Advertisement
০৫ মে ২০২৪
Calcutta High Court

উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে নতুন চাপে রাজ্য, ক্ষমতা নিয়েই প্রশ্ন তুলে আদালত বলল, পুনর্নিয়োগও বেআইনি

২০২১-এর ডিসেম্বরে রাজ্যের তৎকালীন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় ২৪টি বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগের ক্ষেত্রে অনিয়মের অভিযোগ তুলেছিলেন। সেই তালিকায় ছিল বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়েরও নাম।

photo of calcutta High court.

রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে উপাচার্য নিয়োগ বা পুনর্নিয়োগের ক্ষমতা নেই রাজ্যের, জানাল হাই কোর্ট। ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ মার্চ ২০২৩ ১০:৪৪
Share: Save:

রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের নিয়োগ বা পুনর্নিয়োগের ক্ষমতা নেই রাজ্যের। রায় ঘোষণা করে জানিয়ে দিল কলকাতা হাই কোর্ট। প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব এবং বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চ মঙ্গলবার এই রায় দিয়েছে। উচ্চ আদালতের নির্দেশ, রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে উপাচার্যদের একমাত্র নিয়োগ করতে পারবেন আচার্য। উপাচার্য নিয়োগ করার কোনও ক্ষমতা রাজ্য সরকারের হাতে থাকবে না। পাশাপাশি, রাজ্যের নিয়োগ করা সকল উপাচার্যকে পদ থেকে খারিজ করার নির্দেশও দিয়েছে কলকাতা হাই কোর্ট।

আদালতের এই রায় সুদূরপ্রসারী বলেই মনে করছেন প্রশাসনিক আধিকারিকেরা। তাঁদের একাংশের ব্যাখ্যা, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) ২০১৮ সালের গাইডলাইন অনুযায়ী যাঁদের নিয়োগ হয়নি, তাঁদের সকলেরই নিয়োগ ‘অবৈধ’ হয়ে গেল। সহজ কথায়, তাঁদের সকলেরই চাকরি গেল!। কিন্তু অন্য একাংশের বক্তব্য, আদালতের রায়ের সম্পূর্ণ বয়ান না-দেখে এখনই কোনও সিদ্ধান্তে পৌঁছনো ঠিক হবে না। আদালত তার রায়ে নির্দিষ্ট করে কিছু বলেছে কি না, তা-ও খতিয়ে দেখা জরুরি।

পাশাপাশিই, এই রায়ের ফলে সম্প্রতি আচার্য তথা রাজ্যপাল উপাচার্যদের অন্তর্বর্তিকালীন যে নিয়োগ করেছিলেন, তা-ও চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ল কি না, সেই প্রশ্নও উঠছে। শিক্ষামহলের একাংশের দাবি, সম্প্রতি শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করে আচার্য তথা রাজ্যপাল একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে তিন মাসের জন্য পুনর্নিয়োগ করেছিলেন। যা ‘বৈধ’। আদালত বলেছে, উপাচার্যদের নিয়োগ করতে পারবেন আচার্য (রাজ্যপাল)। ফলে এই রায়ের প্রভাব সেই উপাচার্যদের উপর পড়বে না। আবার অন্য একটি ব্যাখ্যা হল, আচার্য যে নিয়োগ করেছিলেন, ‘অন্তর্বর্তিকালীন’। ‘পাকাপাকি’ নয়। ফলে আদালতের এই রায়ের ফলে সেটি নিয়েও নতুন করে জটিলতা তৈরি হতে পারে।

গত ২০২১-এর ডিসেম্বরে পশ্চিমবঙ্গের তৎকালীন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় রাজ্যের ২৪টি বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগের ক্ষেত্রে অনিয়মের অভিযোগ তুলেছিলেন। রাজ্যপালের দেওয়া তালিকায় গৌড়বঙ্গ, আলিপুরদুয়ার, বর্ধমানের মতো বিশ্ববিদ্যালয়ের নামও ছিল। এর পর কলকাতা, যাদবপুর, প্রেসিডেন্সি, রবীন্দ্রভারতী-সহ রাজ্যের ২৪টি বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়মবহির্ভূত ভাবে উপাচার্য নিয়োগ করা হয়েছে বলে অভিযোগ এনে কলকাতা হাই কোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের করা হয়। মামলাটি দায়ের করেন অনুপম বেরা।

মঙ্গলবার কলকাতা হাই কোর্ট জানিয়ে দিল, বিশ্ববিদ্যালয়গুলির উপাচার্য নিয়োগ বা পুনর্নিয়োগের এক্তিয়ার রাজ্যের নেই। এর আগে এই ধরনেরই একটি মামলায় হাই কোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর অনেকগুলি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিজে থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন। বাকি বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে রাজ্যের তরফে নিয়োগ করা উপাচার্যদেরও এ বার পদ থেকে খারিজ করার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। অন্তত মঙ্গলবারের রায়ের তাৎপর্য তেমনই বলে প্রশাসনিক আধিকারিকদের একাংশের ব্যাখ্যা। হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের রায়ের পর জনস্বার্থ মামলাকারীর আইনজীবী সুস্মিতা সাহা দত্ত বলেন, ‘‘রাজ্য যে বেআইনি ভাবে উপাচার্যদের নিয়োগ করেছিল, তা স্পষ্ট। আমরা তা নিয়ে মামলা দায়ের করেছিলাম। আদালতের রায়ে আমরা খুশি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Calcutta High Court VC Jagdeep Dhankhar
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE