Advertisement
E-Paper

দিনের দিনই রাজস্ব তুলতে সুলুকসন্ধান

সেই জন্য তৈরি হচ্ছে ‘পেমেন্ট গেটওয়ে’। সেই পথ বা তোরণদ্বারে দিনের দিন রাজস্ব বা কর জমা দেওয়া যাবে। এড়ানো যাবে দেরি।

জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২৬ নভেম্বর ২০১৮ ০৩:২১
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

ই-ব্যবস্থা তো রয়েছেই। সরকারি কোষাগারে টাকা জমা দেওয়ার উপায়গুলিকে আরও সহজ করার কথা ভাবছে রাজ্যের অর্থ দফতর। সেই জন্য তৈরি হচ্ছে ‘পেমেন্ট গেটওয়ে’। সেই পথ বা তোরণদ্বারে দিনের দিন রাজস্ব বা কর জমা দেওয়া যাবে। এড়ানো যাবে দেরি।

রাজ্যে বছরে প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব আদায়ের জন্য লেনদেন হয় অন্তত ৯০ লক্ষ। রাজকোষের এই বিশাল আর্থিক কারবার এখন চলছে ই-ব্যবস্থার মা‌ধ্যমে। তা সত্ত্বেও দিনের দিন সরকারের ঘরে টাকা জমা পড়ে না। দু’-এক দিন গড়িয়ে যায়। সেই জন্যই রাজ্যের নিজস্ব ‘পেমেন্ট গেটওয়ে’র বন্দোবস্ত হচ্ছে। এই ব্যবস্থায় অন্তত ৪০টি ব্যাঙ্কের গ্রাহকেরা ‘রিয়েল টাইম’ বা যথাসময়ে সরকারের ঘরে কর, অন্য যে-কোনও ধরনের রাজস্ব, বকেয়া অর্থ জমা দিতে পারবেন।

সরকারি ব্যবস্থায় এমন পদ্ধতিতে কর আদায়ের ভাবনা ব্যতিক্রমী বলেই মনে করছেন অর্থ কর্তাদের একাংশ। নবান্নের প্রস্তাবিত পেমেন্ট গেটওয়ের নামকরণের জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে অনুরোধ করা হবে। নরেন্দ্র মোদী সরকারের তৈরি করা ই-ওয়ালেটের নাম ‘ভীম’ এবং ডেবিট কার্ডের নাম ‘রুপে’।

ট্রেজারিগুলি সরাসরি নগদ অর্থ গ্রহণ করে না। এখন অনলাইনেই ব্যাঙ্কের কাউন্টারে গিয়ে সরকারি কোষাগারে টাকা জমা দিতে হয়। তবে পেমেন্ট গেটওয়ে তৈরি হয়ে গেলে ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ড, নেট ব্যাঙ্কিং, আরটিজিএস, ই-ওয়ালেট, ইউপিআই ইত্যাদির মাধ্যমে সরাসরি কোষাগারে টাকা জমা দেওয়া যাবে। নবান্ন জানাচ্ছে, এখন কোষাগারে টাকা জমা দিতে হলে গভর্নমেন্ট রিসিপ্ট পোর্টাল বা গ্রিপস-এর মাধ্যমে তা করতে হয়। ফলে জমি-বাড়ির রেজিস্ট্রেশন হোক বা নন্দন-মহাজাতি সদন বুকিং, সব কিছুর জন্য গ্রিপস-এ টাকা জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক। অর্থকর্তারা জানান, ২১টি ব্যাঙ্ক মারফত এই টাকা জমা দেওয়া যায়। এর মধ্যে ১৮টি ব্যাঙ্ক সরকারি ও তিনটি বেসরকারি। স্টেট ব্যাঙ্ক, ইউবিআই, আইওবি এবং আইসিআইসিআই ব্যাঙ্কের ক্ষেত্রে ডেবিট কার্ড ব্যবহার করা যায়। বাকি ব্যাঙ্কগুলিতে ‘ওভার দ্য কাউন্টার’ টাকা জমা নেওয়ার ব্যবস্থা আছে।

তা হলে পেমেন্ট গেটওয়ে কেন?

এক কর্তার বক্তব্য, সরকারি বা বেসরকারি ব্যাঙ্ক টাকা জমা নেওয়ার পরের দিন তা সরকারি কোষাগারে পাঠাচ্ছে। ২০১৭-’১৮ অর্থবর্ষে ৮৬ লক্ষ লেনদেনের মাধ্যমে ৪৯ হাজার ৩০০ কোটি টাকা জমা পড়েছে। এ বার তা ৬০ হাজার কোটি ছুঁতে পারে। কিন্তু ব্যাঙ্ক বিপুল পরিমাণ টাকা এক-দু’দিন পরে কোষাগারে পাঠাচ্ছে। ফলে অনেক সময় কোষাগারে টাকার টানাটানি পড়লে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক থেকে অগ্রিম নিতে হচ্ছে। সরকারের নিজস্ব পেমেন্ট গেটওয়ে থাকলে কর বা অন্যান্য বকেয়া মেটানো মাত্র তা সরাসরি কোষাগারে জমা পড়বে।

অর্থ দফতরের ব্যাখ্যা, অন্য সমস্যাও আছে। এখন যে শুধু এক-দু’দিন পরে টাকা জমা পড়ে তা নয়। বহু ক্ষেত্রে গ্রিপস দেখায় যে, টাকা জমার পরেও ব্যাঙ্ক থেকে ‘পেমেন্ট পেন্ডিং’ থেকে যাচ্ছে। নিজস্ব গেটওয়ে থাকলে কোনও বকেয়া মেটানোর প্রক্রিয়া হয় ‘সফল’ অথবা ‘ব্যর্থ’ হবে। ফলে গ্রিপস-এর মাধ্যমে টাকা নেওয়ার ব্যবস্থায় প্রযুক্তিগত কারণে ‘পেন্ডিং’ প্রথা থাকবে না। তা ছাড়া ৪০টি ব্যাঙ্ক এর সঙ্গে যুক্ত হতে পারবে। ভিসা, মাস্টার কার্ড, মায়েস্ট্রো, রুপে, অ্যামেক্স ইত্যাদি কার্ড ব্যবহার করে বকেয়া মেটানো যাবে।

‘‘কোষাগারে কত টাকা আছে, পেমেন্ট গেটওয়ে চালু হলে মাউসের এক ক্লিকেই তা দেখতে পাওয়া যাবে। তাতে উন্নয়ন প্রকল্পে সরকারি বরাদ্দ নিয়েও মাথাব্যথা থাকবে না,’’ বলেন অর্থ দফতরের এক শীর্ষ কর্তা।

Fiscal deficit Nabanna Mamata Banerjee Tax মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় Payment gateway
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy