সরকারি অনুদান পায়, তাদের অনুদানের টাকাও পিএল অ্যাকাউন্টে রাখা যেতে পারে। কিন্তু সব টাকাই ৩১ মার্চের মধ্যে রাজকোষে ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে অর্থ দফতর।

১৯৯৭ সালে কংগ্রেসের সাংসদ থাকাকালীন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বামফ্রন্ট সরকারের বিরুদ্ধে ট্রেজারি কেলেঙ্কারির তদন্ত চেয়ে জনস্বার্থ মামলা করেছিলেন। সেই মামলারও বিষয়বস্তু ছিল পিএল অ্যাকাউন্টে ৫৫ হাজার কোটি টাকা সরিয়ে নেওয়া। এ বারেও মুখ্যমন্ত্রী জেনেছেন, কাজ দেখাতে লোকদেখানো পরিসংখ্যান দিচ্ছে দফতরগুলি। বড় অঙ্কের টাকা জমে থাকছে পিএল অ্যাকাউন্টে।

অর্থ দফতরের খবর, উন্নয়ন বরাদ্দ পাওয়ার পরেই দফতরগুলি তাদের অধীন নিগম, সোসাইটি, পঞ্চায়েত, পুরসভা বা নির্দিষ্ট অফিসারের নামে পিএল অ্যাকাউন্টে টাকা সরিয়ে রাখছিল। এটা আর্থিক শৃঙ্খলাভঙ্গের শামিল। ওই টাকার অপব্যবহারের আশঙ্কাও রয়েছে পুরোদস্তুর।

কর্তাদের একাংশ জানান, উন্নয়নের বরাদ্দ খরচ করতে না-পারলে অর্থবর্ষের শেষে দফতরগুলির তা ফেরত দেওয়ার কথা। কিন্তু গত কয়েক বছরে সেই টাকা ফেরত দেওয়া হচ্ছিল না। উল্টে পিএল বা সেভিংস অ্যাকাউন্টে তা জমা করে রাখা হয়েছে। সরকারকে দেখানো হয়েছে, সব বরাদ্দ খরচ হয়ে গিয়েছে। সেই টাকা খুঁজতেই সব দফতরের সচিবকে বলা হয়েছিল, তাঁরা যে পিএল অ্যাকাউন্টে টাকা ফেলে রাখেননি, হলফনামা দিয়ে তা জানানো হোক।

সেই প্রক্রিয়ার শেষেই দেখা যাচ্ছে, ফেরত এসেছে মাত্র সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা। বাকি টাকা কোথায় গেল? অনেক দফতরই কোষাগারে টাকা ফেরত দেওয়ার আগে বকেয়া মিটিয়ে দিয়েছে। তাতেও অন্তত টাকার ‘ইউটিলাইজেশন’ বা সদ্ব্যবহার হয়েছে বলে জানাচ্ছেন অর্থকর্তারা।

Wset Bengal Finance Department Money Personal Ledger Account PL
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy